বিষয় নং-০৯: ‘ওলীগণ স্বীয় মাযারে  জীবিত’ থাকা।


‘হাদীসের নামে জালিয়াতি’ গ্রন্থের ৪২৬ পৃষ্ঠায় লেখক ওলীদের জীবীত থাকার বিষয়টি প্রমাণিত নয় এবং এ বিষয়ের হাদিসগুলো বানোয়াট বলে দাবী করেছেন। তিনি তারপর লিখেছেন-‘‘আমরা জানি যে, মুমিন-কাফির প্রতিটি মানুষই মৃত্যুর মাধ্যমে ‘ধ্বংসশীল ইহ জগৎ থেকে স্থায়ী পরজগতে স্থানান্তরিত হয়।’’ তিনি নবীদের বিশেষ জীবন খুব কষ্টে স্বীকার করে তারপর লিখেন-‘‘এছাড়া অন্য কোনো নেককার মানুষের পারলৌকিক বিশেষ কোনো জীবন প্রমাণিত নয়।’’ আমি মিথ্যাচারের জবাবে কতিপয় রেওয়ায়েত পেশ করার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে, এ গ্রন্থে বিষয়টি সংযোগ করলাম। প্রথমে সকলেরই জেনে রাখা উচিত, নবী ছাড়া প্রত্যেক কামিল পূর্ণ মু’মিন এবং এমনকি সাহাবীগণও ওলীর অন্তর্ভূক্ত।


ড. আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর সনদবিহীন একটি রেওয়ায়েত প্রথমে উল্লেখ করে পুরো বিষয়টিকে অস্বীকার করেছেন। হ্যাঁ, আমি স্বীকার করছি কতিপয় মুহাদ্দিস, মুফাস্সির সনদবিহীন একটি হাদিস উল্লেখ করেছেন, তার মানে কি দাঁড়ায় এ বিষয়ের দলিল শুধু একটাই!



বিভিন্ন আলেমদের বর্ণনা:


❏ যেমন আল্লামা ইসমাঈল হাক্কী হানাফী (رحمة الله) বর্ণনা করেন-


قَالَ عَلَيْهِ الصَّلَاةُ وَالسَّلَامُ: أَوْلِيَاءُ اللَّهِ لَا يَمُوتُونَ وَلَكِنْ يُنْقَلُونَ مِنْ دَارٍ إِلَى دَارٍ


-“রাসূল (ﷺ) বলেন: সাবধান! নিশ্চয় আল্লাহর ওলীগণের মৃত্যু নেই।” ৫৮

➥{আল্লামা ইসমাঈল হাক্বী: তাফছিরে রুহুল বয়ান, ৫ম খণ্ড, ২২৪ পৃ:; ইমাম মোল্লা আলী ক্বারী: মেরকাত শরহে মেসকাত, ১৩৬৬ নং হাদিসের ব্যাখ্যায়; ইমাম ফখরুদ্দিন রাবী: তাফছিরে কবীর, ৯ম খণ্ড, ৪২৭ পৃ: সূরা আলে ইমরানের ১৬৯-৭০ নং আয়াতের তাফছিরে; তাফছিরে নিছাপুরী, ৪র্থ খণ্ড, ৩৮৩ পৃ:; গাউছে পাক: সিররুল আসরার।}



❏ হিজরী ১১শ শতাব্দির মোজাদ্দিদ, আল্লামা মোল্লা আলী ক্বারী হানাফী (رحمة الله) হাদিসটি এভাবে উল্লেখ করেন: 


أَوْلِيَاءُ اللَّهِ لَا يَمُوتُونَ وَلَكِنْ يَنْتَقِلُونَ مِنْ دَارٍ إِلَى دَارٍ


-“আল্লাহর ওলীগণ মৃত্যুবরণ করে না, বরং তারা এক স্থান থেকে অন্য স্থানে স্থানান্তরিত হয়।” 


(ইমাম মোল্লা আলী ক্বারী: মেরকাত শরহে মেসকাত, ১৩৬৬ নং হাদিসের ব্যাখ্যায়)


❏ হিজরী ৬ষ্ঠ শতাব্দির মোজাদ্দিদ, আল্লামা ইমাম ফখরুদ্দিন রাজী (رحمة الله) এভাবে হাদিসটি উল্লেখ করেন-


قَالَ عَلَيْهِ الصَّلَاةُ وَالسَّلَامُ: أَوْلِيَاءُ اللَّهِ لَا يَمُوتُونَ وَلَكِنْ يُنْقَلُونَ مِنْ دَارٍ إِلَى دَارٍ


-“আল্লাহর রাসূল (ﷺ) বলেছেন: আল্লাহর ওলীগণ মৃত্যুবরণ করেনা, বরং তারা এক স্থান থেকে অন্য স্থানে স্থানান্তরিত হয়।” 


(তাফসিরে কবীর, ৯ম খণ্ড, ৪২৭ পৃ: সূরা আলে ইমরানের ১৬৯-৭০ নং আয়াতের তাফছিরে)


❏ আল্লামা নিজামুদ্দিন হাসান ইবনে মুহাম্মদ ইবনে হুছাইন নিশাপুরী (رحمة الله) [ওফাত ৮৫০ হিজরী] তদীয় কিতাবে এভাবে উল্লেখ করেন, 


وكقوله صلى الله عليه وسلم: أولياء الله لا يموتون ولكن ينقلون من دار إلى دار


-“আর আল্লাহর রাসূল (ﷺ) এর বাণী হল: আল্লাহর ওলীগণ মৃত্যুবরণ করেনা, বরং তারা এক স্থান থেকে অন্য স্থানে স্থানান্তরিত হয়।” 


(তাফসিরে নিশাপুরী, ৪র্থ খণ্ড, ৩৮৩ পৃ:)


❏ হেরেম শরীফে অন্যতম ইমাম, আল্লামা ইসমাঈল হাক্বী (رحمة الله) এভাবে হাদিসটি উল্লেখ করেন-


قوله عليه السلام اولياء الله لا يموتون بل ينقلون من دار الى دار


-“আল্লাহর রাসূল (ﷺ) বাণী: আল্লাহর ওলীগণ মৃত্যুবরণ করেনা, বরং তারা এক স্থান থেকে অন্য স্থানে স্থানান্তরিত হয়।”


(তাফসিরে রুহুল বয়ান, ৫ম খণ্ড, ২২৪ পৃ:)


❏ আল্লামা আবুল ফায়েয যুবাইদী (رحمة الله) এভাবে উল্লেখ করেছেন,


أَنَّ أَوْلياءَ اللهِ لَا يَمُوتُونَ، ولكِنْ يُنْقَلُون من دارٍ إِلَى دارٍ


-“নিশ্চয় আল্লাহর ওলীগণ মৃত্যুবরণ করেনা, বরং এক স্থান থেকে আরেক স্থানে প্রত্যাবর্তন করে।” 


(আল্লামা যুবাইদী: তাজুল আরুছ, ২৪তম খণ্ড, ১৩৬ পৃ:; আল উবাবুজ জুখার, ১ম খণ্ড, ৪৭৩ পৃ:)


এবার আমি সনদসহ যে হাদিস ও ওলীদের ঘটনা বর্ণিত হয়েছে তা আপনাদের সামনে তুলে ধরবো।



দলীল নং ১-২


عن ابى هريرة ؓ أن رسول الله ﷺ قال لشهداء أحد: أَشْهَدُ أَنَّ هَؤُلَاءِ شُهَدَاءُ عِنْدَ اللَّه يَوْمَ الْقِيَامَةِ، فَأْتُوهُمْ وَزُورُوهُمْ، وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ لَا يُسَلِّمُ عَلَيْهِمْ أَحَدٌ إِلَى يَوْمِ الْقِيَامَةِ إِلَّا رَدُّوا عَلَيْهِ.


-‘‘হযরত আবু হুরায়রা (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নিশ্চয় রাসূল (ﷺ) উহুদের শহীদদের লক্ষ্য করে ইরশাদ করেন, আমি সাক্ষ্য দেই যে,  উহুদের শহীদগণ আল্লাহর কাছে শহীদ (আর শহীদগণ জীবিত যা কুরআনে আছে, বাক্বারা-১৫৪) তোমরা যেয়ে তাদের যিয়ারত কর। সেই সত্তার কসম যার কুদরতী হাতে আমার প্রাণ, কেয়ামত পর্যন্ত তাদের প্রতি যে কেউ সালাম প্রেরণ করবে তারা তাদের সালামের জবাব দিবে।’’  ৫৯

➥{ইমাম বায়হাকীঃ দালায়েলুন নবুয়াতঃ ৩/৩০৭ পৃ., ইমাম জালালুদ্দীন সুয়ূতিঃ আল-খাসায়েসুল কোবরা, ১/৩৮৮ পৃ. হা/১২১৫}


সুতরাং বুঝা গেল,  রাসূল (ﷺ) যেমনিভাবে জীবিত থাকার কারণে তার উম্মতের সালামের জবাব দেন তেমনিভাবে তাঁরাও দেন।



দলীল নং ৩-৬


❏ এ ধরণের বর্ণনা আরো পাওয়া যায়-


حَدَّثَنِي عَبْدُ الْأَعْلَى بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي فَرْوَةَ، عَنْ أَبِيهِ، أَنَّ النَّبِيَّ ﷺ زَارَ قُبُورَ الشُّهَدَاءِ بِأُحُدٍ فَقَالَ: اللَّهُمَّ إِنَّ عَبْدَكَ وَنَبِيَّكَ يَشْهَدُ أَنَّ هَؤُلَاءِ شُهَدَاءُ، وَأَنَّهُ مَنْ زَارَهُمْ وَسَلَّمَ عَلَيْهِمْ إِلَى يَوْمِ الْقِيَامَةِ رَدُّوا عَلَيْهِ. هَذَا إِسْنَادٌ مَدَنِيٌّ صَحِيحٌ، وَلَمْ يُخَرِّجَاهُ 


-‘‘হযরত আবুল আ’লা ইবনে আব্দুল্লাহ   তিনি তার পিতা থেকে বর্ণনা করেন,  রাসূল (ﷺ) যখন উহুদ যুদ্ধের দিন শহীদগণের কবর যিয়ারত করেছেন এবং বলেছেন, হে আল্লাহ্! তোমার বান্দা ও তোমার নবী সাক্ষ্য দেয় এরা শহীদ। যারা তাদের যিয়ারত করবে অথবা কিয়ামত পর্যন্ত তাদের প্রতি সালাম পাঠাবে উক্ত শহীদগণ তার জবাব দিবেন।’’ ৬০

➥{ইমাম বায়হাকী, দালায়েলুন নবুয়াত, ৩/৩০৭ পৃ., ইমাম হাকেম নিশাপুরী, আল-মুস্তাদরাক, ৩/২৯ পৃ,  হা/৪৩২০, ইমাম জালালুদ্দীন সুয়ূতিঃ আল-খাসায়েসুল কোবরা, ১/৩৮৮ পৃ. হা/১২১৬}



❏ শুধু তাই নয় ইমাম হাকিম (رحمة الله) বর্ণনা করেন-


قَالَ الْعَطَّافُ: وَحَدَّثَتْنِي خَالَتِي، أَنَّهَا زَارَتْ قُبُورَ الشُّهَدَاءِ، قَالَتْ: وَلَيْسَ مَعِي إِلَّا غُلَامَانِ يَحْفَظَانِ عَلَيَّ الدَّابَّةَ، قَالَتْ: فَسَلَّمْتُ عَلَيْهِمْ فَسَمِعْتُ رَدَّ السَّلَامِ، قَالُوا: وَاللَّهِ إِنَّا نَعْرِفُكُمْ كَمَا يَعْرِفُ بَعْضُنَا بَعْضًا، قَالَتْ: فَاقْشَعْرَرْتُ، فَقُلْتُ: يَا غُلَامُ ادْنُ بَغْلَتِي فَرَكِبْتُ 


-‘‘বর্ণনাকারী আতাফ  বলেন, আমার খালা বর্ণনা করেছেন,  তিনি উহুদের শহীগণের কবরস্থানের যিয়ারত করেছেন। তিনি বলেন, আমার সঙ্গে কেবল দুটি গোলাম ছিল। তারা যানবাহনের হেফাযত করছিল। আমি উক্ত উহুদের কবরবাসীগণকে সালাম করলাম। আমি সালামের জবাব শুনেছি। এরপর এই কণ্ঠস্বর শুনতে পেলাম- আমরা তোমাকে তেমনি চিনি, যেরূপ আমরা একে অপরকে চিনি। এরপর আমার লোমকুপ শিউরে উঠলো। আমি ফিরে এলাম। উক্ত রেওয়ায়েতটি ইমাম বায়হাকী ও ইমাম আবিদ দুনিয়া  ও উক্ত সূত্রে তাদের গ্রন্থে সংকলন করেছেন।’’ ৬১

➥{ইমাম জালালুদ্দীন সুয়ূতি, আল-খাসায়েসুল কোবরা, ১/৩৮৮ পৃ. হা/১২১৬, ইমাম হাকেম,  আল-মুস্তাদরাক, ৩/২৯ পৃ. হাদিস:৪৩২০}



দলীল নং- ৭-৮


শুধু তাই নয় ইমাম সুয়ূতি  এবং ইমাম বায়হাকী  আল্লামা ওয়াকেদীর সূত্রে বর্ণনা করেন-


قَالَ الْوَاقِدِيُّ: وَكَانَتْ فَاطِمَةُ الْخُزَاعِيَّةُ تَقُولُ: لَقَدْ رَأَيْتُنِي وقد غابت الشمس بقبول الشُّهَدَاءِ وَمَعِي أُخْتٌ لِي، فَقُلْتُ لَهَا: تَعَالَيْ نُسَلِّمْ عَلَى قَبْرِ حَمْزَةَ، فَقَالَتْ: نَعَمْ، فَوَقَفْنَا عَلَى قَبْرِهِ فَقُلْنَا: السَّلَامُ عَلَيْكَ يَا عَمَّ رَسُولِ اللَّه ﷺ ، فَسَمِعْنَا كَلَامًا رَدَّ عَلَيْنَا: وَعَلَيْكُمُ السَّلَامُ وَرَحْمَةُ اللَّه، 


-‘‘হযরত ফাতেমা খুযায়িয়্যাহ  বর্ণনা করেন, আমি শহীদগণের সর্দার হযরত আমীর হামযা (رضي الله عنه) এর মাযার যিয়ারত করেছি। আমি সেখানে দাঁড়িয়ে বললাম, হে রাসূলাল্লাহ (ﷺ) এর চাচা! আপনাকে সালাম। জবাবে আমি শুনলাম, ওয়া আলাইকুম আস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহু।’’  ৬২ সুবহানাল্লাহ!

➥{ইমাম বায়হাকী, দালায়েলুন নবুয়তঃ ৩/৩০৯ পৃ., ইমাম জালালুদ্দীন সুয়ূতি, আল-খাসায়েসুল কোবরাঃ ১/৩৮৮ পৃ. হাদিসঃ ১২১৭}



দলীল নং-৯


❏ উহুদের শহীদগণ জীবিত থাকার ব্যাপারে বিশিষ্ট সাহাবী হযরত আবু সাঈদ খুদরী  বলেন, 


فَقَالَ أَبُو سَعِيدٍ الْخُدْرِيُّ: لَا يُنْكِرُ بَعْدَ هَذَا مُنْكِرٌ، وَوُجِدَ عَبْدُ اللهِ بْنُ عَمْرٍو، وَعَمْرُو بْنُ الْجَمُوحِ فِي قَبْرٍ وَاحِدٍ، فَحُوِّلَا. وَذَلِكَ أَنَّ الْقَنَاةَ كَانَتْ تَمُرُّ عَلَى قَبْرِهِمَا، وَوُجِدَ خَارِجَةُ بْنُ زَيْدِ بْنِ أَبِي زُهَيْرٍ وَسَعْدُ بْنُ الرَّبِيعِ فِي قَبْرٍ وَاحِدٍ، فَتُرِكَا. وَلَقَدْ كَانُوا يَحِفرُونَ التُّرَابَ، فَحَفَرُوا نَثْرَةً مِنْ تُرَابٍ، فَفَاحَ عَلَيْهِمْ رِيحُ الْمِسْكِ


-‘‘উহুদের কবর সমুহ খননের পর ব্যাপকভাবে যা প্রত্যক্ষ করা গেছে,  তারপরও শহীদগণ জীবিত আছেন-এ সত্য অস্বীকার করার সাধ্য কারো নেই।.........এক বর্ণনায় আমি পেয়েছি (আবু সাঈদ খুদরী) যখন কবর সমূহ খনন করা হয়,  তখন মেশকের অনুরূপ একটি খুশবু চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে।’’ ৬৩

➥{ইমাম জালালুদ্দীন সুয়ূতি, আল-খাসায়েসুল কোবরা, ১/৩৮৮ পৃ. হা/১২১৪, বায়হাকী : দালায়েলুল নবুয়ত : ৩/২৯৪ পৃ.}



দলীল নং-১০


❏ বিশিষ্ট সাহাবী হযরত জাবের বিন আব্দুল্লাহ  তার পিতার কবরের অবস্থা সম্পর্কে বলেন-


قَالَ جَابِرٌ: فَرَأَيْتُ أَبِي فِي حُفْرَتِهِ، فَكَأَنَّهُ نَائِمٌ، فَقِيلَ لَهُ: أَفَرَأَيْتَ أَكْفِنَتَهُ؟ فَقَالَ: إِنَّمَا دُفِنَ فِي نَمِرَةٍ خُمِّرَ بِهَا وَجْهُهُ، وَعَلَى رِجْلَيْهِ الْحَرْمَلُ، فَوَجَدْنَا النَّمِرَةَ كَمَا هِيَ وَالْحَرْمَلُ عَلَى رِجْلَيْهِ عَلَى هَيْئَتِهِ، وَبَيْنَ ذَلِكَ سِتٌّ وَأَرْبَعُونَ سَنَةً، فَشَاوَرَهُمْ جَابِرٌ فِي أَنْ يُطَيَّبَ بِمِسْكٍ، فَأَبَى ذَلِكَ أَصْحَابُ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّه عَلَيْهِ وسلم. 


-‘‘হযরত জাবের  বলেন, আমি আমার পিতাকে যেভাবে কবরে দেখেছি তা এই- তিনি যেন নিদ্রাচ্ছন্ন আছেন (ঘুমিয়ে আছেন)। যে চাদরে তাকে কাফন দেয়া হয়েছিল তা তেমনি ছিল। তার পায়ের উপর যা রাখা হয়েছিল তাও তেমনি আকারে বিদ্যমান ছিল।....... অথচ ইতিমধ্যে চলি­শ বছর অতিবাহিত হয়ে গেছে। শহীদগণের মধ্যে একজনের পায়ে কোদাল লাগলে সেখান থেকে রক্ত বের হতে লাগল।’’ ৬৪

➥{ইমাম জালালুদ্দীন সুয়ূতি, আল-খাসায়েসুল কোবরা, ১/৩৮৮ পৃ. হাদিসঃ ১২১৪}



দলীল নং-১১-১৯ 


وَأخرج التِّرْمِذِيّ وَحسنه وَالْحَاكِم وَالْبَيْهَقِيّ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ: ضَرَبَ بَعْضُ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ خِبَاءَهُ عَلَى قَبْرٍ وَهُوَ لاَ يَحْسِبُ أَنَّهُ قَبْرٌ، فَإِذَا فِيهِ إِنْسَانٌ يَقْرَأُ سُورَةَ تَبَارَكَ الَّذِي بِيَدِهِ الْمُلْكُ حَتَّى خَتَمَهَا، فَأَتَى النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللهِ إِنِّي ضَرَبْتُ خِبَائِي عَلَى قَبْرٍ وَأَنَا لاَ أَحْسِبُ أَنَّهُ قَبْرٌ، فَإِذَا فِيهِ إِنْسَانٌ يَقْرَأُ سُورَةَ تَبَارَكَ الْمُلْكِ حَتَّى خَتَمَهَا. فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: هِيَ الْمَانِعَةُ، هِيَ الْمُنْجِيَةُ، تُنْجِيهِ مِنْ عَذَابِ القَبْرِ.


-‘‘হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه) বর্ণনা করেন, জনৈক সাহাবী এক কবরের উপর তাবু স্থাপন করেন। তিনি জানতেন না এখানে কবর রয়েছে। তিনি শুনতে পেলেন কবর থেকে কোন মানুষ সূরা মুলক তিলাওয়াত করছেন এবং তিনি পূর্ণ সূরাই তিলাওয়াত করলেন। সাহাবী হুযূর (ﷺ) কে এ ঘটনা অবগত করলে তিনি ইরশাদ করেন, এ সূরাটি আযাব প্রতিরোধক ও মুক্তিদাতা।’’ ৬৫

➥{ইমাম তিরমিযীঃ আস-সুনানঃ ফাযায়েলে তিলাওয়াতে কুরআন, ৫/১৪ পৃ. হাদিসঃ ২৮৯০, তিনি বলেন, হাদিসটি হাসান, গরীব। তিনি আরো বলেন, এ বিষয়ে হযরত আবু হুরায়রা (رضي الله عنه) এর সূত্রে হাদিস বর্ণিত হয়েছে (২) ইমাম হাকেম নিশাপুরী, আল-মুস্তাদরাকঃ ২/৪৯৮ পৃ. (৩) ইমাম বায়হাকী, শুয়াবুল ঈমান, ৪/১২৫ পৃ. হা/২২৮০ (৪) সুয়ূতি, আল-খাসায়েসুল কোবরা, ১/৩৮৯ পৃ, হা/১২১৯, সুয়ূতি বলেন ইমাম হাকেম সহীহ সনদে হাদিসটি বর্ণনা করেছেন (৫) ইমাম জালালুদ্দীন সুয়ুতী, শরহে সুদুর, ২৩৯ পৃ.(৬) আলবানী, সিলসিলাতুল..সহীহা, হা/১১৪০, তিনি বলেন, হাদিসটি সহীহ (৭) আল্লামা শফি উকাড়ভীঃ যিকরে জামিলঃ ১১৬ পৃ. (৮) ইমাম তাবরানী, মু’জামুল কাবীর, ১২/১৭৪ পৃ. হা/১২৮০১ (৯) ইবনে হাজার হায়সামীঃ মাযমাউদ যাওয়ায়েদঃ ৩/৮৫পৃ. হা/৬৭৫৬ (১০) বায়হাকী : এছবাতে আযাবিল কুবুর : ১/৯৯পৃ. হাদিস:১৫০ (১১) খতিব তিবরিযী : মিশকাত, ১/৬৬৩ পৃ. হা/২১৫৪}



পর্যালোচনা:


❏ ইমাম তিরমজি (رحمة الله) বলেছেন: এ বিষয়ে হযরত আবু হুরায়রা (رضي الله عنه) থেকেও হাদিস বর্ণিত আছে। এই হাদিসের রাবী ‘ইয়াহইয়া ইবনে আমর ইবনে মালেক আন নুকরী’ সম্পর্কে ইমামগণ দুর্বল আখ্যা দিলেও ইমাম দারে কুতনী (رحمة الله) বলেছেন:صويلح يُعتبر به. -“সে নেক বান্দাহ ও তার উপর নির্ভর করা যায়।” 


(হাফিজ ইবনে কাসির: তাকমীল ফি জারহি ওয়া তাদিল, রাবী নং ১২৯৮; হাফিজ ইবনে হাজার: তাহজিবুত তাহজিব, রাবী নং ৪২৩)


❏ ইমাম ইবনে আদী (رحمة الله) তার থেকে হাদিস বর্ণনা করতেন এবং বলতেন كلها محفوظة তার সকল হাদিস সংরক্ষিত। 


(হাফিজ ইবনে হাজার: তাহজিবুত তাহজিব, রাবী নং ৪২৩)



দলীল নং- ২০-২৩


❏ উহুদের ঘটনাটি হযরত আবু হুরায়রা  অন্য সনদে এভাবে যে রাসূল (ﷺ) বলেন,   


قَالَ: أَشْهَدُ أَنَّكُمْ أَحْيَاءٌ عِنْدَ اللَّهِ، فَزُورُوهُمْ وَسَلِّمُوا عَلَيْهِمْ، فَوَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ لَا يُسَلِّمُ عَلَيْهِمْ أَحَدٌ إِلَّا رَدُّوا عَلَيْهِ إِلَى يَوْمِ الْقِيَامَةِ. 


-‘‘আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, তোমরা আল্লাহর কাছে নিঃসন্দেহে জীবিত। (অতঃপর লোকজনদের লক্ষ্য করে ফরমালেন) সুতরাং তোমরা তাদের রওযা জিয়ারত করবে এবং তাদের প্রতি সালাম করবে। ঐ সত্তার কসম যার নিয়ন্ত্রণে আমার প্রাণ রয়েছে,  কিয়ামত পর্যন্ত যে কেউ তাদেরকে সালাম করবে এরা তার জবাব দিবে।’’ ৬৬

➥{হাকিম নিশাপুরীঃ আল-মুস্তাদরাকঃ ২/২৪৮ পৃ,  হাদিস: ২৯৭৭ তিনি বলেন হাদিসটি সহীহ, (২) ইমাম বায়হাকীঃ দালায়েলুন নবুওয়াতঃ ৩/৩০৮ পৃ. (৩) ইমাম জালালুদ্দীন সুয়ুতীঃ শরহুস সুদুরঃ ২৫৫পৃ, মাকতুবাতুত তাওফিকিয়্যাহ, মিশর, তিনি বলেন, হাদিসটি সহীহ, (৪) আল্লামা শফি উকাড়ভীঃ যিকরে জামীলঃ ১১৭-১১৮ পৃ. (৫) মুত্তাকী হিন্দী : কানযুল উম্মাল, ১০/৩৮১ পৃ. হা/২৯৮৯১ (৬) তাবরানী,  মু‘জামুল আওসাত : ৪/৯৭পৃ. হা/৩৭০০}


❏ এই একই শব্দে ইমাম তাবরানী তার “মু’জামুল আওসাত” গ্রন্থে অন্য সনদে ইবনে উমর  হতে হাদিস বর্ণনা করেছেন। ৬৭

➥{হায়সামী, মাযমাউদ যাওয়াইদঃ ৬/১২৩ পৃ. (২) হায়সামী, মাযমাউদ যাওয়াইদ : ৩/৬০ পৃ. হা/৪৩১৩ (৩) তাবরানী, মু‘জামুল কাবীর, ২০/৩৬৪ পৃ.}




দলীল নং-২৪-২৬ 


❏ ইমাম সুয়ুতী  ইমাম আবু শাইখ  এবং ইমাম ইবনে হিব্বান বর্ণনা করেন- 


وَأخرج أَبُو الشَّيْخ من مُرْسل عبيد بن مَرْزُوق قَالَ كَانَت إمرأة بِالْمَدِينَةِ تقم الْمَسْجِد فَمَاتَتْ فَلم يعلم بهَا النَّبِي صلى الله عَلَيْهِ وَسلم فَمر على قبرها فَقَالَ مَا هَذَا الْقَبْر فَقَالُوا أم محجن قَالَ الَّتِي كَانَت تقم الْمَسْجِد قَالُوا نعم فَصف النَّاس فصلى عَلَيْهَا ثمَّ قَالَ أَي الْعَمَل وجدت أفضل قَالُوا يَا رَسُول الله أتسمع قَالَ مَا أَنْتُم بأسمع مِنْهَا فَذكر أَنَّهَا أَجَابَتْهُ قُم الْمَسْجِد


-‘‘হযরত ওবায়দুল্লাহ ইবনে মারযুক  হতে বর্ণনা করেন,  উম্মে মেহজান নামক একজন মহিলা মসজিদে নববীতে ঝাড়– দিতেন। হঠাৎ তার ওফাত হলে রাসূল (ﷺ) এর অজ্ঞাতসারেই তাকে কবরস্থ করা হয়। অতঃপর রাসূল (ﷺ) সাহাবীদেরকে নিয়ে তার কবরকে সামনে রেখে জানাযা পড়ার পর বললেন- 


অর্থাৎ- তুমি কোন আমলটি উত্তম পেয়েছ? সাহাবীগণ বললেন, এই মহিলা কি শুনে? তিনি (ﷺ) বললেন,  তোমরা তাঁর চাইতে বেশী শ্রবণ কর না। ৬৮

➥{ইমাম জালালুদ্দীন সুয়ূতিঃ খাসায়েসুল কোবরাঃ ২/১১৫.পৃ. হাদিসঃ ১৮৩৭, তিনি বলেন হাদিসটি মুরসাল হলেও শক্তিশালী।}



দলীল নং- ২৭ 


❏ হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস  বলেন,  


عَن عِكْرِمَة قَالَ قَالَ إِبْنِ عَبَّاس الْمُؤمن يعْطى مُصحفا فِي قَبره يقْرَأ فِيهِ


-‘‘মু‘মিনকে তার কবরে কুরআন শরীফ দেয়া হয়। তথায় সে পাঠ করে।’’ ৬৯

➥{ইমাম জালালুদ্দীন সুয়ূতিঃ শরহুস সুদুরঃ ২৪০পৃ., তিনি ইমাম খাল্লালের “কিতাবুস সুন্নাহ” এর সূত্রে বর্ণনা করেন।}


তাই বলতে চাই, একজন মু‘মিনের যিদি এই অবস্থা হয় তাহলে অলীদের অবস্থা কিরূপ হবে!



দলীল নং-২৮


বিশিষ্ট সাহাবী হযরত তালহা ইবনে ওবায়দুল্লাহ বলেন, আমি আমার মালপত্র আনার ইচ্ছা করলাম যা গা’বা নামক স্থানে ছিল। পথিমধ্যে রাত হয়ে গেল।


فأويت إِلَى قبر عبد الله بن عَمْرو بن حرَام فَسمِعت قِرَاءَة من الْقَبْر مَا سَمِعت أحسن مِنْهَا فَجئْت إِلَى رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم فَذكرت ذَلِك لَهُ فَقَالَ ذَلِك عبد الله


-‘‘তখন আমি আব্দুল্লাহ ইবনে আমর ইবনে হিযামের কবরের পাশে অবস্থান নিলাম। আমি তাঁর কবর হতে এমন সুন্দর কিরাত শুনলাম যা থেকে উত্তম (কিরাত) আমি আর শুনিনি। অতঃপর আমি হুযূর (ﷺ) এর খিদমতে উপস্থিত হলাম এবং তার কাছে এ ঘটনা উলে­খ করলাম। তখন রাসূল (ﷺ) ফরমালেন,  তিনি তো আব্দুল্লাহ (কিরাত পাঠকারী)।’’  ৭০

➥{ইমাম জালালুদ্দীন সুয়ূতিঃ শরহুস সুদুর, ২৪০ পৃ.}



দলীল নং- ২৯ 


হযরত ইব্রাহিম ইবনে সিম্মাহ মাহলবী  বলেন,  আমার কাছে ঐ লোকেরা বর্ণনা করেছেন যারা সকাল বেলায় “হিসন” নামক স্থান দিয়ে পথ অতিক্রম করতেন।


قَالُوا كُنَّا إِذا مَرَرْنَا بجنبات قبر ثَابت الْبنانِيّ سمعنَا قِرَاءَة الْقُرْآن


-‘‘তারা বলেছেন যে,  যখন আমরা হযরত সাবিত বানানী ‘র কবরের পাশ দিয়ে যেতাম তখন আমরা কুরআনের তিলাওয়াত শুনতাম।’’ ৭১

➥{ইমাম জারীর তাবারী, তাহযীবুল আছার, ইমাম জালালুদ্দীন সুয়ূতি, শরহুস সুদুর, ২৩৮ পৃ., ইমাম আবু নুয়াইম ইস্পাহানী, হিলইয়াতুল আউলিয়া, ২/৩১৯ পৃ.}



দলীল নং-৩০


হযরত আসেম সাকতী  বলেন, আমরা বলখ শহরে একটি কবর খনন করলাম। এতে পার্শ্বস্থ আরেকটি কবর খুলে যায়। আমি তাতে দৃষ্টিপাত করলাম।


فَإِذا شيخ فِي الْقَبْر مُتَوَجّه إِلَى الْقبْلَة وَعَلِيهِ إِزَار أَخْضَر واخضر مَا حوله وَفِي حجره مصحف وَهُوَ يقْرَأ- 


-‘‘তখন দেখলাম যে,  যে বৃদ্ধ লোকটি কিবলামুখী হয়ে বসে আছেন তার পরনে রয়েছে সবুজ রংয়ের চাদর এবং আশ-পাশেও সবুজ। তার কোলে একখানা কুরআন শরীফ রয়েছে এবং তিনি তা পড়ছেন।’’  ৭২

➥{ইমাম জালালুদ্দীন সুয়ূতি, শরহুস সুদুর, ২৪১ পৃ. }



দলীল নং- ৩১


❏ ইমাম রাফেয়ী মক্কী  বলেন, 


وَقَالَ وَمن الْمَشْهُور أَن الْفَقِيه الْكَبِير الْوَلِيّ الشهير أَحْمد بن مُوسَى بن عجيل سَمعه بعض الْفُقَهَاء الصَّالِحين من قرائه يقْرَأ سُورَة النُّور فِي قَبره 


‘‘-আর এটা প্রসিদ্ধ কথা যে, একদল ধার্মিক ফকীহ মহান ফিকহবিদ, বিখ্যাত ওলী, আহমদ ইবনে মুসা ইবনে আযীল  কে তার কবরে সূরা নুর পাঠ করতে শুনেছেন।’’ ৭৩

➥{ইমাম জালালুদ্দীন সুয়ূতি, শরহুস সুদুর, ২৬১ পৃ.}



দলীল নং-৩২


❏ ইমাম সুয়ূতি (رحمة الله) বর্ণনা করেন-


وَقَالَ اليافعي فِي كِفَايَة المعتقد أخبرنَا بعض الأخيار عَن بعض الصَّالِحين أَنه كَانَ يَأْتِي قبر وَالِده فِي بعض الْأَوْقَات ويتحدث مَعَه-


-‘‘ইমাম আব্দুল্লাহ শাফেয়ী (رحمة الله)  তার ‘কিফায়াতুল মু‘তাকাদ’ গ্রন্থে জনৈক বুজুর্গ থেকে বর্ণনা করেন, তিনি কোন কোন সময় তার পিতার কবরে আগমন করতেন এবং তার সাথে কথা বলতেন।’’ ৭৪

➥{ইমাম জালালুদ্দীন সুয়ূতি, শরহুস সুদুর, ২৬১ পৃ.}



দলীল নং-৩৩


❏ ইমাম জালালুদ্দিন সুয়ূতি (رحمة الله) আরেকটি রেওয়াত উল্লেখ করেছেন, যেমন:


وَأخرج إِبْنِ مَنْدَه وَأَبُو أَحْمد وَالْحَاكِم فِي الكنى بِسَنَد ضَعِيف عَن طَلْحَة بن عبيد الله قَالَ أردْت مَالِي بِالْغَابَةِ فأدركني اللَّيْل فأويت إِلَى قبر عبد الله بن عَمْرو بن حرَام فَسمِعت قِرَاءَة من الْقَبْر مَا سَمِعت أحسن مِنْهَا 


-“ইবনে মানদাহ, আবু আহমদ, হাকেম তার আল কুনা গ্রন্থে দুর্বল সনদে বর্ণনা করেছেন। হযরত তালহা ইবনে উবাইদুল্লাহ বলেছেন: আমি ইচ্ছা পোষণ করলাম অনেক দূরে যাব, পথিমধ্যে রাত্র দেখা দিল ফলে আমি আব্দুল্লাহ ইবনে আমর (رضي الله عنه) এর কবরের কাছে গেলাম। অত:পর তার কবর থেকে আমি কোরআন তেলাওয়াতের আওয়াজ শুনতে পেলাম। যা সেখান থেকে শুনলাম ইহা অতি উত্তম ছিল।” 


(ইমাম সুয়ূতি, শরহে সূদুর, ১৯০ পৃ. হাদিস নং ১৯)


❏ এই হাদিস থেকেও প্রমাণিত হয় সাহাবীরা স্বীয় মাজারে কোরআন তেলাওয়াত করতেন। অতএব তারা জীবিত।



দলীল নং-৩৪


❏ এ বিষয়ে আরেকটি রেওয়াত উল্লেখ করা যায়,


وَأخرج إِبْنِ مَنْدَه عَن أبي النَّضر النَّيْسَابُورِي الحفار وَكَانَ صَالحا ورعا قَالَ حفرت قبرا فانفتح فِي الْقَبْر قبر آخر فَنَظَرت فِيهِ فَإِذا أَنا بشاب حسن الْوَجْه حسن الثِّيَاب طيب الرّيح جَالِسا متربعا فِي حجره كتاب مَكْتُوب بخضرة أحسن مَا رَأَيْت من الخطوط وَهُوَ يقْرَأ الْقُرْآن


-“আবী নাদ্বরা নিছাপুরী খাফার যিনি নেক বান্দাদের অন্তর্ভূক্ত ছিলেন। আমরা একটি কবর খনন করছিলাম, এতে পাশর্^স্থ আরেকটি কবর খুলে যায়। আমি তাতে দেখলাম, একজন সুন্দর চেহারার যুবক ও উত্তম পোশাক, পবিত্র সুগন্ধিযুক্ত অবস্থায় তার স্থানে বসে আছেন। তার কাছে একটি অতি সুন্দর কিতাব রয়েছে, এত সুন্দর যা আমি পূর্বে দেখিনি আর তিনি তা পাঠ করছেন।” 


(ইমাম সুয়ূতি: শরহে সূদুর, ১৯১ পৃ. হাদিস নং ২৮)


এই রেওয়ায়েত দ্বারাও প্রমাণিত হয়, কবরে নেক বান্দাহগণ জীবিত থাকেন।


অতএব, আল্লাহর ওলীগণ যার যার মাজারে জীবিত থাকবেন ও কোরআন তেলাওয়াত করবেন এটাই স্বাভাবিক। উল্লেখিত হাদিস সমূহ দ্বারা ছালেহীন তথা আল্লাহর ওলীগণের সে মহান মর্যাদা ও জীবিত থাকার বিষয়টি অনুধাবন করা যায়।


উক্ত বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হলে ইমাম সুয়ূতি  এর ‘শরহুস সুদুর’ গ্রন্থ দেখা যেতে পারে।

 
Top