স্বামীর সম্পদ থেকে স্ত্রীর দান করা


عن عمرو بن شعيب عن ابيه عن جده عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قال إِذَا تَصَدَّقَتِ المَرْأَةُ مِنْ بَيْتِ زَوْجِهَا، كَانَ لَهَا أَجْرُهَا وَلَهُ مِثْلُهُ، وَلِلْخَازِنِ مِثْلُ ذَلِكَ لا ينقص  كُلُّ وَاحِدٍ مِنْهُمَا مِنْ اجر صاجبه صاجبه شيئاله بما كسب ولها بما انفقت 


হযরত আমর ইবনে (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত, তিনি তাঁর পিতা থেকে, তাঁর পিতা তাঁর দাদা থেকে, তিনি নবী করিম থেকে বর্ণনা করেন, তিনি ইরশাদ করেন, স্ত্রী যখন স্বামীর ঘর থেকে সাদকা করে এতে তার সাওয়াব হয় এবং অনুরূপ তার স্বামীরও সাওয়াব হয়। উভয়ের সাওয়াব থেকে কমতি হয় না। স্বামীর সাওয়াব হয় রোজগারের কারণে আর স্ত্রীর সাওয়াব হয় ব্যয় করার কারণে।২৪৮

২৪৮.ইমাম বুখারী র (২৫৬ হি.), সহীহ বুখারী, পৃ. ১৯৩

 

عَنْ عَائِشَةَ، رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا قَالَتْ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا أَنْفَقَتِ المَرْأَةُ مِنْ طَعَامِ بَيْتِهَا غَيْرَ مُفْسِدَةٍ، كَانَ لَهَا أَجْرُهَا بِمَا أَنْفَقَتْ، وَلِزَوْجِهَا أَجْرُهُ بِمَا كَسَبَ، وَلِلْخَازِنِ مِثْلُ ذَلِكَ، لاَ يَنْقُصُ بَعْضُهُمْ أَجْرَ بَعْضٍ شَيْئًا


হযরত আয়িশা (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন, স্ত্রী অপব্যয় ব্যতিত ঘর থেকে কোনো খাদ্যবস্তু খরচ করলে সে নিজেও সাওয়াব পাবে এবং তার স্বামীও সাওয়াব পাবে। কারণ সে তা সংগ্রহ করেছে এবং এতে যে শ্রমিক শ্রম দিয়েছে তারও সাওয়াব হবে। আর এতে কারো সাওয়াবে কোনো কমতি হবে না। ২৪৯

২৪৯.ইমাম বুখারী র (২৫৬ হি.), সহীহ বুখারী, পৃ. ১৯২

 

সাধারণত ঘরের যাবতীয় কাজ স্ত্রীই সম্পাদন করে থাকে। স্বামীরা ঘরের ছোট-খাট বিষয় নিয়ে মাথা ঘামায় না। সামান্য টাকা-পয়সা কিংবা খাদ্যবস্তু কাউকে দান করার অনুমতি স্বামীর পক্ষ থেকে স্ত্রীকে দিয়ে রাখা উচিত। স্বামীর যদি মৌনসম্মতি থাকে এবং স্ত্রীও যদি জানে যে, স্বামী অপছন্দ করবে না তাহলে স্ত্রী স্বামীর সম্পদ থেকে স্বল্প পরিমাণ দান-খয়রাত কিংবা অবশিষ্ট খাবার গরীব মিসকীনকে দান করা জায়েয।


অনুরূপভাবে প্রতিবেশীকে সামান্য বস্তু দিয়ে হলেও সাহায্য করা, তাদের প্রয়োজন পূরণ করা উচিত। কারণ এগুলো প্রতিবেশীর অধিকারের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত। হযরত আয়িশা (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত, নবী করিম (ﷺ)ইরশাদ করেন,

من اعطى نارا فكأنما تصدقت بجميع ما انضجت النار 

যে ব্যক্তি কাউকে একটু আগুন দিয়ে সাহায্য করল, সে যেন আগুনে পাকানো সম্পূর্ণ খাদ্যই সাদকা করল। ২৫০

২৫০.নুরুদ্দিন আলী ইবনে আবু বকর র (৮৮০ হি.), মাজমউয যাওয়াযেদ, পৃ. ১৩৬


عَنْ أَبُو هُرَيْرَةَ قَالَ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَوَمَا أَنْفَقَتْ مِنْ كَسْبِهِ مِنْ غَيْرِ أَمْرِهِ، فَإِنَّ نِصْفَ أَجْرِهِ لَهُ 

হযরত হোরায়রা  (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন, স্ত্রী স্বামীর আদেশ ব্যতিতও ব্যয় করলে স্বামী তাতে অর্ধেক সাওয়াব পাবে। ২৫১

২৫১.ইমাম মুসলিম র (২৬১ হি.) সহীহ মুসলিম, খণ্ড ২, পৃ. ৩৩০

 

মহিলারা প্রতিবেশীকে কিছু দিলে কিংবা কাউকে কিছু দিলে সামান্য মনোমালিন্য হলেই তারা তা খোটা দিয়ে গ্রহিতাকে লজ্জিত করে দেয়। কারো উপকার করে খোটা দিলে উপকারের সাওয়াব বিনষ্ট হয়ে যায়। আল্লাহ তা’আলা ইরশাদ করেন,

-يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تُبْطِلُوا صَدَقَاتِكُمْ بِالْمَنِّ وَالْأَذَى 

হে ঈমানদারগণ ! খোটা দিয়ে তোমরা তোমাদের দানকে বিনষ্ট করোনা।২৫২ 

২৫২.সূরা বাকারাহ, আয়াত ২৬৪

 

আল্লামা শেখ সাদী (رحمة الله) বলেন, উপকার করে খোটা দেওয়ার মানে হলো বৃক্ষরোপন করে দীর্ঘদিন লালন-পালন করে ফল খাওয়ার সময় বৃক্ষের গোড়ায় কুড়াল মারা। অর্থাৎ কারো উপকার করে উপকারকারী যে সাওয়াব প্রাপ্ত হলো তা ভোগ করার সময় খোটা দিয়ে সাওয়াব নষ্ট করে ফেলা অত্যন্ত বোকামী কাজ।

 
Top