মা হিসাবে মর্যাদা


ইসলামী নারী জাতিকে মা হিসাবে বিশেষ মর্যাদা দান করেছে। এমনকি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) সন্তানের সদাচরণ পাওয়ার ক্ষেত্রে পিতার উপর মাকে প্রাধান্য দিয়েছেন।


عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالَ رَجُلٌ: يَا رَسُولَ اللَّهِ مَنْ أَحَقُّ بِحُسْنِ صَحَابَتِي؟ قَالَ: أُمَّكَ . قَالَ: ثُمَّ مَنْ؟ قَالَ: أُمَّكَ . قَالَ: ثُمَّ مَنْ؟ قَالَ أُمَّكَ . قَالَ: ثُمَّ مَنْ؟ قَالَ: أَبُوكَ . وَفِي رِوَايَةٍ قَالَ: أُمَّكَ ثُمَّ أُمَّكَ ثُمَّ أُمَّكَ ثُمَّ أَبَاكَ ثمَّ أدناك أدناك 

হযরত হোরায়রা (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, জনৈক ব্যক্তি বললো, হে আল্লাহর রাসূল! আমার সদাচরণ পাওয়ার সর্বাপেক্ষা অধিকারী কে? উত্তরে তিনি বললেন, তোমার মা। লোকটি বললো, এরপর কে? তিনি বললেন, তোমার মা, লোকটি আবার জিজ্ঞাসা করলো এরপর কে? তিনি বললেন, তোমার মা। অন্য বর্ণনায় আছে- লোকটি পরপর প্রশ্নের উত্তরে তিনবার মায়ের কথা বলেছেন অতঃপর চতুর্থবার বলেছেন- তোমার পিতা। এরপর তোমার নিকটতম আত্মীয়-স্বজন। ৫১

৫১.ইমাম বুখারী ও মুসলিম র. সহীহ বুখারী ও মুসলিম শরীফ, সূত্র. মিশকাত,  পৃ. ৪১৮

 

উপরোক্ত হাদিসে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) মাকে পিতার উপর তিনগুণ বেশী মর্যাদা ও গুরুত্ব দিয়েছেন। পরপর তিনবার মায়ের কথা বলার পর চতুর্থবার পিতার কথা উল্লেখ করেছেন। সুতরাং নারীর মর্যাদা রক্ষায় রাসূলুল্লাহ (ﷺ) র ভূমিকার কথা ভুলে গেলে নারীদের জন্য হবে মহাভুল।


وَعَن معاويةَ بن جاهِمةُ أَنَّ جَاهِمَةَ جَاءَ إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ أَرَدْتُ أَنْ أَغْزُوَ وَقَدْ جِئْتُ أَسْتَشِيرُكَ. فَقَالَ: هَلْ لَكَ مِنْ أُمٍّ؟ قَالَ: نَعَمْ. قَالَ: فَالْزَمْهَا فَإِنَّ الْجَنَّةَ عِنْدَ رِجْلِهَا 

হযরত মুয়াবিয়া ইবনে জাহিমাহ (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত, জহিমা নবী করিম (ﷺ)র খেদমতে উপস্থিত হয়ে বললো- হে আল্লাহর রাসূল! আমি যুদ্ধ করার ইচ্ছা পোষণ করেছি এবং আপনার পরামর্শের জন্য আপনার নিকট এসেছি। তিনি বললেন, তোমার মা কি জীবিত আছেন? সে বললো, হ্যাঁ জীবিত আছেন। তখন তিনি বললেন, তাহলে তুমি তাঁর সেবা করো, কেননা মায়ের পায়ের নিকট হলো (সন্তানের) জান্নাত। ৫২

৫২.ইমাম আহমদ র. (২৪১ হি.) ইমাম নাসাঈ র. (৩০৩ হি.) ও ইমাম বায়হাকী  র. (৪৫৮হি.) সূত্র. মিশকাত; পৃ. ৪২১

 

হযরত আনাস (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত আছে-

 اَلْجَنَّةُ تَحْتَ اَقْدَامُ اَلْاُمَّهَات 

জান্নাত জননীর পদতলে। ৫৩

৫৩.হাশিয়ায়ে মিশকাত, পৃ. ৪২১, হাশিয়া নং-৪

 

উপরোক্ত হাদিস দু’টোতে সন্তানের বেহেশত জননীর পদতলে ঘোষণা করে নারী তথা মা জাতিকে এমন সম্মানিত করা হয়েছে যে, যে নারী ছিলো পুরুষের পদতলে তাকে তুলে আনা হয়েছে পুরুষের মাথার উপরে। তারপরও যদি কোন নারী ইসলামকে, মহানবী (ﷺ) কে দোষারোপ করে তাহলে সেটা হবে অত্যন্ত ঘৃণিত অকৃতজ্ঞতা ও চরম অন্যায়।


ইসলামে অমুসলিমের সাথে শর্তসাপেক্ষে ক্ষেত্রে বিশেষে সদাচার করার অনুমতি আছে। কুরআনে ইরশাদ হয়েছে-انما المشركون نجس  

মুশরিকরা নাপাক। এতদসত্ত্বেও মায়ের সাথে বিনাশর্তে সদাচরণ করার অনুমতি দিয়েছেন মহানবী

।عَنْ أَسْمَاءَ، قَالَتْ: قَدِمَتْ عَلَي أُمِّي وَهِيَ مُشْرِكَةٌ، فِي عَهْدِ قُرَيْشٍ فَاسْتَفْتَيْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقُلْتُ: إِنَّ أُمِّي قَدِمَتْ عَلَي وَهِيَ رَاغِبَةٌ؟ أَفَأَصِلُهَا؟ قَالَ: نَعَمْ، صِلِي أُمَّكِ 

হযরত আসমা বিনতে আবি বকর (رضي الله عنه) থেকে বর্নিত, তিনি বলেন, কুরাইশদের সাথে চুক্তিকালীন অর্থাৎ হুদাইবিয়ার সন্ধির সময় আমার মা আমার কাছে মুশরিকা অবস্থায় (মদীনায়) আগমন করলেন। তখন আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ)র কাছে জিজ্ঞাসা করলাম- হে আল্লাহর রাসূল! আমার মা আমার কাছে এসেছেন অথচ তিনি ইসলামের প্রতি অনাগ্রহী, এমতাবস্থায় আমি কি তাঁর সাথে সদাচরণ করবো? তিনি বললেন, হ্যাঁ, তুমি তাঁর সাথে সদাচরণ করো। ৫৪

৫৪.ইমাম বুখারী ও মুসলিম র. বুখারী ও মুসলিম শরীফ, সূত্র. মিশকাত; পৃ. ৪১৮


عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: " دَخَلْتُ الْجَنَّةَ فَسَمِعْتُ فِيهَا قِرَاءَةً فَقُلْتُ: مَنْ هَذَا؟ قَالُوا: حَارِثَةُ بْنُ النُّعْمَانِ كَذَلِكُمُ الْبِرُّ كَذَلِكُمُ الْبِرُّ. وَكَانَ أَبَرَّ النَّاسِ بِأُمِّهِ. 

হযরত আয়িশা (رضي الله عنه) থেকে বর্নিত,তিনি বলেন, রাসূলূল্লাহ (ﷺ)  ইরশাদ করেন, আমি (স্বপ্নে) বেহেশতে প্রবেশ করলাম এবং তথায় কুরআন তিলাওয়াত শুনতে পেলাম, তখন আমি জিজ্ঞাসা করলাম, এ ব্যক্তি কে? ফেরেশতারা বললেন, ইনি হারিসা ইবনে নু’মান। পূণ্যের প্রতিফল এরূপই, পূণ্যের প্রতিফল এরূপই। সে ছিল সকল মানুষের তুলনায় নিজের মায়ের সাথে সর্বাদিক সদাচরণকারী। ৫৫

৫৫.শরহুস সুন্নাহ ও ইমাম বায়হাকী র. (৪৫৮ হি.), শোয়াবুল ঈমান, সূত্র. মিশকাত; পৃ. ৪১৯

 

وَعَن ابْن عمر أَنَّ رَجُلًا أَتَى النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنِّي أَصَبْتُ ذَنْبًا عَظِيمًا فَهَلْ لِي مِنْ تَوْبَةٍ؟ قَالَ: هَلْ لَكَ مِنْ أُمٍّ؟ قَالَ: لَا. قَالَ: وَهَلْ لَكَ مِنْ خَالَةٍ؟ . قَالَ: نَعَمْ. قَالَ: فبرها .

হযরত ইবনে ওমর (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত,  এক ব্যক্তি নবী করিম (ﷺ)র দরবারে হাযির হয়ে বললো, হে আল্লাহর রাসূল! আমি একটি জঘন্য পাপ করেছি, আমার জন্য তওবার কোন সুযোগ আছে কিনা? তিনি বললেন, তোমার মা জীবিত আছেন? লোকটি বললো না। তিনি বললেন, তোমার কি কোন খালা আছে? সে বললো হ্যাঁ, আছে। তিনি বললেন, তবে তুমি তার সাথেসদাচরণ করো। ৫৬

৫৬.ইমাম তিরমিয়ী র. (২৭৯ হি.), সূত্র. মিশকাত; পৃ. ৪২০

 

উক্ত হাদিসে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) গুনাহ মাফের জন্য মায়ের সেবা আর মা জীবিত না থাকলে মা’র বোন খালার খেদমত করাকে তাওবা ঘোষণা করেছেন। এখানে পিতা কিংবা পিতার ভাই চাচা-জেঠার কথা বলা হয়নি বরং মা-খালার খেদমত করাকে গুনাহ মাফের উপলক্ষ্য ঘোষণা করে নারী জাতির মর্যাদা বৃদ্ধি করা হয়েছে।


হযরত মুগীরা (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন-

 إِنَّ اللهَ حَرَّمَ عَلَيْكُمْ عُقُوقَ الْأُمَّهَاتِ 

নিশ্চয় আল্লাহ তা‘আলা তোমাদের উপর মায়ের অবধ্যতাকে হারাম করেছেন। ৫৭

৫৭.বুখারী ও মুসলিম, সূত্র. মিশকাত; পৃ. ৪১৯

 

পিতা-মাতা উভয়ের অবাধ্য হওয়া সন্তানের জন্য নাজায়িয। কিন্তু এখানে কেবল মায়ের কথা স্বতন্ত্রভাবে উল্লেখ করার উদ্দেশ্য হলো মায়ের প্রতি অধিক গুরুত্বারোপ করা।


রাসূলুল্লাহ (ﷺ) একদা তাঁর দুধুমা হযরত হালিমা (رضي الله عنه)’র আগমনে তার সম্মানার্থে নিজের পরিধেয় চাদর বিছিয়ে দিয়েছিলেন এবং দুধুমা চাদরে বসেছিলেন। ৫৮

৫৮.ইমাম আবু দাউদ র. (২৭৫ হি.) আবু দাউদ শরীফ, সূত্র. মিশকাত, পৃ. ৪২০

 

উক্ত হাদিসের ব্যাখ্যায় মুল্লা আলী কারী (رحمة الله) মিরকাত গ্রন্থে বলেন, হযরত হালিমা (رضي الله عنه) হুনাইনের যুদ্ধের সময় রাসূলুল্লাহ (ﷺ)র নিকট এসেছিলেন। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তার সম্মানার্থে দাঁড়িয়ে গিয়েছিলেন এবং নিজের পরিধেয় চাদর মোবারক বিছিয়ে দিয়েছিলেন। অতঃপর তিনি তাতে বসেছিলেন।


অনুরূপ ঘটনা আবু লাহাবের দাসী সুআইবা যিনি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কে দুধ পান করায়েছিলেন তার সম্পর্কেও সংঘটিত হয়েছিল। ৫৯

৫৯.মিশকাত শরীফ, পৃ. ৪২০, টীকা নং-৫

 

যার সম্মানে কুল কায়েনাত দাঁড়িয়ে যায়, যাঁকে বসানোর জন্য সর্বোচ্চ মূল্যবান আসবাবপত্র উৎসর্গ করা হয়, যার কদমে ধন্য হয়েছিল খোদার আরশ তিনি কোন জন্মদানকারীনী মা নয় বরং দুধ পানকারীনী মায়ের সম্মানার্থে সাহাবায়ে কিরামের সামনে প্রকাশ্যে দাঁড়িয়ে গেলেন এবং যাঁর ব্যবহৃত কাপড়কে উম্মত তার্বারুক হিসাবে পাওয়ার জন্য উদগ্রীব হয়ে থাকতো, যার ব্যবহৃত বস্তুকে কবরে নাজাতের উসীলা মনে করতো, দুনিয়া-আখিরাতে বরকত ও সৌভাগ্যের সোপান মনে করতো তিনি তাঁর পরিধেয় চাদর মোবারক বিছিয়ে দিয়ে কিয়ামত পর্যন্ত নারী জাতির সম্মান সমুন্নত করেছেন। তাঁর এরূপ তা’যীম দেখে উপস্থিত কম বয়স্ক সাহাবীগণ বয়স্ক সাহাবীগণের নিকট জানতে চাইলেন যে, ইনি কে? ইনাকে এত সম্মান করার কারণ কি? উত্তরে তারা বলেন, ইনি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কে দুধপানকারীনী।


পিতা-মাতা উভয়ের দোয়া-বদদোয়া আল্লাহর দরবারেখুব দ্রুত কোন প্রতিবন্ধক ছাড়াই কবুল হয়ে যায়। তবুও বিভিন্ন ইসলামী নির্ভরযোগ্য গ্রন্থে মায়ের দোয়া-বদদোয়া সম্পর্কে বিশেষ বিশেষ ঘটনা বর্ণনা করা হয়েছে। বুখারী শরীফে বর্ণিত আছে যে, বনী ইসরাইলের জুরাইজ নামক এক সাধক ব্যক্তি মায়ের বদ দোয়ার কারণে দুনিয়াতে অপদস্ত হতে হয়েছিল। ৬০

৬০.বুখারী শরীফ, পারা-৯, ৩৩৭, হাদিস নং-২৩২০


ফকীহ আবুল লাইস সমরকন্দি (رحمة الله) তান্বীহুল গাফিলীন কিতাবের ৭৭ পৃষ্ঠায় লিখেছেন যে, মায়ের অসন্তোষের কারণে আলকামা নামক এক ব্যক্তির মৃত্যুকালীন ঈমান নসীব হচ্ছিল না। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কৌশল করে মাকে সন্তুষ্টি করলে এবং মা ছেলেকে ক্ষমা করে দেয়ার পরে ছেলের মুখে কালিমা উচ্চারিত হলো আর ঈমান নিয়ে দুনিয়া থেকে চলে যাওয়ার সুযোগ হয়েছিল।


এতক্ষণ আমরা আলোচনা করেছি কেবল মায়ের মর্যাদা ও গুরুত্ব সম্পর্কে। তবে পবিত্র কুরআন ও হাদিসে বহুস্থানে পিতা-মাতার মর্যাদা ও সম্মানের কথা একত্রে বর্ণিত হয়েছে। যেমন পবিত্র কুরআনের কোন আয়াতে আল্লাহর ইবাদতের সাথে পিতা-মাতার আনুগত্যের কথা তাদের সেবা-যত্নের কথা, কোন আয়াতে পিতা-মাতার শোকর আদায় করার কথা উল্লেখিত হয়েছে। এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে চাইলে পবিত্র কুরআনের সূরা আনআম, আয়াত; ১৫১, সূরা নিসা, আয়াত; ৩৬, সূরা লোকমান, আয়াত; ১৪ ও সূরা বনী ইস্রাঈল, আয়াত; ২৩ দেখুন।


হাদিস শরীফেও রাসূলুল্লাহ (ﷺ) পিতা-মাতার সন্তুষ্টিতে আল্লাহর সন্তুষ্টি পিতা-মাতাকে জান্নাতের দরজা, পিতা-মাতার অবাধ্যতাকে কবীরা গুনাহ ও অমার্জনীয় অপরাধ, পিতা-মাতার চেহারা দেখা মকবুল হজ্বের সাওয়াব ইত্যাদি বর্ণনা করে পিতা-মাতার গুরুত্ব ও মর্যাদা তুলে ধরেছেন।


মূলত ইসলামের ন্যায় অন্য কোন ধর্মে পিতা-মাতার প্রতি এতো গুরুত্বারোপ করতে দেখা যায়না। কারণ এই পৃথিবীতে সন্তানের অস্তিত্ব মূলত মাতা-পিতারই অবদান। সন্তানের জন্য পিতা-মাতার ত্যাগ-তিতিক্ষা, শ্রম-সাধনা ও স্নেহ-মমতা বাদ দিলেও সন্তানের অস্তিত্বের জন্যই পিতা-মাতা এসব মর্যাদার অধিকারী সাব্যস্ত হয়। এ কারণেই ইসলাম ব্যতিত অন্য ধর্মীয় সমাজে পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের এতো ভক্তি-শ্রদ্ধা ও সেবা-যত্ন করতে দেখা যায় না। পিতা-মাতা, সন্তান-সন্তুতি, দাদা-দাদীসহ সব মিলে মিশে একই সংসারে একই ঘরে শান্তিতে বসবাস করার দৃশ্য পৃথিবীর বহু তথাকথিত সভ্য সমাজে বিরল। পশ্চিমা সমাজে দেখা যায় সন্তান প্রাপ্ত বয়স্ক হয়ে গেলে পিতা-মাতার সাথে কোন সম্পর্ক থাকেনা। সন্তান তার পূর্ণ একক অধিকার নিয়ে পৃথকভাবে বসবাস করে, ইচ্ছে মতো পছন্দের মেয়ের সাথে ঘুরা- ফেরা করে। পিতা- মাতা বৃদ্ধাবস্থায় পুত্র ও পুত্রবধু থেকে সেবা-যত্ন পাওয়ার কল্পনাও করতে পারেনা তাদের সমাজে। বরং বৃদ্ধাকালীন অসহায় অবস্থায় আপনকে পর করে পরকে আপন করে বৃদ্ধাশ্রমে মানবেতর জীবন-যাপন করতে হয়। আর এটাই তাদের সমাজের স্বাভাবিক ব্যাপার। এটাকে তারা অমানবিক কিংবা দোষনীয়ও মনে করেনা। অথচ ইসলামী সমাজে ছেলে পিতা-মাতাকে বৃদ্ধাবস্থায় সেবা-যত্ন না করলে কিংবা পুত্রবধু শ্বশুর-শ্বাশুরীর সেবা-যত্ন না করলে নিন্দিত, বদনামী ও গুনাহের ভাগী হয়। অথচ ওই সব সভ্য সমাজে তা অকল্পনীয়।

 
Top