৫. স্ত্রীর উপর স্বামীকে সন্তুষ্ট রাখা একান্ত কর্তব্য। 


যে সব স্ত্রী স্বামীকে সন্তুষ্ট রাখে তারা স্ত্রী হিসাবে উত্তম। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল কোন স্বভাবের স্ত্রী উত্তম? তিনি বললেন-

 الَّتِي تَسُرُّهُ إِذَا نَظَرَ وَتُطِيعُهُ إِذَا أَمَرَ وَلَا تُخَالِفُهُ فِي نَفْسِهَا وَلَا مَالِهَا بِمَا يَكْرَهُ 

সেই স্ত্রী উত্তম যার দিকে স্বামী তাকালে সে তাকে সন্তুষ্ট করে, যখন তাকে স্বামী কোন কাজের আদেশ দেয় তখন সে তা যথাযথ পালন করে। আর সে নিজের ব্যাপারে এবং তার সম্পদের ব্যাপারে এমন কোন কাজ করে না যা স্বামী অপছন্দ করে। ১০৮

১০৮.নাসাঈ, বায়হাকী শোয়াবুল ঈমান, সূত্র. মিশকাত; পৃ. ২৮৩

 

হযরত উম্মে সালমা (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন-

 أَيُّمَا امْرَأَةٍ مَاتَتْ وَزَوْجُهَا عَنْهَا رَاضٍ دَخَلَتِ الْجَنَّةَ 

যে নারী তার স্বামীকে সন্তুষ্ট রেখে মৃত্যুবরণ করবে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।১০৯

১০৯.তিরমিযী, সূত্র. মিশকাত; পৃ. ২৮১

 

يامعشر النساء : اتقين الله ، والتمسن مرضاة أزواجكن ، فان المرأة لو

تعلم ما حق زوجها لم تزل قائمة ما حضر غداؤه وعشاؤه 

হযরত আলী (رضي الله عنه) থেকে মারফু হাদিসে বর্ণিত আছে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন, হে মহিলাদের দল! তোমরা আল্লাহকে ভয় কর আর নিজের স্বামীর সন্তুষ্টির দিকে লক্ষ্য রাখ। যদি স্ত্রী জানত যে, স্বামীর প্রতি তার হক কতটুকু? তাহলে স্ত্রী স্বামীর জন্য সকাল-সন্ধার খাবার নিয়ে সর্বদা দাঁড়িয়ে থাকত। ১১০

১১০.আলাউদ্দিন আলী ইবনে হুস্্সামউদ্দিন র (৯৭৫ হি.), কানযুল উম্মাল, খণ্ড ১৬, পৃ. ১৪৫


অর্থাৎ আদর্শ স্ত্রী সর্বদা স্বামীর সন্তুষ্টি ও তার মনজয় করার চেষ্টা করে। যেসব কাজ-কর্ম, আচার-আচরণ, সেবা-যত্ন, পোশাক-পরিচ্ছদ, খাওয়া-নাওয়া স্বামীর পছন্দ সর্বদা তা করা, প্রস্তুত রাখা স্ত্রীর উচিত। এক কথায় প্রত্যেক বৈধ বিষয়ে যে স্বামীর চাহিদা পূরণ করে স্বামীর সন্তুষ্টি অর্জন করা স্ত্রীর উপর আবশ্যক।


হযরত জাবির (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন-

 ثَلَاثَةٌ لَا تُقْبَلُ لَهُمْ صَلَاةٌ وَلَا تَصْعَدُ لَهُمْ حَسَنَةٌ الْعَبْدُ الْآبِقُ حَتَّى يَرْجِعَ إِلَى مَوَالِيهِ فَيَضَعَ يَدَهُ فِي أَيْدِيهِمْ وَالْمَرْأَةُ السَّاخِطُ عَلَيْهَا زَوْجُهَا وَالسَّكْرَانُ حَتَّى يصحو 

তিন ব্যক্তির নামায কবুল হয় না এবং তাদের নেকী উপরে উঠেনা। ১. পলাতক ক্রীতদাস, যতক্ষণ না সে আপন মাওলার কাছে ফিরে আসে ও তার হাতে ধরা দেয়। ২. সেই স্ত্রী যার উপর তার স্বামী অসন্তুষ্ট, যতক্ষণ না সে তাকে সন্তুষ্ট করে এবং ৩. মাতাল, যতক্ষণ না সে হুশে আসে। ১১১

১১১.বায়হাকী, শোয়াবুল ঈমান, সূত্র. মিশকাত; পৃ. ২৮৩


অর্থাৎ স্ত্রীর অসাবধানতা বশত কোন আচরণে স্বামী কষ্ট পেলে স্ত্রী অভিমান করে মুখ ভার করে না থেকে নারীর মমতা দিয়ে স্বামীকে খুশী করা প্রয়োজন। কারণ অন্যথা স্ত্রীর অন্যতম নামাযের ন্যায় গুরুত্বপূর্ণ ফরয ইবাদত পর্যন্ত আল্লাহর দরবারে কবুল হবে না।


হাদিস শরীফে বর্ণিত আছে যে, বনি আসহাল গোত্রের হযরত আসমা বিনতে ইয়াযিদ আনসারী (رضي الله عنه) বর্ণনা করেন, তিনি নবী করিম (ﷺ) ’র দরবারে আগমণ করেন। তখন নবী করিম (ﷺ) সাহাবীদের মাঝে অবস্থান করছিলেন। আসমা (رضي الله عنه) বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমার পিতা-মাতা আপনার উপর উৎসর্গ হোক আমি সমগ্র নারী জাতির প্রতিনিধি হয়ে এসেছি। আমার জীবন আপনার জন্য উৎসর্গীত। প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের সকল মহিলারা শুনবে যে, আমি আপনার কাছ থেকে বের হয়ে এসেছি অথবা শুনবে না। নিশ্চয় আল্লাহ আপনাকে নারী-পুরুষের সকলের প্রতি সত্য নবী হিসাবে প্রেরণ করেছেন। আমরা আপনার উপর এবং আপনি যা নিয়ে আগমণ করেছেন তার উপর ঈমান এনেছি। আমরা নারী সম্প্রদায় আবদ্ধ ও সীমাবদ্ধ আপনাদের ঘরে অবস্থানকারী। আপনাদের চাহিদা পূরণকারিনী ও আপনাদের সন্তানের গর্ভধারিনী। আর আপনারা পুরুষদেরকে জুমা, জামাত, রোগীর সেবা, জানাযায় উপস্থিত ও হজ্জের ক্ষেত্রে আমাদের উপর অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। আর সর্বোত্তম হজ্জ হচ্ছে জিহাদ করা। আপনাদের কেউ হজ্জ, ওমরা ও জিহাদে বের হলে আমরা আপনাদের সম্পদ সংরক্ষণ করি। আমরা কি এসব আমলের সাওয়াব ও উত্তম কাজে আপনাদের সাথে শরীক হবো? নবী করিম (ﷺ) সাহাবীদের দিকে চেহারা ফিরিয়ে বললেন, কোন নারী কি তার দ্বীন সম্পর্কে এ নারীর চেয়ে উত্তম প্রশ্ন করেছে? উত্তরে তাঁরা বললেন, আমরা ভাবিনি কোনো নারী এরূপ হেদায়ত গ্রহণ করেন। নবী করিম (ﷺ) আসমা রা’র দিকে মুখ ফিরিয়ে বললেন, হে নারী! তুমি বুঝ এবং তোমার পশ্চাতে থাকা নারীদের জানিয়ে দাও, স্বামীর জন্য স্ত্রী অনুরোক্তি, তার সন্তুষ্টি কামনা করা এবং তার সিদ্ধান্তের অনুসরণ করা পুরুষদের ঐসব নেক আমলের সাওয়াবের সমান। তারপর মহিলাটি খুশীতে লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ও তাকবীর বলতে বলতে চলে গেল। ১১২

১১২.ইমাম বায়হাকী র (৪৫৮ হি.) শোয়াবুল ঈমান, খণ্ড ৬, পৃ. ৪৬১

উপর তার স্বামী অসন্তুষ্ট, যতক্ষণ না সে তাকে সন্তুষ্ট করে এবং ৩. মাতাল, যতক্ষণ না সে হুশে আসে। ১১১

১১১.বায়হাকী, শোয়াবুল ঈমান, সূত্র. মিশকাত; পৃ. ২৮৩


অর্থাৎ স্ত্রীর অসাবধানতা বশত কোন আচরণে স্বামী কষ্ট পেলে স্ত্রী অভিমান করে মুখ ভার করে না থেকে নারীর মমতা দিয়ে স্বামীকে খুশী করা প্রয়োজন। কারণ অন্যথা স্ত্রীর অন্যতম নামাযের ন্যায় গুরুত্বপূর্ণ ফরয ইবাদত পর্যন্ত আল্লাহর দরবারে কবুল হবে না।


হাদিস শরীফে বর্ণিত আছে যে, বনি আসহাল গোত্রের হযরত আসমা বিনতে ইয়াযিদ আনসারী (رضي الله عنه) বর্ণনা করেন, তিনি নবী করিম (ﷺ) ’র দরবারে আগমণ করেন। তখন নবী করিম (ﷺ) সাহাবীদের মাঝে অবস্থান করছিলেন। আসমা (رضي الله عنه) বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমার পিতা-মাতা আপনার উপর উৎসর্গ হোক আমি সমগ্র নারী জাতির প্রতিনিধি হয়ে এসেছি। আমার জীবন আপনার জন্য উৎসর্গীত। প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের সকল মহিলারা শুনবে যে, আমি আপনার কাছ থেকে বের হয়ে এসেছি অথবা শুনবে না। নিশ্চয় আল্লাহ আপনাকে নারী-পুরুষের সকলের প্রতি সত্য নবী হিসাবে প্রেরণ করেছেন। আমরা আপনার উপর এবং আপনি যা নিয়ে আগমণ করেছেন তার উপর ঈমান এনেছি। আমরা নারী সম্প্রদায় আবদ্ধ ও সীমাবদ্ধ আপনাদের ঘরে অবস্থানকারী। আপনাদের চাহিদা পূরণকারিনী ও আপনাদের সন্তানের গর্ভধারিনী। আর আপনারা পুরুষদেরকে জুমা, জামাত, রোগীর সেবা, জানাযায় উপস্থিত ও হজ্জের ক্ষেত্রে আমাদের উপর অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। আর সর্বোত্তম হজ্জ হচ্ছে জিহাদ করা। আপনাদের কেউ হজ্জ, ওমরা ও জিহাদে বের হলে আমরা আপনাদের সম্পদ সংরক্ষণ করি। আমরা কি এসব আমলের সাওয়াব ও উত্তম কাজে আপনাদের সাথে শরীক হবো? নবী করিম (ﷺ) সাহাবীদের দিকে চেহারা ফিরিয়ে বললেন, কোন নারী কি তার দ্বীন সম্পর্কে এ নারীর চেয়ে উত্তম প্রশ্ন করেছে? উত্তরে তাঁরা বললেন, আমরা ভাবিনি কোনো নারী এরূপ হেদায়ত গ্রহণ করেন। নবী করিম (ﷺ) আসমা রা’র দিকে মুখ ফিরিয়ে বললেন, হে নারী! তুমি বুঝ এবং তোমার পশ্চাতে থাকা নারীদের জানিয়ে দাও, স্বামীর জন্য স্ত্রী অনুরোক্তি, তার সন্তুষ্টি কামনা করা এবং তার সিদ্ধান্তের অনুসরণ করা পুরুষদের ঐসব নেক আমলের সাওয়াবের সমান। তারপর মহিলাটি খুশীতে লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ও তাকবীর বলতে বলতে চলে গেল। ১১২

১১২.ইমাম বায়হাকী র (৪৫৮ হি.) শোয়াবুল ঈমান, খণ্ড ৬, পৃ. ৪৬১

 
Top