ঈমান, আক্বীদা ও রূহানী ফিতনা থেকে হেফাজতের বর্ণনা


মাসআলাঃ ফিতনা-ফাসাদ হতে দূরে সরে থাকা এটি দ্বীনের অন্তর্ভূক্ত এবং আম্বিয়া আলাইহিস্সালামের সুন্নাত। যদিওবা এক বিঘত পরিমাণ হউক। যেখানে ঈমান, আক্বীদা, নির্ভেজাল রূহানিয়াত ও বুজুর্গানে দ্বীনের মূল ভিত্তির পরিপন্থী পরিলক্ষিত হবে ঐখান থেকে সঠিক ঈমান-আক্বীদার হেফাজতের লক্ষে দূরে সরে যাওয়া আবশ্যক।


আল্লাহপাক সকলের ঈমান-আক্বীদা হিফাজত করুন।


বুখারী শরীফ ১ম খণ্ডে বর্ণিত রয়েছে- অর্থাৎ- অতিসত্ত্বর মুসলমানগণের সর্বোত্তম সম্পদ ছাগল হবে, যা নিয়ে তারা পাহাড়ের চুড়ায় অথবা পাহাড়ের কল­বে গিয়ে জীবন যাপন করবে, যাতে করে সঠিক দ্বীন ঐ সময়ের ফিতনা-ফাসাদ থেকে হিফাজত থাকে।


সার্বজনীন ভাবে দ্বীনের উপকার ও লাভের দিকে খেয়াল করে সামাজিক জীবন-যাপন করা ইসলামের মধ্যে সর্বোচ্চ পছন্দনীয়। আর এটিই হচ্ছে হযরাত আন্বিয়া আলাইহিস্সালামের ত্বরিকা ও নিয়ম যাতে সংশোধিত ভাবে জীবন-কাল অতিবাহিত করতে পারে। ২৫৯

 ➥২৫৯. বুখারী শরীফ, ১ম খণ্ড।



টাই বাঁধার বর্ণনা


মাসআলাঃ টাই এক সময় খৃষ্টানের নিদর্শন ছিল, সে সময় উহার হুকুমও কঠোর ছিল। এখন খৃষ্টান ছাড়া অন্যরাও অনেক ব্যবহার করে, নামায, রোযার পাবন্দ লোকেরাও ব্যবহার করে এখন উহার হুকুম হালকা হওয়া উচিত, যুগের পরিবর্তনের দরুণ হুকুমও পরিবর্তন হয়ে যায়, অতএব, উহা মাকরূহ সহকারে জায়েয, মাকরূহ কঠোর নয় বরং হালকা। যে স্থানে উহার ব্যবহার ব্যাপক হয়ে যায়- ঐ স্থানে নিষেধের উপর জোর দেয়া যাবে না।



কাককে বদ্দোয়া এবং কবুতরকে পুরস্কৃত করার বর্ণনা



মাসআলাঃ তাফসীর গ্রন্থে বর্ণিত রয়েছে যে, হযরত নূহ আলাইহিস্সালাম এর আমলে তুফানের সময় কিশ্তিতে আরোহণ করার পর যখন কিশ্তি যুদি পাহাড়ের উপর স্থীর হলো, তখন তিনি কিশতির সে কক্ষটি খুলল, যে কক্ষে পাখীসমূহ রয়েছিল। তিনি কাককে বললেন- তুমি জমিনে গিয়ে দেখে আস পানি কি পরিমাণ অবশিষ্ট আছে। (অর্থাৎ বন্যার পানি কতটুকু কমছে, তা দেখে আস) অথবা শহরের অবস্থা কেমন বা শহর কি পরিমাণ ধ্বংস হয়েছে। কাক নির্দেশ প্রাপ্তি হয়ে জমিনে যাওয়ার পর একটি মৃত জন্তু পেল, কাক সে মৃত জন্তু খেতে আরম্ভ করল, এমনকি নূহ (عليه السلام)’র নির্দেশের কথা পর্যন্ত ভুলে গেল। কাক আর ফিরে গেল না। ২৬০

 ➥২৬০. তাফসীরে আবিল লাইচ ও হায়াতুল হাইওয়ান।


এ জন্যই আরবে একটি প্রবাদ বাক্য রয়েছে- ابطاء من غراب  অর্থাৎ- অমূক ব্যক্তি কাকের চেয়েও বেশী দেরী করছে। যেহেতু নূহ (عليه السلام) জমিন কি পরিমাণ শুষ্ক ও শক্ত হয়েছে তা জানার জন্য কাককে পাঠিয়েছে, কাক আসতে দেরী করায় তিনি কবুতরকে পাঠালেন পানি কতটুকু কমেছে তা দেখার জন্য। কবুতর গিয়ে জমিনের কোন অংশ তার নজরে পড়ল না। অর্থাৎ কবুতর গিয়ে দেখল জমিন এখনো পানির নিচে। তাই কবুতর যয়তুন গাছের একটি পাতা নিয়ে নূহ (عليه السلام)’র নিকট উপস্থিত হলো। তা দেখে তিনি বুঝতে পারলেন যে- পানি কমে গেছে, যদ্দরুন গাছ-গাছালি দেখা যাচ্ছে। তবে পানি সম্পূর্ণ ভাবে এখনো কমেনি।


শুধুমাত্র গাছের আগা দেখা যাচ্ছে। কিছুদিন পর পূনরায় কবুতরকে পাঠালেন জমিনে পানি কমেছে কিনা আর পানি কমলেও মাটি শুষ্ক হয়েছে কিনা তা দেখার জন্য। কবুতর জমিনে বসল তাতে তার পা কাদার মধ্যে ঢুকে গেল। ঐ অবস্থায় নূহ (عليه السلام)-এর দরবারে কবুতর উপস্থিত হলে কবুতরের পায়ে কাদা মাটির চিহ্ন দেখে তিনি বুঝতে পারলেন, জমিনে পানি নাই, তবে মাটি এখনো শুকনো হয়নি। কবুতরের আসা-যাওয়াতে নূহ (عليه السلام) খুব বেশী খুশি হয়ে দোয়া করলেন, কবুতরের গলায় সবুজ রঙের মালা পরিধান করালেন, তাঁর দোয়ার বদৌলতে কবুতরের গলা সুন্দর ও তার কন্ঠও সুমধুর। আর কবুতরের নিরাপত্তা ও শান্তির জন্য দোয়া করেন, যার কারণে কবুতরকে লোকেরা খুব পছন্দ করে ও লালন-পালন করে। আর অপর দিকে কাককে বদ্দোয়া করার কারণে লোকেরা কাককে ঘৃণা ও হিংসা করে এবং মনহুচ মনে করে।  ২৬১

 ➥২৬১. তাফসীরে রূহুল বায়ান।

 
Top