সায়্যিদুনা উকবাহ বিন আমির রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুর আক্বিদা


রাসূল (ﷺ)’র পর্যবেক্ষণ নির্বাচিতকরণ এবং রাসূল (ﷺ)’র ইলমঃ-

সায়্যিদুনা উকবা ইবনু আমির (رضي الله عنه) বর্ণনা করেন, একদিন রাসূল (ﷺ) বাইরে তাশরিফ নিলেন এবং উহুদ বাসীদের জানাযার নামায পড়ানোর পর মিম্বর শরিফে আরোহন করলেন। ইরশাদ করেন,


إِنِّي فَرَطٌ لَكُمْ، وَأَنَا شَهِيدٌ عَلَيْكُمْ، وَإِنِّي وَاللهِ لَأَنْظُرُ إِلَى حَوْضِي الْآنَ، وَإِنِّي قَدْ أُعْطِيتُ مَفَاتِيحَ خَزَائِنِ الْأَرْضِ، أَوْ مَفَاتِيحَ الْأَرْضِ، وَإِنِّي، وَاللهِ مَا أَخَافُ عَلَيْكُمْ أَنْ تُشْرِكُوا بَعْدِي، وَلَكِنْ أَخَافُ عَلَيْكُمْ أَنْ تَتَنَافَسُوا فِيهَا


-‘‘হাউজে কাউসারে আমি তোমাদের আগে থাকবো। আমি তোমাদের জন্য সাক্ষ্য দেব। আল্লাহর শপথ, আমি হাউজে কাউসার দেখতেছি। নিশ্চয়ই আমাকে জমিনের ধনভান্ডারের চাবিসমূহ দেয়া হয়েছে অথবা পুরো যমিনের চাবিকাঠি দেয়া হয়েছে। আল্লাহর শপথ! তোমাদের সম্পর্কে আমার কোন ভয় নেই যে, তোমরা আমার পর শিরক করবে। কিন্তু শংকা হচ্ছে যে, তোমরা দুনিয়ার প্রতি আসক্ত হয়ে পড়বে।’’ ২৭৬

{২৭৬. সহীহ মুসলিম শরীফ, ৪/১৭৯৫ পৃ. হা/২২৯৬, আমাদের রাসূল (ﷺ)’র হাউজে কাউসারের প্রমাণ অধ্যায়, ইমাম বুখারী, আস-সহীহ, ২/৯১ পৃ., হা/১৩৪৪, পরিচ্ছেদ: بَابُ الصَّلاَةِ عَلَى الشَّهِيدِ}


আক্বিদা

নাবী কারীম (ﷺ) জমিনে তাশরীফ রেখে হাউজে কাউসারকে দেখেন। হাউজে কাউসার জান্নাতে। বুঝা গেল আল্লাহ তা‘আলা তাঁর প্রিয় হাবিব (ﷺ) কে এমন ক্ষমতা দান করেছেন যে, তিনি জমিনে তাশরীফ রেখে জান্নাত প্রত্যক্ষ করেন, অনুরূপ আল্লাহর সে প্রিয় মাহবূব (ﷺ) রওজা পাকে আরাম করেও উম্মতের অবস্থা পরিদর্শন করেন। ২৭৭

{২৭৭. মিশকাত শরীফের ২য় খণ্ডের بَاب الكَرَامَاتْ অধ্যায়ের পর وَفَاةِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ শীর্ষক অধ্যায়ে হযরত উকবা বিন আমের (رضي الله عنه) হতে উল্লেখিত আছেঃ

وَإِنَّ مَوْعِدَكُمُ الْحَوْضُ وَإِنِّي لَأَنْظُرُ إِلَيْهِ من مَقَامِي

-‘‘তোমাদের সঙ্গে আমার পুনরায় সাক্ষাতকারের জায়গা হল ‘হাউজে কাউছার’ যা আমি এখান থেকেই দেখতে পাচ্ছি।’’ (খতিব তিবরিযী, মিশকাত, ৪/৪০২ পৃ. হা/৫৯৫৮, ইমাম বুখারী, আস-সহীহ, ৭/৩৪৮ পৃ. হা/৪০৪২, ইমাম মুসলিম, আস-সহীহ, ৪/১৭৭৫ হা/২২৯৬, ইমাম নাসায়ীঃ আস-সুনানুল কোবরা, ৪/৬১ পৃ. হাদিসঃ ১৯৫৪, আহমদ ইবনে হাম্বলঃ আল-মুসনাদঃ ৪/১৪৮পৃ., ইমাম মুসলিমঃ আস্-সহীহ, প্রথম খণ্ডঃ হাদিসঃ ৩০)}


এটাও বুঝা গেল যে, আল্লাহ তা‘আলা তাঁর প্রিয় হাবীব (ﷺ) কে মালিক ও মুখ্তার বানিয়েছেন। তাকে জমিনের ধনভান্ডারের চাবিসমূহ দান করেছেন। 


❏কবি বলেন- 


ميں تو  مالك ہى كہوں  گا كہ ہو مالك كے حبيب

محبوب و محب ميں نہيں ميرا  تيرا


-‘‘আমি তো মালিকই বলবো, কেননা মালিকের (আল্লাহর) হাবিব,

প্রমিক ও পেমাষ্পদের মধ্যে আমি তুমি নেই।’’


এ হাদিস শরীফ থেকে এটা বুঝা গেল, রাসূল  পুরা দুনিয়ার সামনে দ্বীন ইসলামকে এমন সুন্দরভাবে বর্ণনা করেছেন যে, প্রত্যেক কিছুর উপর কুফর, শিরক এবং ইসলামের মধ্যে প্রার্থক্যটি পরিষ্কার হয়েছে। এ জন্যই তিনি ইরশাদ করেছেন যে, তোমাদের সম্পর্কে আমি এ আশংকা করিনা যে, আমার পরে তোমরা শিরকে লিপ্ত হবে।

আজকাল যে সব হাযারাত শিরক শিরক করে আওয়ায করে তাদের উচিত রাসূলে পাক (ﷺ)’র শপথযুক্ত বর্ণনাটি বারবার অধ্যায়ন করা। প্রিয় রাসূল (ﷺ) যেটার চিন্তা করে না সে বিষয়ে তোমাদের এতো চিন্তা কেন?

বস্তুত, এসব হাযারাত রাসূল (ﷺ)’র তাজিম আউলিয়াদের তা’যিম এবং আল্লাহর শা‘ঈরকেও শিরক বলে অথচ আল্লাহ তা‘আলা এদেরকে তাযিম করার নির্দেশ দিয়েছে। 


❏আ‘লা হযরত ইমামে আহলে সুন্নত মাওলানা শাহ আহমদ রেযা খাঁন বেরলভী (رحمة الله) এজন্যই বলেন-


شرك ٹهہر ے جس ميں تعظيم حبيب

اس برے  مذہب  پہ لعنت كيبئ


-‘যে মাযহাবে রাসূলের তা‘যিমকে শিরক সাব্যস্ত করে,

ঐ মন্দ (এ রকম অভিসপ্ত) মাযহাবের উপর লা‘নত বর্ষিত হোক।’

 
Top