সায়্যিদুনা ছাওবান (رضي الله عنه)'র আক্বিদা


ত্রিশ দাজ্জাল

সায়্যিদুনা ছাওবান (رضي الله عنه) বর্ণনা করেন যে, রাসূল (ﷺ) ইরশাদ করেন, ততক্ষণ পর্যন্ত আমার উম্মাতের জন্য মুশরিক সম্প্রদায়ের সাথে সম্পৃক্ত হবে না যতক্ষণ না তারা ভুতের ইবাদত করবে, আর ততক্ষণ পর্যন্ত কিয়ামত হবে না। তিনি আরও বলেন-


سَيَكُونُ فِي أُمَّتِي ثَلاَثُونَ كَذَّابُونَ كُلُّهُمْ يَزْعُمُ أَنَّهُ نَبِيٌّ وَأَنَا خَاتَمُ النَّبِيِّينَ لاَ نَبِيَّ بَعْدِي


-‘অচিরেই আমার উম্মাতের মধ্যে ত্রিশজন মিথ্যুক হবে, যাদের প্রত্যেকে নুবুওয়াতের দাবী করবে। আমি শেষ নাবী, আমার পর কোন নাবী আসবে না।’  ২৪৭

{২৪৭. ইমাম তিরমিযি, আস-সুনান, ৪/৬৯ পৃ. হা/২২১৯, পরিচ্ছেদ: بَابُ مَا جَاءَ لاَ تَقُومُ السَّاعَةُ حَتَّى يَخْرُجَ كَذَّابُونَ, ইমাম তিরমিযি (رحمة الله) বলেন- هَذَا حَدِيثٌ صَحِيحٌ -‘‘এই হাদিসটি সহীহ।’’}


আক্বিদা

নবী পাক ছাহিবে লাওলাক হযরত মুহাম্মাদ (ﷺ) কে আল্লাহ তা‘আলা গায়বের ইল্ম দিয়েছেন। এজন্যই তো তিনি ইরশাদ করেছেন, আমার উম্মাত থেকে ত্রিশজন মিথ্যুক হবে। অতঃপর তারা যে দাবি করবে তার জ্ঞানও রয়েছে। এরূপ অদৃশ্যের সংবাদ যিনি দেন, তিনিই নাবী। 

অতঃপর রাসূল (ﷺ)’র এ ইল্মও রয়েছে যে, আমার পরে আর কোন নাবী নেই। এর ঘোষণাও দিয়েছেন। এই হাদিসের উপর গভীর দৃষ্টি দিলে একথা প্রতিভাত হয়ে, খতমে নুবুওয়াতের উপর যে বিশ্বাস রাখে তারা রাসূল (ﷺ)’র ইলমে গায়বের উপর বিশ্বাস রাখা জরুরি। কেননা খতমে নুবুওয়াতের ব্যাপারে নাবী (ﷺ) এর যতগুলো বাণী রয়েছে, সবগুলোই হুযুর (ﷺ)’র ইলমে গায়ব প্রকাশের বিষয়টি দিবালোকের মত স্পষ্ট।

দুনিয়ার পূর্ব থেকে পশ্চিম সবই চোখের সামনে ২৪৮

{২৪৮. সম্পাদক কর্তৃক সংযোজিত।}


❏মিশকাত শরীফের ‘ফাযায়েলে সায়্যিদুল মুরসালীন’ শীর্ষক অধ্যায়ে ‘মুসলিম শরীফের’ বরাত দিয়ে হযরত ছাওবান (রাদিআল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণনা করা হয়েছে-


إِنَّ اللهَ زَوَى لِي الْأَرْضَ، فَرَأَيْتُ مَشَارِقَهَا وَمَغَارِبَهَا


-‘‘আল্লাহ তা‘য়ালা আমার সম্মুখে গোট পৃথিবীকে এমনভাবে সঙ্কুচিত করে দিয়েছেন যে, আমি পৃথিবীর পূর্বপ্রান্ত ও পশ্চিমপ্রান্ত সমূহ স্বচক্ষে অবলোকন করেছি।’’ ২৪৯

{২৪৯. মুসলিমঃ আস-সহিহঃ কিতাবুল ফিতানঃ ২/৩৯০পৃ. মুসলিমঃ আস-সহিহঃ ৪/২২১৬ হাদিসঃ ২৮৮৯, বায্যারঃ আল-মুসনাদঃ ৮/৪১৩-৪১৪ হাদিসঃ ৩৪৮৭, ইবনে মাজাহঃ আস-সুনানঃ হাদীসঃ ৩৯৫২, আবু দাউদঃ আস-সুনানঃ কিতাবুল ফিতানঃ ৪/৯৫ হাদিসঃ ৪২৫২, ইমাম আহমদঃ আল-মুসনাদঃ ৫/২৮৪ হাদিসঃ ২২৫০, আবু দাউদঃ আস-সুনানঃ ৪/৯৭ পৃ. হাদিসঃ ৪২৫২, মুসলিমঃ আল-সহীহঃ হাদিসঃ ২৮৮৯}


আক্বিদা

এ হাদিসের ব্যাখ্যায় আল্লামা মোল্লা আলী কারী (رحمة الله) তাঁর ‘মিরকাত শরহে মিশকাত এবং শরহে শিফা নামক কিতাবে লিখেন-


وَحَاصِلُهُ أَنَّهُ طَوَى لَهُ الْأَرْضَ وَجَعَلَهَا مَجْمُوعَةً كَهَيْئَةِ كَفٍّ فِي مِرْآةِ نَظَرِهِ، وَلِذَا قَالَ: فَرَأَيْتُ مَشَارِقَهَا وَمَغَارِبَهَا أَيْ: جَمِيعَهَا  وَطَوَاهَا بِتَقْرِيْبِ بَعِيْدِهَا اِلَى قُرِيْبِهَا حَتَّى اِطَّلَعْتُ عَلَى مَا فِيْهَا جميعها


-‘‘এ হাদিসের সারমর্ম হচ্ছে, হুযুর আলাইহিস সালামের জন্য পৃথিবীকে সঙ্কুচিত করে দেয়া হয় এবং এমনভাবে একত্রিত করে দেয়া হয়, যেন কেউ এক হাতে আয়না নিয়ে সম্পূর্ণ আয়নাকে দেখছেন। যমীনকে এমনভাবে একত্রিত করে দেয়া হয়, যাতে দূরবর্তী অংশ নিকটবর্তী অংশের একেবারে কাছাকাছি দৃষ্টিগোচর হয়। ফলে পৃথিবীতে যা’ কিছু আছে সবকিছুই রাসূল (ﷺ) দেখতে পেয়েছেন ।’’ ২৫০

{২৫০. আল্লামা মোল্লা আলী ক্বারী, মেরকাত শরহে মিশকাত, ৯/৩৬৭৭ পৃ. হা/৫৭৫০, ,দারুল ফিকর ইলমিয়্যাহ, বয়রুত, লেবানন এবং শরহে শিফা, ১/৬৮৩ পৃ. দারুল কুতুব ইলমিয়্যাহ, বয়রুত, লেবানন। ইমাম জুরকানীঃ শরহুল মাওয়াহেবঃ ১০/১২৩পৃ. দারুল কুতুব ইলমিয়্যাহ, বয়রুত, লেবানন, প্রকাশ.১৪১৭হি.}

 
Top