স্বামীর উপর স্ত্রীর অধিকার


এতক্ষণ যাবত আমরা স্ত্রীর উপর স্বামীর অধিকার নিয়ে আলোচনা করেছি। এখন স্বামীর উপর স্ত্রীর কী কী অধিকার রয়েছে সে বিষয়ে আলোচনা করবো। ইসলামে স্বামীর প্রতি স্ত্রীর যেরূপ দায়িত্ব ও কর্তব্য রয়েছে তেমনি স্ত্রীর প্রতিও স্বামীর দায়িত্ব ও কর্তব্য কোন অংশে কম নয়। অর্থাৎ স্ত্রীর উপর যেমন স্বামীর অধিকার স্বীকৃত অনুরূপ স্বামীর উপরও স্ত্রীর অধিকার স্বীকৃত। নিম্নে আমরা স্ত্রীর প্রতি স্বামীর দায়িত্ব সম্পর্কে আলোচনা করব। 



১. মাহর আদায়


স্ত্রীর প্রতি স্বামীর অনেক দায়িত্ব ও কর্তব্যের মধ্যে প্রথম ও প্রধান কর্তব্য হলো স্বামী স্ত্রীর জন্য ধার্য্যকৃত মাহর আদায় করা। পূর্বেও বলা হয়েছে মাহর স্ত্রীর হক। স্ত্রীই কেবল মাহরের মালিক। আল্লাহ তা’আলা ইরশাদ করেন, 


وَآَتُوا النِّسَاءَ صَدُقَاتِهِنَّ نِحْلَةً

আর তোমরা (স্বামীরা) স্ত্রীদের মাহর স্বতঃপ্রবৃত্ত হয়ে প্রদান কর। ১৪০

১৪০.সূরা নিসা; আয়াত ৪


মধ্যপ্রাচ্যে বিবাহের সাথে সাথে স্ত্রীকে মাহর আদায় করে দেওয়ার নিয়ম প্রচলন থাকলেও আমাদের দেশে তা সম্পূর্ণ বিপরীত। এদেশে অনেক স্বামীরা জানেও না যে তার উপর মাহর আদায় ওয়াজিব। আবার অনেকে জানলেও সেদিকে ভ্রুক্ষেপ করে না। শুধু স্ত্রীকে তালাক দিলেই অনেক বিচার আচারের পর বহু কাট-চাট করে নামেমাত্র কিছু দিয়ে ঝামেলা মুক্ত হয়। এদেশে অনেক মহিলারাও হয়তো জানেও না যে , মাহর তার হক ও প্রাপ্য। ফলে তারা শত নির্যাতিত হলেও স্বামীকে মাহর আদায়ের কথা মুখে উচ্চারণ করে না। বরং সম্পর্ক নষ্ট হয়ে যাওয়ার ভয়ে স্ত্রীর অভিভাবকরা অনেক দেন দরবার করে মাহর আদায় করে নেয়। ইসলামীব্যবস্থায় সভ্য সমাজে এটা মোটেও কাম্য ও উচিত নয়। 


রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন-

 أيما رجل تزوج إمرأة على ما قل من المهر أو أكثر ليس فى نفسه أن يؤدى إليها حقها خدعها فمات و لم يؤد إليها حقها لقى الله يوم القيامة و هو زان 

-যদি কোন ব্যক্তি কোন মেয়েকে কম বা বেশী মাহর নির্ণয় করে বিয়ে করে, যদি ঐ ব্যক্তির অন্তরে মাহর আদায় করার ইচ্ছা না থাকে তাহলে সে নিজ স্ত্রীর সাথে প্রতারণা করলো। যদি মাহর অনাদায় অবস্থায় সে মারা যায় তাহলে কিয়ামত দিবসে সে যিনাকারী হিসেবে উঠবে। ১৪১

১৪১.তিরমিযী, নাসাঈ, আবু দাঊদ ও ইবনে মাজাহ

 
Top