১৮- بَابُ مَا جَاءَ فِيْ زِيَارَةِ قَبَرِ النَّبِيِّ صَلَّى الله عَلَيْهِ وَسَلَّمَ

٢٥٦- أَبُوْ حَنِيْفَةَ: عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ ، قَالَ: مِنَ السُّنَّةِ أَنْ تَأْتِيَ قَبْرَ النَّبِيَّ  مِنْ قِبَلِ الْقِبْلَةِ، وَتَجْعَلَ ظَهْرَكَ إِلَى الْقِبْلَةِ، وَتَسْتَقْبِلَ الْقَبْرَ لِوَجْهِكَ، ثُمَّ تَقُوْلَ: السَّلَامُ عَلَيْكَ أَيُّهَا النَّبِيُّ وَرَحْمَةُ اللهِ وَبَرَكَاتُهُ.


বাব নং ১১৬. ১৮.  নবী (ﷺ) ’র রওযা শরীফের যিয়ারত প্রসঙ্গে


২৫৬. অনুবাদ: ইমাম আবু হানিফা নাফে থেকে, তিনি ইবনে ওমর (رضي الله عنه) থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, (যিয়ারতের) সুন্নত পদ্ধতি হলো কিবলার দিক থেকে নবী করিম (ﷺ) ’র কবর শরীফে আগমন করবে। পিঠ কিবলার দিকে আর মুখ রওযা শরীফের দিকে থাকবে। 

তারপর বলবে- السلام عليك ايها النبى ورحمة الله وبركاته


ব্যাখ্যা: রাসূল (ﷺ) ’র রওযা মোবারক যিযারত করা যে পরম সৌভাগ্য ও শ্রেষ্ঠ সওয়াবের কাজ এ ব্যাপারে সন্দেহের অবকাশ নেই। তাই কোন কোন আলিম সামর্থবান লোকদের জন্য রাসূল (ﷺ) ’র যিয়ারতে যাওয়াকে ওয়াজিব রূপে গণ্য করেছেন।


(১) নবী করিম (ﷺ)  এরশাদ করেন 

من زارنى معتمدًا كان فى جوارى يوم القيامة 

“যে ব্যক্তি সেচ্ছায় আমার যিয়ারত করবে, কিয়ামত দিবসে সে আমার প্রতিবেশী হবে।”  ১৮১

➥ শুআবুল ঈমান, সূত্র: মিশকাত, ২০৪ পৃষ্ঠাঃ 


(২) অপর বর্ণনায় আছে- 

من حج فزار قبرى بعد موتى كان كمن زارنى فى حياتى 

“যে ব্যক্তি হজ্জ করল এবং আমার ইন্তেকালের পর আমার কবর যিযারত করল সে যেন আমার জীবদ্দশায় আমার সাক্ষাৎ করল।”  ১৮২

 ➥ প্রাগুক্ত, সূত্র: মিশকাত শরীফ:  পৃষ্ঠাঃ  ২৪১


(৩) অপর হাদিসে আছে- 

من حج الى مكة ثم قصدنى مسجدى كتبت له حجتان مبرورتان 

“যে ব্যক্তি মক্কায় হজ্জ করে আমার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়ে আমার মসজিদে আসে তার জন্য দু’টি মকবুল হজ্জের সওয়াব লিখিত হয়।”১৮৩  

 ➥ শেখ আব্দুল হক মুহাদ্দিস দেহলভী, জাযবুল কুলুব ইলা দিয়ারিল মাহবুব


(৪) আরো বর্ণিত আছে- 

من جائنى زائرًا لا تعمله حاجته الازيارتى كان حقا على ان اكن له شفيعًا يوم القيامة 

“যে ব্যক্তি আমার যিয়ারতের উদ্দেশ্যে আমার নিকট আসে। তার অন্য কোন কাজ না থাকে, তাহলে কিয়ামত দিবসে আমি তার জন্য সুপারিশকারী হবো।” 

(তাবরানী)


(৫) অন্যত্র বর্ণিত আছে 

من زار قبرى وجبت له شفاعتى 

“যে ব্যক্তি আমার কবর যিয়ারত করল তার জন্য আমার শাফায়াত আবশ্যক হয়ে গেল। 

(দারেকুতুনী)


উপরে বর্ণিত তিন ও চার নং হাদিস দ্বারা সাব্যস্ত হয় যে, খালিস নিয়্যতে একান্তই যিয়ারতের উদ্দেশ্যে দরবারে নববীতে হাযিরা দিতে হবে। এতে অন্য কোন উদ্দেশ্য থাকা বাঞ্চনীয় নয়। তবে রাসূল (ﷺ) ’র যিয়ারতের উদ্দেশ্যের সাথে মসজিদে নববীর যিয়ারতের নিয়্যত থাকা মুস্তাহাব। মোট কথা মদীনা সফরের মূল উদ্দেশ্য হতে হবে যিয়ারত-এটাই সকল ইমামগণের অভিমত। 


❏পবিত্র কুরআনে আছে- 

ولو انهم اذظلموا انفسهم جاؤك فاستغفروا الله واستغفر لهم الرسول لوجدوا الله توابا الرحيما

“আর তারা যখন নিজের আত্মার উপর জুলুম করে, হে মাহবুব! তারা যদি আপনার দরবারে আসে অতঃপর আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করে আর রাসূলও যদি তাদের সুপরিশ করেন, তবে অবশ্যই আল্লাহকে ক্ষমাকারী, মেহেরবান রূপে পেত। 

(সূরা নিসা, আয়াত; ৬৪).


❏এই আয়াতের বিধান কেবল রাসূল (ﷺ)  ’র জীবদ্দশায় সাথে খাস নয় বরং তাঁর ইন্তেকালের পরেও প্রযোজ্য। من حج البيت ولم يزرنى فقد جفانى “যে ব্যক্তি হজ্জ করল অথচ আমার যিয়ারত করল না সে আমার উপর জুলুম করল। 

(তাবরানী ও জযবুল কুলুব)


❏উপরোক্ত কুরআনে করিম ও হাদিস শরীফের আলোকে রাসূল (ﷺ) ’র কবর শরীফ যিয়ারত করা ফরয-ওয়াজিবের পরে একটি উত্তম ইবাদত ও শ্রেষ্ঠ সওয়াবের কাজ বলে প্রমাণিত হয়।


❏ইমাম আবু হানিফা (رحمة الله) ইমাম মালেক (رحمة الله) ইমাম শাফেঈ (رحمة الله) ও ইমাম আহমদ (رحمة الله) সহ জমহুরের মতে রাসূল (ﷺ) ’র কবর শরীফ যিয়ারতের নিয়ম ও আদব হল- কবর শরীফকে সামনে নিয়ে কিবলাকে পিছ দিয়ে নামাযের ন্যায় হাত বেঁধে নিন্মস্বরে প্রথমে সালাম পেশ করা। তারপর নম্রতার সাথে দোয়া করা এবং তাঁর কাছে সাহায্য চাওয়া ও তাঁর সুপারিশ কামনা করা এবং বেশী করে তাঁর উসিলা নিয়ে দোয়া করা। কেননা তাঁর সুপারিশ চাইলে আল্লাহ তায়ালা তাঁকে সুপারিশকারী বানিয়ে দেন।  ১৮৪

➥ ইমাম কাসতাল্লানী (رحمة الله) (৯১১ হিঃ) মাওয়াহেবুল লাদুনিয়্যাহ খন্ড ২য়, পৃষ্ঠাঃ  ৩৬২

 
Top