৪৭ - بَابُ مَا جَاءَ فِي الْـخُطْبَةِ

১৪০ - أَبُوْ حَنِيْفَةَ: عَنْ عَطِيَّةَ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ ، قَالَ: كَانَ النَّبِيُّ  إذَا صَعِدَ الْـمِنْبَرَ يَوْمَ الْـجُمُعَةِ جَلَسَ قَبْلَ الْـخُطْبَةِ جِلْسَةً خَفِيْفَةً.


বাব নং ৬২ . ৪৭. খুৎবার বর্ণনা


১৪০. অনুবাদ: ইমাম আবু হানিফা আতিয়্যা থেকে, তিনি ইবনে ওমর (رضي الله عنه) থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, নবী করিম (ﷺ)  জুমার দিন যখন মিম্বরের উপর আরোহণ করতেন তখন খুৎবার পূর্বে অল্প কিছুক্ষণ বসতেন।


ব্যাখ্যা: আবু দাউদ শরীফের হাদিসে حتى يفرغ المؤذن অতিরিক্ত বাক্য রয়েছে। অর্থাৎ মুয়াযিযন আযান শেষ না করা পর্যন্ত তিনি মিম্বরের উপর বসে থাকতেন। এই মাসয়ালায় ইমাম আবু হানিফা (رحمة الله) ইমাম মালিক (رحمة الله), ইমাম শাফেঈ (رحمة الله) ঐকমত্য পোষণ করেছেন। জমহুর ওলামার মাযহাবও এটি।


১৪১ - أَبُوْ حَنِيْفَةَ: عَنْ حَمَّادٍ، عَنْ إِبْرَاهِيْمَ، أَنَّ رَجُلًا حَدَّثَهُ، أَنَّهُ سَأَلَ عَبْدَ اللهِ بْنَ مَسْعُوْدٍ  عَنْ خُطْبَةِ النَّبِيِّ  يَوْمَ الْـجُمُعَةِ، فَقَالَ لَهُ: أَمَا تَقْرَأُ سُوْرَةَ الْـجُمُعَةِ؟ قَالَ: بَلَىٰ، وَلَكِنْ لَا أَعْلَمُ، قَالَ: فَقَرَأَ عَلَيْهِ: [وَإِذَا رَأَوْا تِجَارَةً أَوْ لَهْوًا انْفَضُّوْا إِلَيْهَا وَتَرَكُوْكَ قَائِمًا] {الجمعة: ১১}.


১৪১. অনুবাদ: ইমাম আবু হানিফা হাম্মাদ থেকে, তিনি ইব্রাহীম থেকে, তিনি বলেন, জনৈক ব্যক্তি (ইবনে মাজাহ শরীফের বর্ণনা অনুযায়ী ঐ ব্যক্তি ছিলেন হযরত আলকামা ইবনে কাসেম (رحمة الله)) হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (رضي الله عنه)’র নিকট রাসূল (ﷺ) ’র জুমার খুৎবা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করেন। তিনি বলেন, তোমরা কি সূরা জুমা পাঠ করনা? ঐ ব্যক্তি বলল, হ্যাঁ, কিন্তু আমি এর মমার্থ উপলব্ধি করতে পারিনি। অতঃপর তিনি কুরআনের এই আয়াত তিলাওয়াত করেন,

-وَإِذَا رَأَوْا تِجَارَةً أَوْ لَهْوًا انْفَضُّوا إِلَيْهَا وَتَرَكُوكَ قَائِمًا“

"যখন তারা দেখল ব্যবসা ও কৌতুক, তখন তারা আপনাকে দাঁড়ানো অবস্থায় রেখে তার দিকে ছুটে গেল। (সূরা জুমা, আয়াত, ১১)

ব্যাখ্যা: উপরোক্ত হাদিসে ইবনে মাসউদ (رضي الله عنه)’র গভীর জ্ঞানের পরিচয় পাওয়া যায়। তিনি কুরআনের আয়াতের মাধ্যমে প্রশ্নকারীর প্রশ্নের উত্তর প্রদান করেছেন।

দলীলের মূল উৎস হলো وتركوك قائمًا “তাঁরা আপনাকে দাঁড়ানো অবস্থায় ছেড়ে গিয়েছে।” এতে প্রতীয়মান হয় যে, রাসূল (ﷺ)  দাঁড়িয়ে খুৎবা দিতেন। হযরত জাবির ইবনে সামুরা, হযরত জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ, হযরত আবু হোরায়রা এবং হযরত ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه) সহ আরো অনেক সাহাবা থেকে এটাই বর্ণিত আছে। 

খুৎবা সম্পর্কে এখানে কয়েকটি বিষয় আলোচনা প্রয়োজন। তা হল-ইমাম আবু হানিফা (رحمة الله)’র মতে খুৎবা দাঁড়িয়ে পড়া সুন্নত। বসে পড়লেও আদায় হবে, তবে রাসূল (ﷺ)  ও সাহাবায়ে কিরামের আমল বিরোধী হবে। তাই এটা মাকরূহ হিসেবে গণ্য হয়েছে। ইমাম শাফেঈ (رحمة الله) দাঁড়ানোকে খুৎবার শর্ত বলেছেন। বসে খুৎবা দিলে আদায় হবে না। ইমাম মালিক (رحمة الله) এক রেওয়ায়েতে ইমাম শাফেঈ (رحمة الله)’র সাথে একমত পোষণ করেছেন। ইমাম আহমদ (رحمة الله)ও তাঁদের অনুসরণ করেছেন।

জুমার দিন খুৎবা সংক্ষিপ্ত করে নামায দীর্ঘ করা সুন্নত। মুসলিম শরীফে হযরত আম্মার (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত আছে-

ان طول صلوة الرجل وقصر خطبة مانّة من فقهه فاطيلوا الصلوة واقصروا الخطبة وان من البيان لسحرًا-

“পুরুষের নামায দীর্ঘ করা এবং খুৎবা সংক্ষিপ্ত করা তাদের ইলমে ফিকহের জ্ঞানের পরিচায়ক। সুতরাং তোমরা নামায দীর্ঘ কর আর খুৎবা সংক্ষিপ্ত কর। কিছু বক্তৃতা যাদুর প্রভাব রাখে।”  

➥ ইমাম মুসলিম (رحمة الله), (২৬১ হিঃ) সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১৯০৬   


মুস্তাদরাক গ্রন্থে বর্ণিত আছে, হযরত আম্মার (رضي الله عنه) বলেন, রাসূল (ﷺ)  আমাদেরকে খুৎবা সংক্ষিপ্ত করতে নির্দেশ দিয়েছেন।

লাঠির উপর হাত রেখে খুৎবা প্রদান করা রাসূল (ﷺ)  থেকে বর্ণিত আছে। আবু দাউদে হযরত হাকাম ইবনে হাযম (رحمة الله) থেকে বর্ণিত আছে, আমরা জুমার নামাযে উপস্থিত হয়েছি, তখন রাসূল (ﷺ)  কে লাঠি অথবা ধনুকের উপর ভর দিয়ে দাঁড়িয়ে খুৎবা দিতে দেখেছি। হযরত বারা (رضي الله عنه) বলেন, রাসূল (ﷺ)  ঈদের সময় ধনুকের উপর ভর দিয়ে খুৎবা দিতেন।

 
Top