1 - كِتَابُ الْإِيْمَانِ وَالْإِسْلَامِ وَالْقَدَرِ وَالشَّفَاعَةِ

1 - بَابُ شَرَائِعِ الْإِسْلَامِ وَذَمِّ الْقَدْرِيَّةِ

2 - أَبُوْ حَنِيْفَةَ: عَنْ عَلْقَمَةَ، عَنْ يَحْيَىٰ بْنِ يَعْمُرَ، قَالَ: بَيْنَمَا أَنَا مَعَ صَاحِبٍ لِيْ بِمَدِيْنَةِ رَسُوْلِ اللهِ  إِذَ بَصُرْنَا بِعَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ ، فَقُلْتُ لِصَاحِبِيْ: هَلْ لَكَ أَنْ نَأْتِيَهُ، فَنَسْأَلَهُ عَنِ الْقَدَرِ؟ قَالَ: نَعَمْ، قُلْتُ: دَعْنِيْ حَتَّىٰ أكُوْنَ أَنَا الَّذِيْ أَسْأَلُهُ، فَإِنِّيْ أَعْرِفُ بِهِ مِنْكَ.

قَالَ: فَانْتَهَيْنَا إِلَىٰ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ، فَقُلْتُ: يَا أَبَا عَبْدِ الرَّحْمٰنِ! إِنَّا نَتَقَلَّبُ فِيْ هَذِهِ الْأَرْضِ، فَرُبَّمَا قَدِمْنَا الْبَلْدَةَ بِهَا قَوْمٌ يَقُوْلُوْنَ: لَا قَدْرَ، فَبِمَا نَرُدُّ عَلَيْهِمْ؟ قَالَ: أَبْلِغْهُمْ مِنِّيْ أَنِّيْ مِنْهُمْ بَرِيءٌ، وَلَوْ أَنِّيْ وَجَدْتُ أَعْوَانًا لَـجَاهَدْتُهُمْ، ثُمَّ أَنْشَأَ يُحَدِّثُنَا.

قَالَ: بَيْنَمَا نَحْنُ مَعَ رَسُوْلِ اللهِ ، وَمَعَهُ رَهْطٌ مِنْ أَصْحَابِهِ، إِذْ أَقْبَلَ شَابٌّ جَمِيْلٌ، أَبْيَضُ، حَسَنُ اللَّمَّةِ، طَيِّبُ الرِّيْحِ، عَلَيْهِ ثِيَابٌ بِيْضٌ، فَقَالَ: السَّلَامُ عَلَيْكَ يَا رَسُوْلَ اللهِ! السَّلَامُ عَلَيْكُمْ، قَالَ: فَرَدَّ عَلَيْهِ رَسُوْلُ اللهِ ، وَرَدَدْنَا مَعَهُ.

فَقَالَ: أَدْنُوْ يَا رَسُوْلَ اللهِ؟ قَالَ: «اُدْنُ»، فَدَنَا دَنْوَةً، أَوْ دَنْوَتَيْنِ، ثُمَّ قَامَ مُوَقِّرًا لَهُ، ثُمَّ قَالَ: أَدْنُوْ يَا رَسُوْلَ اللهِ؟ فَقَالَ: «اُدْنُهْ»، فَدَنَا حَتَّى الْصَقَ رُكْبَتَيْهِ بِرُكْبَةِ رَسُوْلِ اللهِ ، فَقَالَ: أَخْبِرْنِيْ عَنِ الْإِيْمَانِ، فَقَالَ: « اَلْإِيْمَانُ أَنْ تُؤْمِنَ بِاللهِ، وَمَلَائِكَتِهِ، وَكُتُبِهِ، وَرُسُلِهِ، وَلِقَائِهِ، وَالْيَوْمِ الْآخِرِ، وَالْقَدَرِ خَيْرِهِ وَشَرِّهِ مِنَ اللهِ،  فَقَالَ: صَدَقْتَ.

قَالَ: فَعَجِبْنَا مِنْ تَصْدِيْقِهِ لِرَسُوْلِ اللهِ ، وَقَوْلِهِ: صَدَقْتَ، كَأَنَّهُ يَعْلَمُ.

قَالَ: فَأَخْبِرْنِيْ عَنْ شَرَائِعِ الْإِسْلَامِ مَا هِيَ؟ قَالَ: «إِقَامُ الصَّلَاةِ، وَإِيْتَاءُ الزَّكَاةِ، وَحَجُّ الْبَيْتِ لِـمَنِ اسْتَطَاعَ إِلَيْهِ سَبِيْلًا، وَصَوْمُ رَمَضَانَ، وَالْاِغْتِسَالُ مِنَ الْـجَنَابَةِ»، قَالَ: صَدَقَتَ.

فَعَجِبْنَا لِقَوْلِهِ: صَدَقْتَ.

قَالَ: فَأَخْبِرْنِيْ عَنِ الْإِحْسَانِ مَا هُوَ؟ قَالَ: «اَلْإِحْسَانُ أَنْ تَعْمَلَ لِلهِ كَأَنَّكَ تَرَاهُ، فَإِنْ لَـمْ تَكُنْ تَرَاهُ، فَإِنَّهُ يَرَاكَ»، قَالَ: فَإِذَا فَعَلْتُ ذَلِكَ، فَأَنَا مُحْسِنٌ؟ قَالَ: «نَعَمْ»، قَالَ: صَدَقْتَ.

قَالَ: فَأَخْبِرْنِيْ عَنِ السَّاعَةِ، مَتَىٰ هِيَ؟ قَالَ: «مَا الْـمَسْئُوْلُ عَنْهَا بِأَعْلَمَ مِنَ السَّائِلِ، وَلَكِنْ لَـهَا أَشْرَاطٌ»، فَقَالَ: «[إِنَّ اللهَ عِنْدَهُ عِلْمُ السَّاعَةِ وَيُنَزِّلُ الْغَيْثَ وَيَعْلَمُ مَا فِي الْأَرْحَامِ وَمَا تَدْرِيْ نَفْسٌ مَاذَا تَكْسِبُ غَدًا وَمَا تَدْرِيْ نَفْسٌ بِأَيِّ أَرْضٍ تَمُوْتُ إِنَّ اللهَ عَلِيْمٌ خَبِيْرٌ] {لقمان: 34}، قَالَ: صَدَقْتَ، ثُمَّ انْصَرَفَ وَنَحْنُ نَرَاهُ.

قَالَ النَّبِيُّ : «عَلَيَّ بِالرَّجُلِ»، فَقُمْنَا فِيْ أَثَرِهِ فَمَا نَدْرِيْ أَيْنَ تَوَجَّهَ، وَلَا رَأَيْنَا شَيْئًا، فَذَكَرْنَا ذَلِكَ لِلنَّبِيِّ ، فَقَالَ: هَذَا جِبْرِيْلُ ، أَتَاكُمْ يُعَلِّمُكُمْ مَعَالِـمَ دِيْنِكُمْ، وَاللهِ مَا أَتَانِيْ بِصُوْرَةٍ إِلَّا وَأَنَا أَعْرِفُهُ فِيْهَا، إِلَّا هَذِهِ الصُّوْرَةَ».


২.  ইসলামী শরীয়ত ও কাদরীয়া সম্প্রদায়ের প্রতি তিরস্কার


২. অনুবাদ: ইমাম আবু হানিফা আলকামা থেকে, তিনি ইয়াহিয়া ইবনে ইয়ামার থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, একদা আমি আমার সঙ্গী সহ মদীনায় অবস্থায় করছিলাম। হঠাৎ হযরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (رضي الله عنه)কে দেখলাম। আমি আমার সঙ্গীকে বললাম, তুমি কি সম্মত আছ আমরা তাঁর নিকট গিয়ে তাঁর কাছে তাকদীরের মাসয়ালা জিজ্ঞাসা করবো? সঙ্গী বলল, হ্যাঁ, তখন আমি বললাম ঠিক আছে আমাকে প্রশ্ন করতে সুযোগ দাও। কেননা তাঁকে তোমার চেয়ে আমিই বেশী চিনি, জানি। ইয়াহিয়া বলেন, আমরা তাঁর খেদমতে উপস্থিত হয়ে আরয করলাম, হে আবু আবদুর রহমান! (এটি তাঁর উপনাম) আমরা এই পৃথিবীর বুকে চলাফেরা করি। কোন কোন সময় এমন শহরেও আমাদের পদচারণা হয় যেখানের অধিবাসীরা বলে তাকদীর বলতে কিছুই নেই। তখন ঐসব লোকদেরকে আমরা কী জবাব দেবো?

তিনি বললেন, তাদেরকে আমার পক্ষ থেকে সংবাদ দিও যে, আমি তাদের উপর অসন্তুষ্ট। যদি আমাকে সাহায্যকারী পাই তবে আমি তাদের বিরোদ্ধে যুদ্ধ করবো। অতঃপর তিনি নিম্নোক্ত হাদিসখানা বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, আমার একদল সাহাবা রাসূল (ﷺ) ’র খেদমতে ছিলাম। হঠাৎ একজন শুভ্র রঙের সুন্দর সুগন্ধিযুক্ত যুবক যার কাধে কাপড় লটকানো অবস্থায় সামনের দিক থেকে আসতে দেখলাম। সে কাছে এসে বলল, আসসালামু আলাইকা ইয়া রাসূলাল্লাহ; আসসালামু আলাইকুম। রাসূল (ﷺ)  তার সালামের জবাব দিলেন এবং আমরাও সালামের উত্তর দিলাম। তারপর সে অত্যন্ত আদবের সহিত বলল, আমি কি কাছে আসতে পারি? ইয়া রাসূলাল্লাহ! তিনি বললেন, হ্যাঁ, কাছে এসো। অতঃপর লোকটি দু’এক কদম সামনে এসে আদবের সাথে পুনরায় জিজ্ঞাসা করল আমি কি আরো একটু কাছে আসতে পারি? তিনি বললেন, হ্যাঁ, আরো কাছে এসো। তখন সে কাছে এসে এমনভাবে বসল যে, তার হাঁটু রাসূল (ﷺ) ’র হাঁটুর সাথে জুড়ে দিল। তারপর বলল, আমাকে ঈমানের হাকীকত বলুন। তিনি বললেন, ঈমান হল, তুমি বিশ্বাস রাখবে আল্লাহর প্রতি, তাঁর ফেরেস্তাগণের প্রতি, তার কিতাবসমূহের উপর, তাঁর প্রেরিত রাসূলগণের প্রতি, কিয়ামত দিবসে তার সাথে সাক্ষাতের প্রতি এবং কিয়ামত দিবসের উপর। আরো বিশ্বাস রাখবে তাকদীরের ভাল মন্দের উপর যা আল্লাহর পক্ষ থেকে আসে। লোকটি বলল, আপনি সত্য বলেছেন।

আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (رضي الله عنه) বলেন, লোকটি ‘সাদকতা’ বলে রাসূল (ﷺ)  কে সত্যায়ন করাটা আমাদেরকে অবাক করে দিল। কেননা এতে বুঝা গেল যে, সে এর উত্তর পূর্ব থেকেই জানতো। লোকটি আবার বলল, আমাকে ইসলামী শরীয়ত সম্পর্কে বলুন। তিনি বললেন, সালাত কায়েম করা, যাকাত আদায় করা, বায়তুল্লাহ এ হজ্ব করা যদি সামর্থ থাকে, রমযান মাসে রোযা রাখা, জানাবত হলে গোসল করা। সে বলল, আপনি ঠিক বলেছেন, তার ‘সাদকতা’ বলা তথা নবীর কথাকে সত্যায়ন করাটা আমাদেরকে আরো বেশী অবাক করে দিল। এরপর বলল, ইহসান কি? এ সম্পর্কে আমাকে অবহিত করুন। তিনি বললেন, ইহসান হল তুমি এমনভাবে আল্লাহর ইবাদত করবে যেন তুমি তাঁকে দেখতেছ। যদি এতটুকু তোমার সম্ভব না হয় তবে কমপক্ষে এতটুকু বিশ্বাস রাখবে যে, তিনি তোমাকে দেখতেছেন। সে বলল, যদি আমি এরূপ করি তবে কি আমি মুহসিন তথা ইহসানকারী হবো? তিনি বললেন, হ্যাঁ। সে বলল, আপনি সত্য বলেছেন।

লোকটি আবার জিজ্ঞাসা করল, আমাকে কিয়ামত সম্পর্কে অবহিত করুন। তা কখন সংঘটিত হবে? তিনি বললেন, এ ব্যাপারে যাকে জিজ্ঞাসা করা হচ্ছে, তিনি জিজ্ঞাসাকারী অপেক্ষা বেশী জানেন না। তবে এর কিছু আলামত রয়েছে। অতঃপর বললেন, একমাত্র আল্লাহ জানেন কিয়ামত কবে হবে, বৃষ্টি কখন হবে, গর্ভবতী নারীর গর্ভে ছেলে না মেয়ে, মানুষ আগামী কাল কি করবে, মানুষ কোথায় মৃত্যুবরণ করবে। আল্লাহই (এসব বিষয়ে) জ্ঞাত এবং অবহিত। সে বলল, আপনি সত্য বলেছেন।

অতঃপর লোকটি আমাদের চোখের সামনে থেকে চলে গেলে রাসূল (ﷺ)  বললেন, লোকটিকে একটু ডাক। সাথে সাথে আমরা তার পিছে পিছে গেলাম কিন্তু তাকে পেলাম না; এবং বুঝতেও পারলাম না সে কোন দিকে অদৃশ্য হয়ে গেল। আমরা এ কথা নবী করিম (ﷺ) কে এসে বললে তিনি বললেন, ইনি ছিলেন হযরত জিব্রাঈল (عليه السلام)। তিনি তোমাদেরকে তোমাদের দ্বীন শিখানোর জন্য এসেছিলেন। খোদার শপথ! যখনই তিনি আমার কাছে যে কোন আকৃতি নিয়ে আসতেন আমি তাকে চিনে ফেলতাম, শুধু এইবার ছাড়া।

ব্যাখ্যা: হাদিসখানা দ্বীনে ইসলামের সারমর্ম বা পুরো ইসলামের সংক্ষিপ্ত রূপ। একারণে উক্ত হাদিসকে উম্মুস সুন্নাহ, উম্মুল আহাদীস বা উম্মুল জাওয়ামে বলা হয়। এই হাদিসখানা যেন সকল হাদীসের শিকড় আর অন্যান্য সকল হাদিস হল তার শাখা প্রশাখা ও বিস্তারিত ব্যাখ্যা। 

কেউ কেউ বলেন, দ্বীনের বুনিয়াদ হল তিনটি বস্তুর উপর। এক. ফিকহ, যা প্রকাশ্য আমলের নাম, দুই. কালাম, যা অপ্রকাশ্য বিষয় তথা ই’তিকাদের নাম, তিন. তাসাউফ যা ইখলাস ও ইহসান উভয়ের সমষ্টির নাম। উপরিউক্ত হাদিসে সবগুলো সম্পর্কে আলোকপাত করা হয়েছে। তাই ওটাকে দ্বীনের সারমর্ম বলা হয়েছে।


3 - أَبُوْ حَنِيْفَةَ: عَنْ حَمَّادٍ، عَنْ إِبْرَاهِيْمَ، عَنْ عَلْقَمَةَ، عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ مَسْعُوْدٍ ، قَالَ: جَاءَ جِبْرِيْلُ إِلَى النَّبِيِّ  فِيْ صُوْرَةِ شَابٍّ عَلَيْهِ ثِيَابٌ بِيْضٌ، فَقَالَ: اَلسَّلَامُ عَلَيْكَ يَا رَسُوْلَ اللهِ! قَالَ رَسُوْلُ اللهِ : «وَعَلَيْكَ السَّلَامُ»، فَقَالَ: يَا رَسُوْلَ اللهِ أَدْنُوْ؟ فَقَالَ: «اُدْنُهْ»، فَقَالَ: يَا رَسُوْلَ اللهِ! مَا الْإِيْمَانُ؟ فَقَالَ: «اَلْإِيْمَانُ بِاللهِ، وَمَلَائِكَتِهِ، وَكُتُبِهِ، وَرُسُلِهِ، وَالْقَدْرِ خَيْرِهِ وَشَرِّهِ». قَالَ: صَدَقْتَ، فَعَجِبْنَا لِقَوْلِهِ: صَدَقْتَ، كَأَنَّهُ يَدْرِيْ!

ثُمَّ قَالَ: يَا رَسُوْلَ اللهِ! فَمَا شَرَائِعُ الْإِسْلَامِ؟ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ : «إِقَامُ الصَّلَاةِ، وَإِيْتَاءُ الزَّكَاةِ، وَصَوْمُ رَمَضَانَ، وَغُسْلُ الْـجَنَابَةِ»، قَالَ: صَدَقْتَ، فَعَجْبِنَا لِقَوْلِهِ: صَدَقْتَ، كَأَنَّهُ يَدْرِيْ! ثُمَّ قَالَ: فَمَا الْإِحْسَانُ؟ قَالَ: «أَنْ تَعْمَلَ لِلهِ كَأَنَّكَ تَرَاهُ، فَإِنْ لَـمْ تَكُنْ تَرَاهُ فَإِنَّهُ يَرَاكَ»، قَالَ: صَدَقْتَ. قَالَ: فَمَتَىٰ قِيَامُ السَّاعَةِ؟ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ : «مَا الْـمَسْئُوْلُ عَنْهَا بِأَعْلَمَ مِنَ السَّائِلِ». فَقَفَّىٰ، فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ : «عَلَيَّ بِالرَّجُلِ»، فَطَلَبْنَا، فَلَـمْ نَرَ لَهُ أَثَرًا، فَأَخْبَرْنَا النَّبِيَّ ، فَقَالَ: «ذَلِكَ جِبْرِيْلُ ، جَاءَكُمْ يُعَلِّمُكُمْ مَعَالِـمَ دِيْنِكُمْ».


৩. অনুবাদ: আবু হানিফা হাম্মাদ থেকে, তিনি ইব্রাহীম থেকে, তিনি আলকামা থেকে, তিনি আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (رضي الله عنه) থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, হযরত জিব্রাঈল (عليه السلام) শুভ্র পোশাক পরিধান করে এক যুবকের রূপ ধারণ করে রাসূল (ﷺ)  এর খেদমতে এসে বলেন, আসসালামু আলাইকা ইয়া রাসূলাল্লাহ, উত্তরে রাসূল (ﷺ)  বললেন, ওয়া আলাইকাস সালাম। অতঃপর বলল, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি কি কাছে আসতে পারি? তিনি বললেন, এসো, তারপর বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! ঈমান কি? তিনি বললেন, ঈমান হল আল্লাহ ও তাঁর ফেরেস্তাগণের, তাঁর কিতাব সমূহের, তাঁর রাসূলগণের উপর এবং তাকদীরের ভাল-মন্দের উপর বিশ্বাস করা। লোকটি বলল, আপনি সত্য বলেছেন। তাঁর সত্যায়নে আমাদেরকে অবাক করে দিল। কেননা, এতে বুঝা গেল যে, এগুলো সে পূর্ব থেকেই জানত।

তারপর লোকটি জিজ্ঞাসা করল ইসলামী শরীয়ত কি? উত্তরে তিনি বলেন, সালাত কায়েম করা, যাকাত আদায় করা, রমযান মাসে রোযা রাখা, নাপাক হলে গোসল করা। লোকটি বলল আপনি ঠিক বলেছেন। তার ঠিক বলা কথাটি আমাদেরকে অবাক করে দিল। কেননা এতে বুঝা গেল যে, সে এর উত্তর পূর্ব থেকেই জ্ঞাত ছিল। তারপর বলল, ইহসান কি? উত্তরে রাসূল (ﷺ)  বললেন তুমি এমনভাবে আমল করবে যেন তুমি আল্লাহকে দেখতেছ। যদি এতটুকু সম্ভব না হয় তবে কমপক্ষে এতটুকু বিশ্বাস রাখতে হবে যে, তিনি তোমাকে দেখতেছেন। লোকটি পুনরায় বলল, আপনি সত্য বলেছেন। সে আবার জিজ্ঞাসা করল, কিয়ামত কখন আসবে? এতে রাসূল (ﷺ)  বললেন, এ সম্পর্কে যাকে জিজ্ঞাসা করা হচ্ছে, তিনি জিজ্ঞাসাকারী অপেক্ষা বেশী জ্ঞাত নহে। অতঃপর লোকটি চলে গেলে রাসূল (ﷺ)  উপস্থিত লোকদেরকে বললেন, তাকে একটু ডেকে আন। আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (رضي الله عنه) বলেন, আমরা তাকে খুঁজতে বের হলাম কিন্তু তার কোন হদিস পেলাম না এবং ফিরে এসে তাকে না পাওয়ার কথা তাঁকে বললাম। তখন রাসূল (ﷺ)  বললেন, ইনি ছিলেন হযরত জিব্রাঈল (আ)। তিনি তোমাদেরকে তোমাদের দ্বীন শিক্ষা দেওয়ার জন্য এসেছিলেন।

 
Top