১৪- بَابُ مَا جَاءَ فِيْ رَمِيِ الْـجِمَارِ

٢٤٩- أَبُوْ حَنِيْفَةَ: عَنْ سَلَمَةَ، عَنِ الْـحَسَنِ الْعُرَنِيِّ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ ، عَنِ النَّبِيِّ ، أَنَّهُ عَجَّلَ ضَعَفَةَ أَهْلِهِ، وَقَالَ لَـهُمْ: «لَا تَرْمُوْا جَمْرَةَ الْعَقَبَةِ حَتَّىٰ تَطْلُعَ الشَّمْسُ».


বাব নং ১১২. ১৪. কংকর নিক্ষেপ প্রসঙ্গে


২৪৯. অনুবাদ: ইমাম আবু হানিফা সালমা থেকে, তিনি হাসান থেকে, তিনি ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه) থেকে বর্ণনা করেন, নবী করিম (ﷺ)  স্বীয় পরিবারের দুর্বলদেরকে (মহিলা, শিশু, বৃদ্ধা ও অসুস্থদেরকে) দ্রুত পাঠিয়ে দিয়ে বললেন- সূর্য উদয় না হওয়া পর্যন্ত তোমরা জামরায়ে আকাবায় কংকর নিক্ষেপ করোনা। 

(জামেউল আহাদীস, ৪১/৪৪৯/৪৫৭৫৪)


ব্যাখ্যা: এই আমলের মধ্যে হেকমত হল- ভিড়ের আগেই যেন কংকর নিক্ষেপ থেকে অবসর নিতে পারে। কারণ দুর্বলদের জন্য ভিড়ের মধ্যে কংকর নিক্ষেপ অধিক কষ্টকর।


٢٥٠- أَبُوْ حَنِيْفَةَ: عَنْ حَمَّادٍ، عَنْ سَعِيْدِ بْنِ جُبَيْرٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ ، قَالَ: بَعَثَ رَسُوْلُ اللهِ  ضَعَفَةَ أَهْلِهِ، وَقَالَ لَـهُمْ: «لَا تَرْمُوْا جَمْرَةَ الْعَقَبَةِ حَتَّىٰ تَطْلُعَ الشَّمْسُ».


২৫০. অনুবাদ: ইমাম আবু হানিফা হাম্মাদ থেকে, তিনি সাঈদ ইবনে জুবাইর থেকে, তিনি ইবনে ওমর (رضي الله عنه) থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, রাসূল (ﷺ)  স্বীয় পরিবারের দুর্বল লোকদেরকে আগে পাঠিয়ে দেন এবং তাদেরকে বলেন- সূর্য উদয় না হওয়া পর্যন্ত তোমরা জামরায়ে আকাবায় কংকর নিক্ষেপ করবে না। 

(প্রাগুক্ত)


ব্যাখ্যা: হানাফী মাযহাব মতে রাতে কংকর নিক্ষেপ করা জায়েয নয়। এভাবে তাওয়াফে ইফাযা সুবাহ সাদিকের আগে জায়েয নয়। ইমাম মালিক (رحمة الله)ও এই মত পোষণ করেন। কিন্তু শাফেঈ ও হাম্বলী মাযহাবে অর্ধরাতের পর কংকর নিক্ষেপ করা যায়েয। উপরোক্ত দু’টি হাদিস হানাফী ও মালিকী মাযহাবের উপর বুঝায়।


٢٥١- أَبُوْ حَنِيْفَةَ: عَنْ عَطَاءٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ ، أَنَّ النَّبِيَّ  لَبَّىٰ حَتَّىٰ رَمَىٰ جَمْرَةَ الْعَقَبَةِ. وَفِيْ رِوَايَةٍ: عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ ، أَنَّ النَّبِيَّ  أَرْدَفَ الْفَضْلَ بْنَ عَبَّاسٍ، وَكَانَ غُلَامًا حَسَنًا، فَجَعَلَ يُلَاحِظُ النِّسَاءَ، وَالنَّبِيُّ  يَصْرِفُ وَجْهَهُ، فَلَبَّىٰ حَتَّىٰ رَمَىٰ جَمْرَةَ الْعَقَبَةِ. وَفِيْ رِوَايَةٍ: عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ ، عَنِ الْفَضْلِ أَخِيْهِ، أَنَّ النَّبِيَّ  لَـمْ يَزَلْ يُلَبِّيْ حَتَّىٰ رَمَىٰ جَمْرَةَ الْعَقَبَةِ.


২৫১. অনুবাদ: ইমাম আবু হানিফা আতা থেকে, তিনি ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه) থেকে বর্ণনা করেন, নবী করিম (ﷺ)  জামারায়ে আকাবায় কংকর নিক্ষেপ করা পর্যন্ত তালবিয়া পাঠ করতেন।


অপর এক রেওয়ায়েতে ইবনে আব্বাস (رحمة الله) থেকে বর্ণিত আছে, ফযল ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه) কে নবী করিম (ﷺ)  তাঁর সওয়ারীর পিছনে বসালেন। তিনি একজন সুদর্শন যুবক ছিলেন। তিনি মহিলাদের দিকে তাকালে রাসূল (ﷺ)  তাঁর চেহারা ফিরিয়ে দেন। অতঃপর জামারায়ে আকাবায় কংকর নিক্ষেপ পর্যন্ত তালবিয়া পাঠ করেন।


অন্য এক রেওয়ায়েতে আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه) স্বীয় ভাই ফযল ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه) থেকে বর্ণনা করেন, নবী করিম (ﷺ)  জামারায়ে আকাবায় কংকর নিক্ষেপ পর্যন্ত তালবিয়া পাঠ করতেন। 

(বুখারী, ১/২২৮/১৫৮০ ও প্রাগুক্ত, ৪৫/৪৯৭/৩৮৬১১)


ব্যাখ্যা: হাজীগণ তালবিয়া কতক্ষণ পর্যন্ত পাঠ করবে এই নিয়ে ইমামগণের মধ্যে মতবিরোধ আছে। ইমাম আবু হানিফা শাফেঈ, সুফিয়ান সওরী, জমহুর সাহাবী ও তাবেঈ এবং মিশরের ফকীহগণের মত হলো- নহরের দিন তথা যিলহজ্বের দশ তারিখের সকালে কংকর নিক্ষেপের পূর্বে পর্যন্ত তালবিয়া পাঠ করবে। কংকর নিক্ষেপ আরম্ভ করার সাথে সাথে বন্ধ করে দিতে হবে। হাসান বসরী (رحمة الله) বলেন, আরাফার দিন ফজরের নামায পর্যন্ত পাঠ করবে এরপর বন্ধ করে দিবে। হযরত আলী, ইবনে ওমর, আয়েশা (رضي الله عنه), ইমাম মালিক (رحمة الله) ও মদীনার ফকীহগণের মাযহাব হলো- আরফার দিন সূর্য পশ্চিমাকাশে ঢলে পড়া পর্যন্ত তালবিয়া পাঠ করবে। আরাফার অবস্থান আরম্ভ হওয়ার পর আর পাঠ করবেনা। ইমাম আহমদ, ইসহাক (رحمة الله) ও কোন কোন পূর্ববর্তী আলেমগণের ধারণা হলো-জামারায়ে আকাবায়ে কংকর নিক্ষেপ থেকে অবসর না হওয়া পর্যন্ত পাঠ করবে। উপরোক্ত হাদিস হানাফী শাফেঈ ও জমহুর ওলামাদের দলীল, আরো অন্যান্য হাদিসও রয়েছে। তবে বিরোধী পক্ষের নিকট গ্রহণযোগ্য কোন দলীল নেই। উপরোক্ত হাদিসের শেষে উলে­খিত শব্দ لم يزل দ্বারা ইমাম আহমদ ও ইসহাক (رحمة الله)’র মাযহাব প্রমাণ করে বলে মনে হয়। কিন্তু নাসাঈ শরীফের বর্ণনা فاذا رمى قطع التبلبية “প্রথম কংকর নিক্ষেপের সাথে সাথে তালবিয়া পাঠ বন্ধ করতে হবে।” দ্বারা উক্ত সন্দেহ দূরীর্ভূত করেছে।
 
Top