• হযরত আবু বকর (رضي الله عنه), হযরত উমর (رضي الله عنه), হযরত উসমান (رضي الله عنه) ও হযরত আলী (رضي الله عنه)



❏ হাদিস ২০:


আবু নুয়াইম, আল-বাযযার, আবু ইয়ালা ও ইবনে আবি খায়সামা হযরত আনাস (رضي الله عنه) থেকে বর্ণনা করেন, যিনি বলেন:

يَا أَنَسُ، قُمْ فَافْتَحْ لَهُ، وَبَشِّرْهُ بِالجَنَّةِ، وَبَشِّرْهُ بِالخِلاَفَةِ مِنْ بَعْدِي، قُلْتُ: يَا رَسُولَ اللهِ، أُعْلِمُهُ؟ قَالَ: أَعْلِمْهُ، فَإِذَا أَبُو بَكْرٍ، قُلْتُ: أَبْشِرْ بِالجَنَّةِ، وَأَبْشِرْ بِالخِلاَفَةِ مِنْ بَعْدِ رَسُولِ اللهِ صَلَّىَ اَللهُ عَلَيهِ وسَلَّمَ، ثُمَّ جَاءَ آتٍ فَدَقَّ فَجَاءَ آتٍ فَدَقَّ البَابَ، فَقَالَ:فَقَالَ: يَا أَنَسُ قُمْ فَافْتَحْ لَهُ، وَبَشِّرْهُ بِالجَنَّةِ، وَبَشِّرْهُ بِالخِلاَفَةِ مِنْ بَعْدِ أَبِي بَكْرٍ، قَالَ: قُلْتُ يَا رَسُولَ اللهِ أُعْلِمُهُ؟ قَالَ: أَعْلِمْهُ، قَالَ: فَخَرَجْتُ فَإِذَا عُمَرُ، قَالَ: قُلْتُ لَهُ: أَبْشِرْ بِالجَنَّةِ، وَأَبْشِرْ بِالخِلاَفَةِ مِنْ بَعْدِ أَبِي بَكْرٍ، قَالَ: ثُمَّ جَاءَ آتٍ فَدَقَّ البَابَ، فَقَالَ: يَا أَنَسُ، قُمْ فَافْتَحْ لَهُ، وَبَشِّرْهُ بِالجَنَّةِ، وَبَشِّرْهُ بِالخِلاَفَةِ مِنْ بَعْدِ عُمَرَ، وَأَنَّهُ مَقْتُولٌ، قَالَ: فَخَرَجْتُ فَإِذَا عُثْمَانُ، قَالَ: قُلْتُ لَهُ: أَبْشِرْ بِالجَنَّةِ، وَبِالخِلاَفَةِ مِنْ بَعْدِ عُمَرَ، وَأَنَّكَ مَقْتُولٌ..

আমি এক ঘের দেয়া বাগানে মহানবী (ﷺ) এর সাহচর্যে ছিলাম। এমন সময় কেউ একজন এসে ফটকে টোকা দেন। হুযূর পাক (ﷺ) বললেন, ‘আনাস, ওনাকে প্রবেশ করতে দাও; তাঁকে বেহেশতের সুসংবাদ দাও এবং বলো যে তিনি আমার উত্তরাধিকারী হবেন।’ আর দেখো, ইনি হযরত আবু বকর (رضي الله عنه)। অতঃপর আরেক ব্যক্তি এসে দরজায় টোকা দিলে রাসূলে আকরাম (ﷺ) বলেন, ’এনাকেও প্রবেশ করতে দাও; তাঁকে বেহেশতের সুসংবাদ দাও এবং বলো যে আবু বকরের পরে তিনি-ই হবেন আমার উত্তরাধিকারী।’ আর দেখো, ইনি হযরত উমর (رضي الله عنه)। এর পর আরও একজন এসে দরজায় কড়া নাড়েন। এবার নবী করীম (ﷺ) বল্লেন, ‘একেও প্রবেশ করতে দাও; তাকে বেহেশতের সুসংবাদ দাও এবং বলো যে সে উমরের পরে আমার উত্তরাধিকারী হবে; তাকে আরও জানাবে যে সে শহীদ হবে।’ আর দেখো, ইনি হযরত উসমান (رضي الله عنه)।”[২৭]

🔺২৭. [নোট-৫: হযরত আনাস (رضي الله عنه) থেকে আবু এয়ালা তাঁর মু’জাম’ কিতাবে (১:১৭৮), ইবনে আবি আসিম স্বরচিত ‘আস-সুন্নাহ’ পুস্তকে (২:৫৫৭), ইবনে আদি নিজ ‘আল-কামিল’ গ্রন্থে’ (৪:৯১); আর আল-খতীব তাঁর ‘তারিখে বাগদাদ’ বইয়ে (৯:৩৩৯), আল-বাযযার ও ইবনে আসাকির খুব দুর্বল সনদে এটি বর্ণনা করেছেন, কেননা, ইবনে হাজর হায়তামী (رحمة الله) এর এক রাবী বা বর্ণনাকারীকে ‘মিথ্যাবাদী’ বলেছেন। তবে এই রওয়ায়াত স্বতন্ত্রভাবে সমর্থিত হয়েছে।]


❏ হাদিস ২১:


হযরত সাফিনা (رضي الله عنه) থেকে আল-হাকিম সহীহ হিসেবে ঘোষণা করে বর্ণনা করেন, এবং আল-বায়হাকীও তা রওয়ায়াত করেন যে তিনি (সাফিনা) বলেন:

لَمَّا بَنَى رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الْمَسْجِدَ جَاءُ أَبُو بَكْرٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ بِحَجَرٍ فَوَضَعَهُ ، ثُمَّ جَاءَ عُمَرُ بِحَجَرٍ فَوَضَعَهُ ، ثُمَّ جَاءَ عُثْمَانُ بِحَجَرٍ فَوَضَعَهُ ، فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: ” هَؤُلَاءِ وُلَاةُ الْأَمْرِ مِنْ بَعْدِي هَذَا “.

মহানবী (ﷺ) কর্তৃক {মদীনার} মসজিদ নির্মাণকালে হযরত আবু বকর (رضي الله عنه) একটি পাথর এনে সেখানে নামিয়ে রাখেন; অতঃপর হযরত উমর (رضي الله عنه)রও একটি পাথর এনে রাখেন; এরপর হযরত উসমান (رضي الله عنه) আরেকটি পাথর এনে সেখানে নামিয়ে রাখেন। এমতাবস্থায় রাসূলে পাক (ﷺ) এরশাদ ফরমান: ‘এঁরাই আমার (বেসালের) পরে শাসন করবেন’।”[২৮]

🔺২৮. [নোট-৬: হযরত সাফিনা (رضي الله عنه) থেকে আল-হাকিম (৩:১৩=১৯৯০ সংস্করণের ৩:১৪), নুয়াইম ইবনে হাম্মাদের ‘ফিতান’ পুস্তকে, আল-বায়হাকী নিজ ‘দালাইল’ গ্রন্থে’ এবং ইবনে আসাকিরও এটি বর্ণনা করেছেন; হযরত আয়েশা (رضي الله عنه) থেকেও বর্ণনা করেন আল-হাকিম (৩:৯৬-৯৭=১৯৯০ সংস্করণের ৩:১০৩)।] 

এই বর্ণনাতে তিনজন খলীফার উত্তরাধিকারের ক্রমের প্রতি ইশারা আছে আল্লাহ তাঁদের প্রতি রাজি হোন! বাস্তবিকই অন্যান্য কয়েকটি বর্ণনায় স্পষ্টভাবে রাসূলুল্লাহ (ﷺ)কে এ ব্যাপারে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল এবং তিনি উত্তর দিয়েছিলেন, “এঁরাই হলেন আমার (বেসালের) পরে উত্তরাধিকারী।” আরেকটি রওয়ায়াতে এসেছে এভাবে, “আমার (বেসালের) পরে এঁরাই হবেন শাসক।” ইমাম আবু যুরা’য়া (আল-ইরাকী) বলেন, “এর সনদ ক্ষতি থেকে মুক্ত, আর আল-হাকিম তাঁর ‘মুস্তাদরাক’ কিতাবে এটি বর্ণনা করেছেন এবং এটিকে সহীহ বলেছেন।”

[নোট-৪: তবে আল-বুখারী এই বর্ণনাকে ‘মুনকার’ (ব্যবহারের অযোগ্য) বলেছেন; দেখুন – ইবনে আদি কৃত ‘আল-কামিল’ (২:৪৪০); এ ছাড়াও ‘মুস্তাদরাক’ কিতাবের হাশিয়া (টীকা)-এ আল-যাহাবী এটিকে জাল হিসেবে বিবেচনা করেন; ইবনে কাসির এটিকে ‘গরিব জিদ্দান’ (ভীষণ দুর্বল) হিসেবে চিহ্নিত করেন নিজ ‘বেদায়া’ পুস্তকে। আহলে সুন্নাত তথা সুন্নীদের দৃষ্টিভঙ্গি হলো, মহানবী (ﷺ) হযরত আবু বকর (رضي الله عنه)-কে উত্তরাধিকারী নিয়োগ করেন নি সত্য, তবে তিনি তাঁকে নামাযে ইমামতী করার নির্দেশ দিয়ে এদিকে ইঙ্গিত করেছেন।]


❏ হাদিস ২২:


আল-বায়হাকী ও আবু নুয়াইম হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর ইবনে আল-’আস (رضي الله عنه) থেকে বর্ণনা করেন, যিনি বলেন:

سَمِعْتُ عَبْدَ اللهِ بْنَ عَمْرٍو يَقُولُ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: سَيَكُونُ فِيكُمُ اثْنَا عَشَرَ خَلِيفَةً: أَبُو بَكْرٍ الصِّدِّيقُ لَا يَلْبَثُ خَلْفِي إِلَّا قَلِيلًا وَصَاحِبُ رَحَى دَارِ الْعَرَبِ يَعِيشُ حَمِيدًا وَيَمُوتُ شَهِيدًا فقال رجل: يارَسُولَ اللهِ! وَمَنْ هُوَ؟ قَالَ: عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ! ثُمَّ الْتَفَتَ إِلَى عُثْمَانَ فَقَالَ: وَأَنْتَ يَسْأَلُكَ النَّاسُ أَنْ تَخْلَعَ قَمِيصًا كَسَاكَهُ اللهُ- عَزَّ وَجَلَّ. وَالَّذِي بَعَثَنِي بِالْحَقِّ لَئِنْ خَلَعْتَهُ لَا تَدْخُلُ الْجَنَّةَ حَتَّى يَدْخُلَ الْجَمَلُ فِي سَمِّ الْخَيَّاطِ.

আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ)কে বলতে শুনেছি – ‘তোমাদের মধ্যে বারো জন খলীফা হবেন। আবু বকর সিদ্দিক আমার (বেসালের) পরে বেশি দিন (শাসনে) থাকবেন না, অল্প সময় থাকবেন; কিন্তু আরবদের গুরু নিষ্কলুষ জীবন যাপন করবেন এবং শাহাদাত বরণ করবেন।’ এমতাবস্থায় কেউ একজন জিজ্ঞেস করেন, ‘এয়া রাসূলাল্লাহ (ﷺ)! তিনি কে?’ মহানবী (ﷺ) জবাব দেন, ‘উমর ইবনে খাত্তাব।’ অতঃপর তিনি হযরত উসমান (رضي الله عنه)র দিকে ফিরে বলেন, ‘আর তোমার ক্ষেত্রে, তারা (মোনাফেকরা) বলবে তোমার ওই জামাটি ছুড়ে ফেলে দিতে যেটা আল্লাহ তা’লা তোমার কাছে আমানত রেখেছেন। সেই মহান সত্তার শপথ যিনি আমাকে সত্যসহ পাঠিয়েছেন! অবশ্যঅবশ্যই তুমি তা ছুড়ে ফেল্লে বেহেশতে প্রবেশ করতে পারবে না, যতোক্ষণ না সূঁচের ছিদ্র দিয়ে উট পার হতে পারে’।”[২৯]

🔺২৯.[নোট-৮: এটা বর্ণনা করেছেন হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর ইবনে আস (رضي الله عنه) হতে আল-বায়হাকী এবং আত্ তাবারানী নিজ ‘আল-আওসাত’ (৮:৩১৯ #৮৭৪৯) ও ‘আল-কবীর’ (১:৫৪ #১২, ১:৯০ #১৪২) কিতাবগুলোতে। দেখুন – আল-হায়তামী (৫:১৭৮); এ ছাড়া ভিন্ন এসনাদে (বর্ণনানুক্রমে) লিপিবদ্ধ হয়েছে ‘আল-আহাদ ওয়াল মাসানী’ পুস্তকে (১:৯৬ #৬৭) যা’তে হযরত উসমান (رضي الله عنه)র উল্লেখ নেই; একই ভাবে লেখা আছে ইবনে আবি আ’সিমের ‘আল-সুন্নাহ’ গ্রন্থে’ (২:৫৫৮); ‘আবু বকর সিদ্দিক আমার (বেসালের) পরে বেশি দিন (শাসনে) থাকবেন না, অল্প সময় থাকবেন’, এই অংশটিসহ ‘আল-আহাদ ওয়াল মাসানী’ পুস্তকে (১:৭৩-৭৪ #১৩), দেখুন – ইবনে আবি আসিম (২:৫৪৮), ইবনে আল-জাওযী নিজ ‘সিফাতুস্ সাফওয়া’ গ্রন্থে’ (১:২৩৫-২৩৬), আর তাঁর কাছ থেকে আল-মুহিব্বু আত্ তাবারী ইমাম আয্ যুহরীর বরাতে মুরসাল হিসেবে তাঁর ‘আল-রিয়াদ আল-নাদিরা’ কিতাবে (১:৪০৮ #৩২৯)। আয্ যাহাবী এটাকে ‘সম্পূর্ণ ত্রুটিযুক্ত’ (ওয়াহিন) বলেছেন তাঁর ’সিয়ার’ গ্রন্থে’ (৯:১৩৩=আল্ আরনাওত সংস্করণের ১০:৪১১) এবং ‘বাতিল’ (শূন্য) বলেছেন নিজ ‘মিযান’ পুস্তকে (৪:৪৪৩), দেখুন – ইবনে আদি কৃত ‘কামিল’ (৪:২০৭), ইবনে হিব্বান প্রণীত ‘আল-মাজরুহিন’ (২:৪২), এবং ইবনে আল-কায়সারানী রচিত ‘তাযকিরাত আল-মাওদু’আত’ (#১০৩২)। শুধু নিচের বর্ণনাটি সহীহ যা’তে বলা হয়েছে: “ওহে উসমান! আল্লাহ তা’লা হয়তো তোমাকে একটি জামা আমানতস্বরূপ দিতে পারেন। মোনাফেকরা সেটা অপসারণ করতে বল্লে তা সরাবে না।” হযূর পাক (ﷺ) তিনবার এ কথা বলেছিলেন। বিশুদ্ধ রওয়ায়াতে হযরত আয়েশা রাদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা থেকে এই হাদীস লিপিবদ্ধ করেছেন আত্ তিরমিযী (হাসান গরিব), ইবনে হিব্বান, ইমাম আহমদ, ইবনে মাজাহ ও আল-হাকিম।]


❏ হাদিস ২৩:


ইবনে আসাকির হযরত আনাস (رضي الله عنه) থেকে বর্ণনা করেন, যিনি বলেন:

عَنْ أَنَسٍ بْنُ مَالِكٍ قَالَ وَجَّهْنِيْ وَفْدَ بَنِيْ الْمُصْطَلِقِ إِلَىَ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّىَ اَللهُ عَلَيهِ وسَلَّمَ فَقَالُوْا سَلْهُ إِنْ جِئْنَا فِيْ الْعَامِ الْمُقْبِلِ فَلَمْ نَجِدْكَ إلى من ندفع صدقاتنا قال فقلت له فقال قل لهم يدفعوها إلى أبي بكر قال فقلت لهم فقالوا قل له فإن لم نجد أبا بكر قال فقلت له  فقال قل لهم ليدفعوها إلى عمر قال فقلت لهم قال قل له فإن لم نجد عمر قال فقلت له قال قل لهم  ادفعوها إلى عثمان وتبا لكم يوم يقتل عثمان..


বনু মোস্তালিক গোত্রের প্রতিনিধিবর্গ আমাকে অনুরোধ করে যেন আমি মহানবী (ﷺ)-এর খেদমতে এই মর্মে আর্জি পেশ করি যে আগামী বছর তারা হুযূর (ﷺ)-এর সান্নিধ্যে এসে যদি তাঁকে না পায়, তবে তারা বাধ্যতামূলক যে সদকাহ দিতে হয় তা কার কাছে পেশ করবে। আমি তাদের এই সওয়াল রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর কাছে উপস্থাপন করি। তিনি প্রত্যুত্তর দেন, ‘আবু বকরের কাছে তা জমা দিতে বলবে।’ আমি এ কথা ওই গোত্রের প্রতিনিধিদের কাছে জানালে তারা বলে, ‘যদি আবু বকর (رضي الله عنه)কেও না পাই?’ এমতাবস্থায় আমি আবারও বিশ্বনবী (ﷺ)-এর খেদমতে এই প্রশ্নটি উত্থাপন করি। তিনি এবার বলেন, ‘তাহলে উমরের কাছে তা জমা দিতে বলো।’ গোত্র প্রতিনিধিদল আবার প্রশ্ন করে, ‘যদি তাঁকেও আমরা না পাই?’ অতঃপর রাসূলে আকরাম (ﷺ) এরশাদ ফরমান, ‘উসমানের কাছে তা জমা দিতে বলো; আর তাকে তারা যেদিন শহীদ করবে, সেদিন যেন তারা ধ্বংস হয়ে যায়’!” [৩০]

🔺৩০. [নোট-৯: এটি বর্ণনা করেন হযরত আনাস (رضي الله عنه) থেকে আবু নুয়াইম নিজ ‘হিলইয়াত আল-আউলিয়া’ পুস্তকে (১৯৮৫ সালের সংস্করণের ৮:৩৫৮) এবং ইবনে আসাকির স্বরচিত ‘তারিখে দামেশ্ক’ কিতাবে (৩৯:১৭৭)। দেখুন – ‘কানযুল উম্মাল’ (#৩৬৩৩৩)।]


❏ হাদিস ২৪:


বিশুদ্ধ বর্ণনায় আবু এয়ালা হযরত সাহল (رضي الله عنه) থেকে লিপিবদ্ধ করেন

أَنَّ أُحُدًا ارْتَجَّ وَعَلَيْهِ رَسُولُ اللهِ صَلى الله عَلَيه وسَلمَ وَأَبُو بَكْرٍ وَعُمَرُ وَعُثْمَانُ، فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلى الله عَلَيه وسَلمَ: اثْبُتْ أُحُدُ، فَمَا عَلَيْكَ إِلاَّ نَبِيٌّ، أَوْ صِدِّيقٌ، أَوْ شَهِيدَانِ..

যে উহুদ পাহাড়ে যখন রাসূলে খোদা (ﷺ), হযরত আবু বকর (رضي الله عنه), হযরত উমর (رضي الله عنه) ও হযরত উসমান (رضي الله عنه) চড়েছিলেন, তখন তা কেঁপে উঠেছিল, যার পরিপ্রেক্ষিতে মহানবী (ﷺ) এরশাদ ফরমান: “সুদৃঢ় থাকো, ওহে ওহুদ পাহাড়! তোমাতে আর কেউই চড়ে নি শুধু একজন নবী (ﷺ), একজন সিদ্দিক ও দুইজন শহীদ ছাড়া!” এ ঘটনার পরে হযরত উমর (رضي الله عنه) ও হযরত উসমান (رضي الله عنه) শহীদ হন এবং হযরত আবু বকর সিদ্দিক (رضي الله عنه) স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় বেসালপ্রাপ্ত হন।[৩১]

🔺৩১. [নোট-১০: হযরত আনাস (رضي الله عنه) হতে আল-বুখারী, আত্ তিরমিযী (হাসান সহীহ), আবু দাউদ, আন্ নাসায়ী ও ইমাম আহমদ।]


❏ হাদিস ২৫:


ইমাম বুখারী ও মুসলিম হযরত আবু মূসা আশ’আরী (رضي الله عنه) থেকে বর্ণনা করেন

فَإِذَا هُوَ قَدْ جَلَسَ عَلَى بِئْرِ أَرِيسٍ وَتَوَسَّطَ قُفَّهَا، وَكَشَفَ عَنْ سَاقَيْهِ، وَدَلَّاهُمَا فِي الْبِئْرِ، قَالَ: فَسَلَّمْتُ عَلَيْهِ، ثُمَّ انْصَرَفْتُ فَجَلَسْتُ عِنْدَ الْبَابِ، فَقُلْتُ: لَأَكُونَنَّ بَوَّابَ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الْيَوْمَ، فَجَاءَ أَبُو بَكْرٍ فَدَفَعَ الْبَابَ، فَقُلْتُ: مَنْ هَذَا؟ فَقَالَ أَبُو بَكْرٍ: فَقُلْتُ: عَلَى رِسْلِكَ، قَالَ: ثُمَّ ذَهَبْتُ فَقُلْتُ: يَا رَسُولَ اللهِ هَذَا أَبُو بَكْرٍ يَسْتَأْذِنُ، فَقَالَ: ائْذَنْ لَهُ، وَبَشِّرْهُ بِالْجَنَّةِ قَالَ فَأَقْبَلْتُ حَتَّى قُلْتُ: لِأَبِي بَكْرٍ ادْخُلْ، وَرَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُبَشِّرُكَ بِالْجَنَّةِ، قَالَ: فَدَخَلَ أَبُو بَكْرٍ، فَجَلَسَ عَنْ يَمِينِ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، مَعَهُ فِي الْقُفِّ، وَدَلَّى رِجْلَيْهِ فِي الْبِئْرِ، كَمَا صَنَعَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَكَشَفَ عَنْ سَاقَيْهِ، ثُمَّ رَجَعْتُ فَجَلَسْتُ، وَقَدْ تَرَكْتُ أَخِي يَتَوَضَّأُ وَيَلْحَقُنِي، فَقُلْتُ: إِنْ يُرِدِ اللهُ بِفُلَانٍ – يُرِيدُ أَخَاهُ – خَيْرًا يَأْتِ بِهِ، فَإِذَا إِنْسَانٌ يُحَرِّكُ الْبَابَ، فَقُلْتُ: مَنْ هَذَا؟ فَقَالَ: عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ فَقُلْتُ: عَلَى رِسْلِكَ، ثُمَّ جِئْتُ إِلَى رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَسَلَّمْتُ عَلَيْهِ وَقُلْتُ: هَذَا عُمَرُ يَسْتَأْذِنُ، فَقَالَ: ্রائْذَنْ لَهُ وَبَشِّرْهُ بِالْجَنَّةِগ্ধ فَجِئْتُ عُمَرَ فَقُلْتُ: أَذِنَ وَيُبَشِّرُكَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، بِالْجَنَّةِ، قَالَ فَدَخَلَ فَجَلَسَ مَعَ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي الْقُفِّ، عَنْ يَسَارِهِ، وَدَلَّى رِجْلَيْهِ فِي الْبِئْرِ، ثُمَّ رَجَعْتُ فَجَلَسْتُ فَقُلْتُ: إِنْ يُرِدِ اللهُ بِفُلَانٍ خَيْرًا – يَعْنِي أَخَاهُ – يَأْتِ بِهِ، فَجَاءَ إِنْسَانٌ فَحَرَّكَ الْبَابَ، فَقُلْتُ: مَنْ هَذَا؟ فَقَالَ: عُثْمَانُ بْنُ عَفَّانَ فَقُلْتُ: عَلَى رِسْلِكَ، قَالَ وَجِئْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَأَخْبَرْتُهُ، فَقَالَ: ্রائْذَنْ لَهُ وَبَشِّرْهُ بِالْجَنَّةِ، مَعَ بَلْوَى تُصِيبُهُগ্ধ قَالَ فَجِئْتُ فَقُلْتُ: ادْخُلْ، وَيُبَشِّرُكَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِالْجَنَّةِ مَعَ بَلْوَى تُصِيبُكَ، قَالَ فَدَخَلَ فَوَجَدَ الْقُفَّ قَدْ مُلِئَ، فَجَلَسَ وِجَاهَهُمْ مِنَ الشِّقِّ الْآخَرِ. قَالَ شَرِيكٌ: فَقَالَ سَعِيدُ بْنُ الْمُسَيِّبِ: فَأَوَّلْتُهَا قُبُورَهُمْ.

যে নবী করীম (ﷺ) আরিস কুয়োর (বাগানের) অভ্যন্তরে অবস্থান করছিলেন এবং কুয়োর প্রস্তরনির্মিত সীমায় বসেছিলেন; তাঁর পরণের জামা পায়ের গোড়ালির ওপরে ওঠানো ছিল। “আমি (মূসা আশআরী) নিজ মনে বললাম, আজ আমি-ই হবো মহানবী (ﷺ) এর দরজা রক্ষক। এমতাবস্থায় হযরত আবু বকর (رضي الله عنه) ওখানে উপস্থিত হলে আমি তাঁকে ‘অপেক্ষা করুন’ বলে হুযূর পূর নূর (ﷺ)কে জানালাম, ‘হযরত আবু বকর (رضي الله عنه) প্রবেশের অনুমতি চাইছেন।’ তিনি উত্তরে বললেন, ‘তাঁকে (প্রবেশের) অনুমতি ও বেহেশতের সুসংবাদ দাও।’ অতঃপর হযরত আবু বকর (رضي الله عنه) (বাগানে) প্রবেশ করলেন এবং রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর পাশে গিয়ে কুয়োর ধারে বসে পা দুটো ঝুলিয়ে দিলেন। এরপর হযরত উমর (رضي الله عنه) ওইখানে এলেন এবং আমি আবারো আরয করলাম, ‘এবার হযরত উমর (رضي الله عنه) প্রবেশের অনুমতি চাচ্ছেন।’ রাসূলে খোদা (ﷺ) বলেন, ‘তাঁকেও অনুমতি ও বেহেশতের খোশ-খবরী দাও।’ ফলে তিনিও প্রবেশ করে মহানবী (ﷺ) ও হযরত আবু বকর (رضي الله عنه)র পাশে কুয়োর ধারে গিয়ে বসলেন এবং পা ঝুলিয়ে দিলেন। এবার এলেন হযরত উসমান (رضي الله عنه) যার পরিপ্রেক্ষিতে আমি আবার আরয করলাম, ‘হযরত উসমান (رضي الله عنه) (প্রবেশের) অনুমতি চাইছেন।’ মহানবী (ﷺ) উত্তর দিলেন, ‘তাকে অনুমতি দাও এবং বলো যে একটি পরীক্ষাশেষে তার জন্যে বেহেশতের সুসংবাদ রয়েছে।’ হযরত উসমান প্রবেশ করে কুয়োর ধারে তাঁদের পাশে বসার কোনো জায়গা না পেয়ে ওই কুয়োর বিপরীত কিনারে গিয়ে বসলেন এবং পা ঝুলিয়ে দিলেন।” সাঈদ ইবনে মুসাইয়েব (رحمة الله) বলেন, “আমি এই ঘটনায় তাঁদের রওযা শরীফগুলোর একটি ইশারা পাই।” [৩২]

🔺৩২. [নোট-১২: ইমাম বুখারী ও মুসলিম রওয়ায়াতকৃত এবং (ইবনে মুসাইয়েবের মন্তব্য ছাড়া) আত্ তিরমিযী ও ইমাম আহমদও এটি বর্ণনা করেছেন। ইমাম আহমদ (رحمة الله)-এর ভাষ্যগুলোর একটিতে বিবৃত হয়েছে যে হযরত উসমান (رضي الله عنه) তাঁর আসনের দিকে হেঁটে যাবার সময় পড়ছিলেন আল্লাহুম্মা সাবরান।]


❏ হাদিস ২৬:


আত্ তাবারানী ও আল-বায়হাকী হযরত যায়দ ইবনে আরকাম (رضي الله عنه) থেকে বর্ণনা করেন, যিনি বলেন:

بَعَثَنِي رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ: ” انْطَلِقْ حَتَّى تَأْتِيَ أَبَا بَكْرٍ فَتَجِدَهُ فِي دَارِهِ جَالِسًا مُحْتَبِيًا فَقُلْ: إِنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقْرَأُ عَلَيْكَ السَّلَامَ , وَيَقُولُ أَبْشِرْ بِالْجَنَّةِ , ثُمَّ انْطَلِقْ حَتَّى تَأْتِيَ الثَّنِيَّةَ، فَتَلْقَى عُمَرَ رَاكِبًا عَلَى حِمَارٍ تَلُوحُ صَلْعَتُهُ فَقُلِ: إِنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقْرَأُ عَلَيْكَ السَّلَامَ وَيَقُولُ أَبْشِرْ بِالْجَنَّةِ , ثُمَّ انْصَرِفْ حَتَّى تَأْتِيَ عُثْمَانَ فَتَجِدَهُ فِي السُّوقِ يَبِيعُ وَيَبْتَاعُ فَقُلْ: إِنَّ النَّبِيَّ يَقْرَأُ عَلَيْكَ السَّلَامَ وَيَقُولُ أَبْشِرْ بِالْجَنَّةِ بَعْدَ بَلَاءٍ شَدِيدٍ ” , قَالَ: انْطَلَقْتُ حَتَّى أَتَيْتُ أَبَا بَكْرٍ فَوَجَدْتُهُ فِي دَارِهِ جَالِسًا مُحْتَبِيًا كَمَا قَالَ لِي رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ..

নবী পাক (ﷺ) আমাকে বাইরে পাঠালেন এ কথা বলে, ‘আবু বকর (رضي الله عنه)র সাথে গিয়ে সাক্ষাৎ করো। তুমি তাকে পাবে নিজ ঘরে কাপড় মুড়িয়ে পা গুটিয়ে (মোহতাবইয়ান) বসে থাকতে। তাঁকে বেহেশতের সুসংবাদ দেবে। এরপর পাহাড়ে যাবে যতোক্ষণ না তুমি উমর (رضي الله عنه)কে খুঁজে পাও খচ্চরের পিঠে এবং তাঁর দীর্ঘকায় শরীর দূর থেকে দেখা না যায়। তাঁকেও বেহেশতের সুসংবাদ দেবে। অতঃপর উসমানের কাছে যাবে, যাকে তুমি পাবে বাজারে কেনা-বেচা করতে; তাকেও বেহেশতের খোশ-খবরী দেবে যা একটি মহা ক্লেশের পরে অর্জিত হবে।’ আমি মহানবী (ﷺ) যেভাবে বলেছিলেন ঠিক সেই অবস্থাতে তাঁদের সবাইকে পাই এবং সংবাদ পৌঁছে দেই।”[৩৩]

🔺৩৩. [নোট-১৩: আরেকটি বিশদ বর্ণনার অংশ হিসেবে হযরত যায়দ ইবনে আরকাম থেকে আত্ তাবারানী রওয়ায়াত করেছেন নিজ ‘আল-আওসাত’ পুস্তকে (১:২৬৬-২৬৭ #৮৬৮); বায়হাকী তাঁর ‘দালাইল’ কিতাবে এবং আয-যাহাবী নিজ ‘সিয়ার’ বইয়ে এর দুর্বলতা উল্লেখ করেন। যদি এটা সত্য হয়, তবে এই ঘটনা সম্ভবত হযরত আবু মূসা আশআরী (رحمة الله)-এর বর্ণিত ঘটনার আগের। এর জন্যে দেখুন আল-হায়তামী (৯:৫৫-৫৬) এবং ইবনে কাসীর, আল-বেদায়া গ্রন্থের দালাইলুন্ নবুওয়ত অনুচ্ছেদ, ‘মহানবী (ﷺ)-এর অদৃশ্য ভবিষ্যত জ্ঞান’ শীর্ষক অধ্যায়’।]


❏ হাদিস ২৭:


আল-হাকিম সহীহ হিসেবে ঘোষণা করে হযরত জাবের (رضي الله عنه) থেকে বর্ণনা করেন, যিনি বলেন:

مَشَيْتُ مَعَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِلَى امْرَأَةٍ فَذَبَحَتْ لَنَا شَاةً، فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَيَدْخُلَنَّ رَجُلٌ مِنْ أَهْلِ الْجَنَّةِ» فَدَخَلَ أَبُو بَكْرٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ ثُمَّ قَالَ: «لَيَدْخُلَنَّ رَجُلٌ مِنْ أَهْلِ الْجَنَّةِ» فَدَخَلَ عُمَرُ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، ثُمَّ قَالَ: «لَيَدْخُلَنَّ رَجُلٌ مِنْ أَهْلِ الْجَنَّةِ، اللَّهُمَّ إِنْ شِئْتَ فَاجْعَلْهُ عَلِيًّا» ، قَالَ: فَدَخَلَ عَلِيُّ بْنُ أَبِي طَالِبٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ.

আমি মহানবী (ﷺ)-এর সাথে হেঁটে এক মহিলার বাড়িতে যাই যিনি আমাদের জন্যে একটি ভেড়া জবাই করেন। ওই সময় হুযূর পাক (ﷺ) বলেন, ‘দেখো, বেহেশতীদের মধ্য হতে এক ব্যক্তি এখন প্রবেশ করবেন।’ এমতাবস্থায় হযরত আবু বকর (رضي الله عنه) সেখানে প্রবেশ করেন। অতঃপর রাসূলুল্লাহ (ﷺ) আবার এরশাদ ফরমান, ‘দেখো, বেহেশতীদের মধ্য হতে এক ব্যক্তি এখন প্রবেশ করবেন।’ এবার হযরত উমর (رضي الله عنه) প্রবেশ করেন। নবী পাক (ﷺ) আবারও বলেন, ‘দেখো, বেহেশতীদের মধ্য হতে এক ব্যক্তি এখন প্রবেশ করবেন। এয়া আল্লাহ, আপনি যদি চান, তবে এ যেন আলী হয়।’ অতঃপর হযরত আলী (رضي الله عنه) প্রবেশ করেন।”[৩৪]

🔺৩৪. [নোট-১৪: ওপরে ২ নং নোট দেখুন]


❏ হাদিস ২৮:


ইমাম আহমদ, আল-বাযযার ও আত্ তাবারানী নিজ ‘আল-আওসাত’ কিতাবে হযরত জাবের (رضي الله عنه) থেকে বর্ণনা করেন, যিনি বলেন:


عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ: كُنَّا مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ: ” يَطْلُعُ عَلَيْكُمْ رَجُلٌ – أَوْ قَالَ: يَدْخُلُ عَلَيْكُمْ رَجُلٌ – ” يُرِيدُ رَجُلٌ مِنْ أَهْلِ الْجَنَّةِ، فَجَاءَ أَبُو بَكْرٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، ثُمَّ قَالَ: «يَطْلُعُ عَلَيْكُمْ – أَوْ يَدْخُلُ عَلَيْكُمْ شَابٌّ -» يُرِيدُ رَجُلٌ مِنْ أَهْلِ الْجَنَّةِ قَالَ: فَجَاءَ عُمَرُ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، ثُمَّ قَالَ: «يَطْلُعُ عَلَيْكُمْ رَجُلٌ مِنْ أَهْلِ الْجَنَّةِ، اللَّهُمَّ اجْعَلْهُ عَلِيًّا، اللَّهُمَّ اجْعَلْهُ عَلِيًّا» قَالَ: فَجَاءَ عَلِيٌّ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ.

রাসূলে পাক (ﷺ) হযরত সা’আদ ইবনে আল-রাবী’ (رضي الله عنه)কে দেখতে বের হন। (সেখানে) তিনি বসেন এবং আমরাও বসে পড়ি। অতঃপর তিনি বলেন, ‘বেহেশতে বসবাসকারীদের মধ্য হতে এক ব্যক্তি এখন তোমাদের দৃষ্টিগোচর হবেন।’ এমতাবস্থায় হযরত আবু বকর (رضي الله عنه) তাশরীফ আনেন। এরপর মহানবী (ﷺ) বলেন, ‘বেহেশতে বসবাসকারীদের মধ্য হতে এক ব্যক্তি এখন তোমাদের দৃষ্টিগোচর হবেন।’ এবার হযরত উমর ফারুক (رضي الله عنه) এলেন। তিনি আবার বললেন, ‘বেহেশতে বসবাসকারীদের মধ্য হতে এক ব্যক্তি এখন তোমাদের দৃষ্টিগোচর হবে।’ অতঃপর হযরত উসমান (رضي الله عنه) এলেন। মহানবী (ﷺ) আবারও বললেন, ‘বেহেশতে বসবাসকারীদের মধ্য হতে এক ব্যক্তি এখন তোমাদের দৃষ্টিগোচর হবে। এয়া আল্লাহ, আপনি চাইলে সে যেন আলী হয়।’ এমতাবস্থায় হযরত আলী (رضي الله عنه) সেখানে এলেন।”[৩৫]

🔺৩৫. [নোট-১৫: হযরত জাবের (رضي الله عنه) থেকে আত্ তাবারানী নিজ ‘আল-আওসাত’ গ্রন্থে (৭:১১০ #৭০০২) যা’তে হযরত আলী (رضي الله عنه)র উল্লেখ নেই; আল-হায়তামী (৯:৫৭); হযরত উসমান (رضي الله عنه)-এর উল্লেখ ছাড়া ‘মুসনাদ আল-শামিয়্যীন’ পুস্তকে (১:৩৭৫ #৬৫১)। দেখুন-২ নং নোট।]


❏ হাদিস ২৯:


হযরত আবু বকর, উমর, উসমান, আলী, তালহা, যুবায়র রাদিয়াল্লাহু আনহুম

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، كَانَ عَلَى حِرَاءٍ هُوَ وَأَبُو بَكْرٍ، وَعُمَرُ، وَعُثْمَانُ، وَعَلِيٌّ، وَطَلْحَةُ، وَالزُّبَيْرُ، فَتَحَرَّكَتِ الصَّخْرَةُ، فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «اهْدَأْ فَمَا عَلَيْكَ إِلَّا نَبِيٌّ، أَوْ صِدِّيقٌ، أَوْ شَهِيدٌ».

ইমাম মুসলিম হযরত আবু হুরায়রা (رضي الله عنه) থেকে বর্ণনা করেন যে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) হেরা পর্বতে সর্ব-হযরত আবু বকর, উমর, উসমান, আলী, তালহা ও যুবায়র রাদিয়াল্লাহু আনহুমের সাথে অবস্থান করছিলেন যখন পাথর নড়ে ওঠে। এমতাবস্থায় হুযূর পাক (ﷺ) ওর উদ্দেশ্যে বলেন, “স্থির হও! তোমার ওপরে আর কেউই নেই একজন পয়গম্বর, একজন সিদ্দিক, কিংবা শহীদান ছাড়া।”[৩৬]

🔺৩৬. [নোট-১৬: হযরত আবু হুরায়রা (رضي الله عنه) থেকে মুসলিম, আত্ তিরমিযী (সহীহ) ও ইমাম আহমদ বর্ণিত।]


বাস্তবিকই হযরত আবু বকর (رضي الله عنه) ছাড়া বাকি সবাই শাহাদাত বরণ করেন আল্লাহ তাঁদের সবার প্রতি রাজি হোন। পাহাড়ের কম্পন আবারও (অন্য সময়ে) হয়েছিল যখন নবী পাক (ﷺ) অন্য কয়েকজন সাহাবীসহ সেখানে গিয়েছিলেন।

 
Top