১১ - بَابُ مَا جَاءَ فِي تَوْقِيْتِ الْـمَسْحِ

৬৫ - أَبُوْ حَنِيْفَةَ: عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ دِيْنَارٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ: رَأَيْتُ النَّبِيَّ  يَمْسَحُ عَلَى الْـخُفَّيْنِ فِي السَّفَرِ، وَلَـمْ يُوَقِّتْهُ.


বাব নং ২৬. ১১. মাসেহ করার সময় নির্ধারণ করা প্রসঙ্গে


৬৫. অনুবাদ: ইমাম আবু হানিফা আব্দুল্লাহ ইবনে দীনার থেকে, তিনি ইবনে ওমর (رضي الله عنه) থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, আমি রাসূল (ﷺ) কে সফরে মোজার উপর মাসেহ করতে দেখেছি। কিন্তু তিনি এর সময়-সীমা নির্ধারণ করেননি।

ব্যাখ্যা: ইবনে ওমর (رضي الله عنه)’র হাদিস لَـمْ يُوَقِّتْهُ দ্বারা সময়সীমা নির্ধারণ হওয়াকে নফী করেনা। বরং অনেক বিশুদ্ধ হাদিস দ্বারা মাসেহের সময়-সীমা নির্ধারণ আছে। তবে সময়-সীমা নির্ধারণ না হওয়ার হাদিসও আছে যা থেকে ইমাম মালেক (رحمة الله) দলীল গ্রহণ করেছেন। জমহুর মুহাদ্দিসীনে কেরাম ঐসব হাদিসকে দুর্বল রেওয়ায়েত বলে আখ্যায়িত করেছেন।


66 - أَبُوْ حَنِيْفَةَ: عَنْ حَمَّادٍ، عَنْ إِبْرَاهِيْمَ النَّخْعِيِّ، عَنْ أَبِيْ عَبْدِ اللهِ الْـجَدَلِيِّ، عَنْ خُزَيْمَةَ بْنِ ثَابِتٍ، عَنِ النَّبِيِّ ، أَنَّهُ قَالَ فِي الْـمَسْحِ عَلَى الْـخُفَّيْنِ: «لِلْمُقِيْمِ يَوْمًا وَلَيْلَةً، وَلِلْمُسَافِرِ ثَلَاثَةَ أَيَّامٍ وَلَيَالِيْهَا، لَا يَنْزِعُ خُفَّيْهِ إِذَا لَبِسَهُمَا وَهُوَ مُتَوَضِّئٌ».

وَفِيْ رِوَايَةٍ: «الْـمَسْحُ عَلَى الْـخُفَّيْنِ لِلْمُسَافِرِ ثَلَاثَةَ أَيَّامٍ وَلِلْمُقِيْمِ يَوْمًا وَلَيْلَةً، إِنْ شَاءَ إذَا تَوَضَّأَ قَبْلَ أَنْ يَلْبَسَهُمَا».


৬৬. অনুবাদ: ইমাম আবু হানিফা হাম্মাদ থেকে, তিনি ইব্রাহীম নখঈ থেকে, তিনি আবু আব্দুল্লাহ জাদালী থেকে, তিনি খুযাইমা ইবনে সাবিত (رضي الله عنه) থেকে, তিনি নবী করিম (ﷺ)  থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেছেন, মোজার উপর মাসেহ মুকীমের জন্য একদিন একরাত আর মুসাফিরের জন্য তিনদিন-তিনরাত সময়-সীমা নির্ধারিত। যদি উযূ অবস্থায় মোজা পরিধান করে থাকে, তবে মোজা খোলার প্রয়োজন নেই।

অন্য এক রেওয়ায়েতে আছে, মোজার উপর মাসেহকারী মুসাফিরের জন্য তিনদিন এবং মুকীমের জন্য একদিন ও একরাত, যদি সে ইচ্ছা করে। অবশ্য যদি সে মোজা পরিধানের পূর্বে উযূ করে থাকে। (বায়হাকী, ১/২৭৮/১২৩৯)

ব্যাখ্যা: মাসেহ করার সময়-সীমা নির্ধারণের মধ্যেও শরীয়তের একটি বিশেষ রহস্য রয়েছে। অধিকাংশ কাজের মধ্যে সময়-সীমা কমপক্ষে একদিন একরাত ধরা হয়ে থাকে। তাই শরীয়ত মুকীমের জন্য এই সময় র্নিধারণ করেছে। পক্ষান্তরে মুসাফিরের ক্ষেত্রে সফরের সময় কাজ লাঘব করার জন্য তা তিনগুণ বৃদ্ধি করা হয়েছে। তাছাড়া কোন কোন সময় মুসাফিরের নিকট পানির ঘাটতি থাকে। আবার কখনো সময়ের স্বল্পতা দেখা দেয়। শরীয়তে এসব ওযরের কারণে মুসাফিরের উপর অনুগ্রহ ও সফর সহজ করার উদ্দেশ্যে তিনদিন তিনরাত পর্যন্ত সুযোগ দান করা হয়েছে। আর দুই সংখ্যাকে এইজন্য পরিহার করা হয়েছে যে, আল্লাহ বেজোড় এবং তিনি বেজোড়কে পছন্দ করেন। তাই বেজোড় সংখ্যা গ্রহণ করা হয়েছে। অথবা এটাও হতে পারে যে, বহুবচনের সর্বনিম্ন সংখ্যা হল তিন। মোটকথা শরীয়তের প্রতিটি বিষয়ই হেকমতে পরিপূর্ণ।

67 - أَبُوْ حَنِيْفَةَ: عَنْ سَعِيْدٍ، عَنْ إِبْرَاهِيْمَ التَّيْمِيِّ، عَنْ عَمْرِو بْنِ مَيْمُوْنٍ الْأَوْدِيِّ، عَنْ أَبِيْ عَبْدِ اللهِ الْـجَدَلِيِّ، عَنْ خُزَيْمَةَ بْنِ ثَابِتٍ ، أَنَّ النَّبِيَّ  سُئِلَ عَنِ الْـمَسْحِ عَلَى الْـخُفَّيْنِ، قَالَ: «لِلْمُسَافِرِ ثَلَاثَةَ أَيَّامٍ وَلَيَالِيْهِنَّ، وَلِلْمُقِيْمِ يَوْمًا وَلَيْلَةً».


৬৭. অনুবাদ: ইমাম আবু হানিফা সাঈদ থেকে, তিনি ইব্রাহীম তাইমী থেকে, তিনি আমর ইবনে মাইমুন থেকে, তিনি আবু আব্দুল্লাহ জাদালী থেকে, তিনি খুযাইমা ইবনে সাবিত (رضي الله عنه) থেকে বর্ণনা করেন, নবী করিম (ﷺ)  থেকে মোজার উপর মাসেহ করার সময়-সীমা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হয়। তিনি বলেন, মুসাফিরের জন্য তিনদিন তিনরাত আর মুকীমের জন্য একদিন একরাত।

ব্যাখ্যা: ইমাম শাফেয়ী (رحمة الله)’র মতে মোজা পরিধান করার পর থেকে মাসেহ করার সময়-সীমা আরম্ভ হয়। পক্ষান্তরে ইমাম আবু হানিফা (رحمة الله)’র মতে হাদসের পর থেকে আরম্ভ হয়। অর্থাৎ যদি কোন মুকীম সকালে মোজা পরিধান করে এবং ঐ উযূ দিয়ে যোহরের নামায আদায় করে কিন্তু যোহরের পর উযূ ভেঙ্গে যায়, তাহলে পরবর্তী দিনের সকালে নয় বরং যোহরের নামাযের পর পর্যন্ত মাসেহ করার সময় বাকী থাকবে। এ মতটাই কিয়াসের নিকটবর্তী। কেননা, মোজার কাজ হল অপবিত্র বস্তুকে পা পর্যন্ত পৌঁছতে না দেয়া আর এর প্রতিক্রিয়া উযূ ভঙ্গের পর থেকে শুরু হবে। কারণ পূর্বে তা অপবিত্র ছিল। এসময় অপবিত্র বস্তু প্রতিরোধ করার প্রশ্নই আসেনা।

এখানে আরো উল্লে­খ্য যে, এক মুকীম ব্যক্তি মোজার উপর মাসেহ করল এবং একদিন একরাত তার উযূ ভাঙ্গেনি। তাহলে সে কি তার মোজা খুলে ফেলবে? না, খুলবে না। তখন তার মোজা খোলার প্রয়োজন নেই। সুতরাং বুঝা গেল মোজা পরিধান করার সময় থেকে নয়, বরং উযূ ভেঙ্গে যাওয়ার পর থেকে সময়-সীমা আরম্ভ হবে। এটাই ইমাম আবু হানিফা (رحمة الله)’র মাযহাব।

68 - أَبُوْ حَنِيْفَةَ: عَنِ الْـحَكَمِ، عَنِ الْقَاسِمِ بْنِ مُحَمَّدٍ، عَنْ شُرَيْحِ بْنِ هَانِئٍ، عَنْ عَلِيٍّ ، عَنِ النَّبِيِّ : «يَمْسَحُ الْـمُسَافِرُ عَلَى الْـخُفَّيْنِ ثَلَاثَةَ أَيَّامٍ وَلَيَالِيْهِنَّ، وَالْـمُقِيْمُ يَوْمًا وَلَيْلَةً».


৬৮. অনুবাদ: ইমাম আবু হানিফা হাকাম থেকে, তিনি কাসেম ইবনে মুহাম্মদ থেকে, তিনি শুরাইহ্ ইবনে হানী থেকে, তিনি হযরত আলী (رضي الله عنه) থেকে, তিনি নবী করিম (ﷺ)  থেকে বর্ণনা করেন, মুসাফির তিনদিন তিনরাত পর্যন্ত মোজার উপর মাসেহ করবে আর মুকীম একদিন একরাত।

 
Top