বিবাহের ইসলামী নিয়ম


পবিত্র ধর্ম ইসলামে বিবাহ নিছক একটি আনুষ্ঠানিকতার নাম নয় বরং এটি একটি ইবাদতও বটে। দু’জন সাক্ষীর উপস্থিতিতে ছেলে-মেয়ে সরাসরি কিংবা উভয়ের নিযুক্ত প্রতিনিধি ইজাব (প্রস্তাব) ও কবুল (গ্রহণ) এর মাধ্যমে বিবাহ সম্পন্ন হয়। এ অনুষ্ঠানকে আকদও বলা হয়। ইজাবও কবুল নর-নারী উভয়ের পক্ষ থেকে হতে পারে যদিও সাধারণত পুরুষের পক্ষ থেকে ইজাব পাঠানো হয় আর কনের পক্ষে তা কবুল করা হয়ে থাকে। 


আকদে একটি খুৎবা পাঠ করা সুন্নাত যাতে বিবাহ সম্পর্কীয় কুরআনের আয়াত ও হাদিস শরীফ বিদ্যমান থাকবে। মুত্তাকী পরহেযগার ও বিজ্ঞ আলিম দ্বারা আকদ দেওয়া, বিশেষ করে এসময় স্বামী-স্ত্রীর অধিকার সর্ম্পকে তাদেরকে নসিহত করা শ্রেয়। সামর্থ অনুযায়ী খুরমা বিতরণ করা সুন্নাত।


ইসলামে গোপন বিয়ে নিন্দনীয়। কারণ এতে বহুধরণের অপকর্মের জন্ম দেয়। তাছাড়া হাঠাৎ করে তাদের সন্তান জন্ম হলে কিংবা স্ত্রী গর্ভবতী হলে আত্মীয়স্বজন খারাপ মন্তব্য করবে এবং নিজের মানহানী হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন-

أَعْلِنُوا هَذَا النِّكَاحَ وَاجْعَلُوهُ فِي الْمَسَاجِدِ وَاضْرِبُوا عَلَيْهِ بِالدُّفُوفِ . 

এবং বিবাহ কাজ মসজিদে সম্পাদন করবে আর বিবাহ উপলক্ষে দফবাজাবে।৯০

৯০.তিরমিযী, সূত্র, মিশকাত; পৃ.২৭২, হাদিস নং ৩০০৬


মসজিদে আকদ অনুষ্ঠান করার কারণ হলো মসজিদে সমাজের সকল মানুষ উপস্থিত হয়। মসজিদে আকদ অনুষ্ঠিত হলে সমাজের সকলেই সহজে জানতে পারে। তাছাড়া পৃথিরীতে সর্বোত্তম স্থান হলো মসজিদ। সুতরাং বিবাহের ন্যায় পবিত্র অনুষ্ঠান পবিত্র স্থানে হওয়াই বাঞ্চনীয়।


আর দফ বাজানোর কারণ হলো বিবাহের প্রচার করা এবং সীমিত পর্যায়ে আনন্দ প্রকাশ করা। নবী করিম (ﷺ) ইরশাদ করেন-

 " فَصَلَ مَا بَيْنَ الْحَلَالِ وَالْحَرَامِ: الصَّوْتُ وَالدُّفُّ فِي النِّكَاحِ ". 

হালাল ও হারাম বিয়ের মধ্যে পার্থক্য হলো শব্দ করা ও দফ বাজানো। ৯১

৯১.আহমদ, তিরমিযী, নাসাঈ ও ইবনে মাজাহ, সূত্র, মিশকাত; পৃ. ২৭২

 

অর্থাৎ হালাল পন্থায় বিবাহ করলে তাতে দফ বাজিয়ে প্রচার করা হয় এবং উঁচু আওয়াজে আনন্দ প্রকাশ করা হয়। পক্ষান্তরে যদি হারাম পন্থায় কিংবা অবৈধভাবে বিবাহ হয় তা গোপনে চুপে চুপে সম্পন্ন করা হয়।

 
Top