১৩- بَابُ مَا جَاءَ فِي الْـجَمْعِ بِعَرَفَةَ

٢٤٦- أَبُوْ حَنِيْفَةَ: عَنْ يَحْيَىٰ بْنِ أَبِيْ حَيَّةَ أَبِيْ جُنَابٍ، عَنْ هَانِئِ بْنِ زَيْدٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ ، قَالَ: أَفَضْنَا مَعَهُ مِنْ عَرَفَاتٍ، فَلَـمَّا نَزَلْنَا جَمْعًا أَقَامَ، فَصَلَّيْنَا الْـمَغْرِبَ مَعَهُ، ثُمَّ تَقَدَّمَ فَصَلَّىٰ رَكْعَتَيْنِ، ثُمَّ دَعَا بِمَاءٍ، فَصَبَّ عَلَيْهِ، ثُمَّ أَوَى الَىٰ فِرَاشِهِ، فَقَعَدْنَا نَنْتَظِرُ الصَّلَاةَ طَوِيْلًا، ثُمَّ قُلْنَا: يَا أَبَا عَبْدِ الرَّحْمٰنِ! الصَّلَاةَ، فَقَالَ: أَيُّ صَلَاةٍ؟ فَقُلْنَا: الْعِشَاءُ الْآخِرَةُ، فَقَالَ: أَمَّا كَمَا صَلَّىٰ رَسُوْلُ اللهِ ، فَقَدْ صَلَّيْتُ. وَفِيْ رِوَايَةٍ: عَنِ ابْنِ عُمَرَ : أَنَّ النَّبِيَّ  جَمَعَ بَيْنَ الْـمَغْرِبِ وَالْعِشَاءِ.


বাব নং ১১১. ১৩. আরফাতে দু‘নামাযকে একত্রে পড়া


২৪৬. অনুবাদ: ইমাম আবু হানিফা ইয়াহিয়া ইবনে আবি হাইয়্যাহ থেকে, তিনি হানী ইবনে যায়েদ থেকে, তিনি ইবনে ওমর (رضي الله عنه) থেকে বর্ণনা করেন, হানী বলেন- আমরা ইবনে ওমর (رضي الله عنه)’র সাথে আরাফাত থেকে ফিরে মুযদালিফায় অবস্থান করি। তিনি ইকামত দিলেন এবং তাঁর সাথে মাগরিবের নামায আদায় করি। অতঃপর তিনি সামনে অগ্রসর হন এবং (এশার) দু‘রাকাত আদায় করেন। এরপর পানি চেয়ে গোসল করেন এবং বিছানায় গিয়ে শুয়ে পড়েন। আমরা নামাযের জন্য দীর্ঘক্ষণ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে থাকি। অবশেষে আমরা বললাম, হে আবু আব্দুর রহমান! নামায। (অর্থাৎ নামাযের জন্য আসুন) তিনি বলেন- কোন নামায? আমরা বললাম- এশার নামায। তিনি বললেন, যেভাবে নবী করিম (ﷺ)  নামায পড়েছেন, আমিও সেভাবে নামায পড়েছি। (অর্থাৎ দু‘নামাযকে একত্রে)

অপর এক রেওয়ায়েতে ইবনে ওমর (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত আছে যে, নবী করিম (ﷺ)  মাগরিব ও এশা একত্রে আদায় করেছেন।


ব্যাখ্যা: হজ্জের সময় মোট দু‘বার দুই নামাযকে একত্রে পড়তে হয়। 

এক, আরফাহ’র দিন যোহর ও আসরকে যোহরের সময় যাকে جمع تقديم বলা হয়। 

দুই. মুযদালিফায় মাগরীব ও এশা‘র নামাযকে এশা‘র ওয়াক্তে আদায় করা যাকে جمع تاخير বলা হয়। 


❏হানাফীদের মতে আরফার ময়দানে দুই নামায একত্রে আদায় করা সুন্নত আর মুযদালিফায় ওয়াজিব। আর অন্যান্য ফুকাহাগণের মতে মুযদালিফায় একত্রীকরণও সুন্নত।


❏ইমাম আবু হানিফা (رحمة الله)’র মতে আরফার ময়দানে যোহর-আসর যোহর ওয়াক্তে এক আযান ও দুই ইকামত দ্বারা আদায় করবে। তারা দলীল হিসেবে হযরত জাবির (رضي الله عنه)’র লম্বা হাদিস পেশ করেন- যাতে রয়েছে-

ثم اذن ثم اقام فصل الظهر ثم اقام فصلى العصر

“অতঃপর আযান দেন তারপর ইকামত দিয়ে যোহরের নামায আদায় করেন। এরপর শুধু ইকামত দিয়ে আসরের নামায আদায় করেন।”  ১৭৯

➥ ইমাম মুসলিম (رحمة الله) (২৬১ হিঃ) সহীহ মুসলিম শরীফ, খন্ড ১ম, পৃষ্ঠাঃ  ৩৯৭, বাবু হাজ্জাতুন নবী  


আর মুযদালিফায় মাগরীব ও এশাকে এশার ওয়াক্তে এক আযান ও এক একামতের মাধ্যমে আদায় করবে। দলীল হিসেবে ইবনে ওমর (رضي الله عنه)’র হাদিস পেশ করেন, যেটি আবু দাউদ শরীফে কিতাবুল মানাসিক ২৬৭ পৃষ্ঠায় উলে­খ আছে। 


٢٤٧- أَبُوْ حَنِيْفَةَ: عَنْ عَدِيٍّ، عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ يَزِيْدَ، عَنْ أَبِيْ أَيُّوْبَ ، قَالَ: صَلَّيْتُ مَعَ رَسُوْلِ اللهِ  الْـمَغْرِبَ وَالْعِشَاءَ فِيْ حَجَّةِ الْوَدَاعِ بِالْـمُزْدَلِفَةِ.


২৪৭. অনুবাদ: ইমাম আবু হানিফা আদী থেকে, তিনি আব্দুল্লাহ ইবনে ইয়াযিদ থেকে, তিনি আবু আইয়ুব (رضي الله عنه) থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, আমি রাসূল (ﷺ) ’র সাথে বিদায় হজ্জে মুযদালিফায় মাগরিব ও এশা (একত্রে) পড়েছি। 

(ইবনে মাজাহ, ২/১০০৫/৩০২০)


ব্যাখ্যা: বুখারী, মুসলিম, নাসাঈ ইবনে মাজাহ এবং ইমাম মুহাম্মদ (رحمة الله) মুয়াত্তা গ্রন্থে এই হাদিস একই সনদে বর্ণিত আছে। 


❏তিবরানী গ্রন্থে জাবির জু‘ফি ও মুহাম্মদ ইবনে আবী লায়লা (رحمة الله)’র সূত্রে এই হাদিস একই সনদে বর্ণিত আছে। তবে এতে باقامة واحدة  শব্দ বেশী আছে যা হানাফী মাযহাবকে সমর্থন করে। কেননা সিকা রাবীর অতিরিক্ত বর্ণনা গ্রহণযাগ্য। আর জাবির জু‘ফির মধ্যে যদিও দুর্বলতা রয়েছে, কিন্তু মুহাম্মদ ইবনে আবী লায়লা (رضي الله عنه)’র সাথে মিলে তার দূর্বলতা দূরীভূত হয়ে গিয়েছে।


٢٤٨- أَبُوْ حَنِيْفَةَ: عَنْ أَبِيْ إِسْحَاقَ، عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ يَزِيْدَ الْـخَطْمِيِّ، عَنْ أَبِيْ أَيُّوْبَ ، أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ  صَلَّى الْـمَغْرِبَ وَالْعِشَاءَ بِجَمْعٍ، بِأَذَانٍ وَإِقَامَةٍ وَاحِدَةٍ.


২৪৮. অনুবাদ: ইমাম আবু হানিফা আবু ইসহাক থেকে, তিনি আব্দুল্লাহ ইবনে ইয়াযিদ থেকে, তিনি আবু আইয়ুব (رضي الله عنه) থেকে বর্ণনা করেন, রাসূল (ﷺ)  (মুযদালিফায়) এক আযান এবং এক ইকামতে মাগরিব ও এশার নামায আদায় করেন।


ব্যাখ্যা: এই হাদিসও হানাফী মাযহাবকে সুদৃঢ় করে। 

(প্রাগুক্ত)

 
Top