সায়্যিদুনা জাবের বিন সামুরা (رضي الله عنه)'র আক্বিদা


নবুওয়াত প্রকাশের পূর্বে পাথরের সালাম করাঃ-


❏সায়্যিদুনা জাবির বিন সামুরা (رضي الله عنه) বর্ণনা করেন, রাসূলে পাক (ﷺ) ইরশাদ করেন-


إِنِّي لَأَعْرِفُ حَجَرًا بِمَكَّةَ كَانَ يُسَلِّمُ عَلَيَّ قَبْلَ أَنْ أُبْعَثَ إِنِّي لَأَعْرِفُهُ الْآنَ


-‘‘আমি মক্কায়ে মুর্কারামার ঐ পাথরকে চিনি যা নবুয়ত প্রকাশের পূর্বে আমাকে সালাম করতো। এ পাথরকে আমি এখনো চিনি।’’  ২৪৩

{২৪৩. সহীহ মুসলিম শরীফ, ৪/১৭৮২পৃ. হা/২২৭৭, ফাযায়েল অধ্যায়, পরিচ্ছেদ: بَابُ فَضْلِ نَسَبِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَتَسْلِيمِ الْحَجَرِ عَلَيْهِ قَبْلَ النُّبُوَّةِ। ইমাম খতিব তিবরিযি, মিশকাত, ৩/১৬২৯ পৃ. হা/৫৮৫৩, পরিচ্ছেদ: بَاب عَلَامَات النُّبُوَّة}


আক্বিদা

নুবুওয়াত প্রকাশের পূর্বে পাথর জানতো যে, তিনি (ﷺ) আল্লাহর রাসূল। এবং যে সব ব্যক্তি এই আক্বিদা পোষণ করে যে, “নাবী কারিম (ﷺ) চলি­শ বছর পর অবগত হলেন যে, তিনি আল্লাহর রাসূল।” স্পষ্টত তারা ভ্রান্ত ও ভুলের মধ্যে রয়েছে। 

এটাও বুঝা গেল যে, রাসূল (ﷺ) জড় বস্তুর আওয়ায শুনেন এবং নুবুওয়াত প্রকাশের পূর্বেই শুনেছেন। আর এটা ইরহাসাতের অন্তর্ভুক্ত। ব্যাখ্যাকারগণ বলেছেন, পাথরটি ছিল “হাজারে আসওয়াদ”। 


❏কবি বলেন- 


بهتر كريں سلام اور شجر كر يں

معلوم ان كا  مرتبہ كيا ہم بشر كر يں


-“পাথর এবং গাছপালা তাঁকে সালাম করে

আমাদের (মানুষের) উচিত তাঁর মর্যাদা কত তা উপলব্ধি করা।’’





হাত মুবারকঃ-

সায়্যিদুনা জাবির বিন সামুরা (رضي الله عنه) বর্ণনা করেন যে, একদা আমি রাসূল (ﷺ)’র পেছনে যুহরের নামায আদায় করলাম। অতঃপর তিনি হুজ্রা মুবারকে যাচ্ছিলেন, আমিও তাঁর সাথে গেলাম।

ইত্যবসরে আমাদের সামনে কিছু বাচ্চা আসল। রাসূল (ﷺ) তাদের মুখমন্ডলে হাত মুবারাক মালিশ করলেন। তারপর আমার মুখমন্ডলে তাঁর হাত মুবারাক মালিশ করলেন, 


فَوَجَدْتُ لِيَدِهِ بَرْدًا أَوْ رِيحًا كَأَنَّمَا أَخْرَجَهَا مِنْ جُؤْنَةِ عَطَّارٍ


-‘অতঃপর আমি তাঁর (ﷺ)’র হাত মুবারাক থেকে এমন ঠান্ডা এবং সুগন্ধি অনুভব করলাম, যেন তাঁর হাত মুবারাক আতরের ডিবি থেকে বের করলেন।’  ২৪৪

{২৪৪. 

ক. সহীহ মুসলিম শরীফ, ৪/১৮১৪ পৃ. হা/২৩২৯, পরিচ্ছেদ: بَابُ طِيبِ رَائِحَةِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَلِينِ مَسِّهِ وَالتَّبَرُّكِ بِمَسْحِهِ 

খ. খতিব তিবরিযি, মিশকাত শরীফ, ৩/১৬১২পৃ: হা/৫৭৮৯, পরিচ্ছেদ: بَابِ أَسْمَاءِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَصِفَاته।}


আক্বিদা

নবী পাক (ﷺ)’র আপাদমস্তক মু‘জিযা ছিল। তাঁর শরীর মুবারাক ছিল উপমাহীন এবং দৃষ্টান্তহীন। তাঁর (ﷺ)’র পবিত্র শরীর মুবারক থেকে সুগন্ধি বের হত, এটা তাঁর স্বভাবগত বৈশিষ্ট্য।  ২৪৫

{২৪৫. শরহে মুসলিম নববী, ২য় খণ্ড, পৃ: ২৫৬।}


❏বুখারী শারিফের ব্যাখ্যাকার আল্লামা কাস্তাল্লানী এবং আল্লামা মুহাম্মদ বিন আবদুল বাকী (رحمة الله) রাসূলে আকরাম (ﷺ)’র সম্মানিত আম্মাজান আমেনা (رضي الله عنه)’র ইরশাদ মুবারক নকল করেন এভাবে- 


قَالَتْ ثُمَّ نَظَرْتُ إِلَيْهِ فَإِذَا بِهِ كَالْقَمَرِ لَيْلَةَ الْبَدْرِ وَرِيْحُهُ يَسْطَعُ كَالْمِسْكِ الْإَذْفَرِ


-“হযরত আমেনা (رضي الله عنه) বলেন, যখন হুজুর (ﷺ)’র বেলাদত মুবারক হল, তখন আমি দেখেছি যে, তাঁর সৌন্দর্য এবং শোভা এমন ছিল যেন, চৌদ্দ তারিখের পূর্ণিমার চাঁদ। আর তাঁর শরীর মুবারক থেকে এমন সুগন্ধি বের হত, যেন অতি উত্তম কস্তুরীর থেকে বের হয়।  ২৪৬

{২৪৬. মাওয়াহিবুল্লা দুন্নিয়া, ১ম খণ্ড, পৃ: ৭৭, ইমাম যুরকানী আ’লাল মাওয়াহিব, ১ম খণ্ড, পৃ: ২১৫।}

 
Top