বারকতের জন্য নবজাতককে বুজুর্গদের নিকট নিয়ে যাওয়া:


❏সায়্যিদাতুনা আয়িশা (رضي الله عنه) বর্ণনা করেন, 


أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يُؤْتَى بِالصِّبْيَانِ فَيُبَرِّكُ


রাসূলে পাক (ﷺ)-এর খিদমতে লোকেরা নিজেদের নবজাতককে বরকতের জন্য নিয়ে আসতেন। রাসূলে পাক (ﷺ) তাদের জন্য দু‘আ করতেন এবং কোন কিছু চিবিয়ে তাদের মুখে দিতেন। ৩১০

{৩১০. সহীহ মুসলিম শরীফ, ১/২৩২, হা/২৮৬, ইমাম বায়হাকী, আস-সুনানুল কোবরা, ২/৫৮১ পৃ. হা/৪১৫৩, মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বাহ, ৫/৩৭ পৃ. হা/২৩৪৮৪, ইমাম বাগভী, শরহে সুন্নাহ, ১১/২৭২ পৃ. হা/২৮২১, ইমাম সুয়ূতি, জামেউস সগীর, ৫/১৯২ পৃ. হা/৯০০৭, ইবনে আছির, জামেউল আহাদিস, ১/৩৮৩ পৃ. হা/১৭৫, মুত্তাকী হিন্দী, কানযুল উম্মাল, ৭/১৫৪ পৃ. হা/১৮৪৮৯, খতিব তিবরিযি, মিশকাত, ২/১২০৭ পৃ. হা/৪১৫০}


আক্বিদা

নবজাতককে বুজুর্গদের কাছে বরকত অর্জনের জন্য নিয়ে যাওয়া সাহাবাগণের (رضي الله عنه) সুন্নাত এবং নবজাতকের মুখে চর্বনকৃত কোন কিছু দেয়াও সুন্নাত।

নামাযে নবী (ﷺ)-এর খিয়াল এবং তা’যিম


উম্মুল মু’মিনিন হযরত সায়্যিদাতুনা আয়িশা (رضي الله عنه) বর্ণনা করেন, রাসূলে পাক (ﷺ) অসুস্থতা অনুভব করেন, হযরত বিলাল (رضي الله عنه) তাঁকে নামাযের জন্য ডাকতেন আসলে তিনি বললেন-


مُرُوا أَبَا بَكْرٍ فَلْيُصَلِّ بِالنَّاسِ


আবূ বকর (رضي الله عنه) কে বলুন, তিনি যেন সাহাবাদের নিয়ে নামায আদায় করেন। হযরত আয়িশা (رضي الله عنه) বলেন, আমি আরয করলাম, 


إِنَّ أَبَا بَكْرٍ رَجُلٌ أَسِيفٌ


‘আবু বকর (رَجُلٌ أَسِيفٌ) কোমল হৃদয়ের অধিকারী, তিনি আপনার স্থানে যখন দাঁড়াবেন, লোকেরা কুরআনের আওয়ায শুনবে না। হযরত ওমর (رضي الله عنه) কে আদেশ দেন যেন তিনি ইমামতি করেন।’ রাসূল (ﷺ) বললেন: 


مُرُوا أَبَا بَكْرٍ فَلْيُصَلِّ بِالنَّاسِ


-‘আবু বকর (رضي الله عنه) কে বল, তিনি যেন নামাযের ইমামতি করেন।’


হযরত আয়িশা (رضي الله عنه) বলেন, পুনরায় আমি হযরত হাফসা (رضي الله عنه)-এর কাছে গিয়ে বললাম, আপনি রাসূল (ﷺ) কে একটু বলুন, হযরত আবূ বকর (رضي الله عنه) কোমল হৃদয়ের অধিকারী। তিনি যখন আপনার স্থানে দাঁড়াবেন, লোকেরা শুনবেনা। হযরত উমর (رضي الله عنه) কে নামাযের ইমামতি করতে বলুন। রাসূলে পাক (ﷺ) বললেন, ‘তোমরা হযরত ইউসুফ (عليه السلام)-এর যামানার মেয়েদের মতো’। আবু বকর (رضي الله عنه) কে বল, তিনি যেন ইমামতি করেন। হযরত আয়িশা (رضي الله عنه) বলেন, লোকেরা তখন হযরত আবূ বকর (رضي الله عنه) কে ইমামতি করার জন্য বললেন।


রাসূল (ﷺ) যখন একটু স্বস্তি অনুভব করলে বাইরে তাশরীফ আনলেন। হযরত আবূ বকর (رضي الله عنه) তখন নামাযের ইমামতি শুরু করে দিলেন। হযরত আয়িশা (رضي الله عنه) বলেন-


فَلَمَّا دَخَلَ الْمَسْجِدَ سَمِعَ أَبُو بَكْرٍ حِسَّهُ، ذَهَبَ يَتَأَخَّرُ، فَأَوْمَأَ إِلَيْهِ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قُمْ مَكَانَكَ


‘রাসূল (ﷺ) মসজিদে প্রবেশ করলে আবূ বকর (رضي الله عنه) তাঁর আগমন অনুভব করেন এবং পেছনে আসতে শুরু করেন। রাসূল (ﷺ) ইশারা করলেন, যেন তিনি তাঁর আপন স্থানে থাকেন। অতঃপর রাসূল (ﷺ) হযরত আবু বকর (رضي الله عنه)-এর বাম পাশে বসে গেলেন।’ হযরত আয়িশা (رضي الله عنه) বলেন-


فَكَانَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُصَلِّي بِالنَّاسِ جَالِسًا وَأَبُو بَكْرٍ قَائِمًا يَقْتَدِي أَبُو بَكْرٍ بِصَلَاةِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَيَقْتَدِي النَّاسُ بِصَلَاةِ أَبِي بَكْرٍ


-‘‘রাসূল (ﷺ) বসে বসে জামা‘আত আদায় করতে লাগলেন, আর আবূ বকর (رضي الله عنه) দাঁড়িয়ে পেছনে এসে রাসূল (ﷺ)-এর ইকতিদা করলেন এবং লোকেরা হযরত আবূ বকর (رضي الله عنه)-এর অনুসরণে নামায আদায় করেন।’’ ৩১১

{৩১১. সহীহ মুসলিম শরীফ,  ১/৩১৩ পৃ. হা/৪১৮, ইমাম তিরমিযি, আস-সুনান, ৬/৫৪ পৃ. হা/৩৬৭২, ইমাম বুখারী, আস-সহীহ, ১/১৩৩ পৃ. হা/৬৬৪}


আক্বিদা

সায়্যিদুনা আবু বকর সিদ্দিক (رضي الله عنه) নামাযের অবস্থায় রাসূলে পাক (ﷺ)-এর তাযিম ও সম্মান করে মুসল্লা থেকে পেছনে চলে আসেন। ইমামতি অবস্থায় হুযুর (ﷺ)-এর অনুসরণে নামায পড়েন। হুযুর (ﷺ) এটা বলেননি যে, আবূ বকর (رضي الله عنه)! ইবাদতের মধ্যে কেন আমার তাযিম করছো? নিষেধ না করাই হচ্ছে জায়িয হওয়ার দলিল।


যেসব লোক নামাযের মধ্যে নবির খেয়াল আসা, যেনা, গরু গাধার খিয়াল থেকেও অধিকতর মন্দ বলে, তাদের উচিত হযরত আবূ বকর (رضي الله عنه)-এর আক্বিদা ইখতিয়ার করা। নামাযের মধ্যে সিদ্দিকে আকবর (رضي الله عنه) নবীজীর (ﷺ) খেয়াল এনে মূলত নবির (ﷺ) তাযিম করেছেন।

 
Top