৭৩- بَابُ مَا جَاءَ فِي الْـجَنَائِزِ

١٨٤- أَبُوْ حَنِيْفَةَ: عَنْ عَلْقَمَةَ، عَنْ ابْنِ بُرَيْدَةَ، عَنْ أَبِيْهِ ، قَالَ: قَالَ رَسُوْلُ اللهِ : «مَا مِنْ مَيِّتٍ يَمُوْتُ لَهُ ثَلَاثٌ مِنَ الْوَلَدِ، إِلَّا أَدْخَلَهُ اللهُ تَعَالَى الْـجَنَّةَ»، فَقَالَ عُمَرُ: أَوِ اثْنَانِ؟ فَقَالَ : «أَوِ اثْنَانِ».


বাব নং ৮৫. ৭৩. জানাযার বর্ণনা


১৮৪. অনুবাদ: ইমাম আবু হানিফা আলকামা থেকে, তিনি ইবনে বুরাইদা থেকে, তিনি তাঁর পিতা থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, রাসূল (ﷺ)  এরশাদ করেন, যদি কারো তিনজন শিশু সন্তান ইন্তেকাল করে, তবে তাকে আল্লাহ তায়ালা জান্নাতে প্রবেশ করাবেন। হযরত ওমর (رضي الله عنه) বলেন, যদি দু‘জন হয়? তখন তিনি বললেন, (হ্যাঁ) দু’জন হলেও।


ব্যাখ্যা: এই হাদিস বিভিন্ন বাক্যের মাধ্যমে সহীহ হাদিস গ্রন্থ সমূহে বর্ণিত আছে। মুসলিম ও ইবনে মাজাহ শরীফে বর্ণিত আছে, যে মুসলমানের তিনজন শিশুসন্তান মৃত্যুবরণ করবে, তারা তাকে বেহেস্তের দরজায় এস্তেকবাল তথা স্বাগত জানাবে। বেহেস্তের আটটি দরজার মধ্যে ইচ্ছানুযায়ী যে কোন দরজা দিয়ে প্রবেশ করতে পারবে। কোন কোন হাদিসে বর্ণিত আছে, দোযখের আগুন তাকে নামেমাত্র স্পর্শ করতে পারবে। কোন কোন হাদিসে আছে ঐ শিশুরা তাকে রক্ষা করার জন্য শক্ত প্রাচীরের ন্যায় হয়ে যাবে।


١٨٥- أَبُوْ حَنِيْفَةَ: عَنْ عَبْدِ الْـمَلِكِ، عَنْ رَجُلٍ مِنْ أَهْلِ الشَّامِ، عَنِ النَّبِيِّ ، قَالَ: «إِنَّكَ لَتَرَى السِّقْطَ مُحْبَنْطَئًا، يُقَالُ لَهُ: ادْخُلِ الْـجَنَّةَ، فَيَقُوْلُ: لَا، حَتَّىٰ يَدْخُلَ أَبَوَايَ».


১৮৫. অনুবাদ: ইমাম আবু হানিফা আব্দুল মালিক থেকে, তিনি শাম দেশের জনৈক ব্যক্তি থেকে, তিনি নবী করিম (ﷺ)  থেকে বর্ণনা করেন, নবী করিম (ﷺ)  বলেছেন, হাশরের দিন তুমি দেখতে পাবে যে, পেটের উপর গড়াগড়ি দিয়ে কোন কোন শিশু যেন কাউকে খুঁজছে। তাকে বলা হবে, তুমি বেহেস্তে চলে যাও। তখন সে বলবে, যতক্ষণ পর্যন্ত আমার পিতা-মাতা বেহেস্তে প্রবেশ করবে না ততক্ষণ আমিও বেহেস্তে প্রবেশ করবো না।


ব্যাখ্যা: তাবরানী কবীরে এই হাদিস বর্ণনা করেছেন। এর শেষে বর্ণিত আছে- فيقال ادخل الجنة انت وابواك “অতঃপর তাকে বলা হবে- তুমি ও তোমার পিতা-মাতা বেহেস্তে প্রবেশ কর।” এটা আল্লাহর অশেষ কৃপা যে, তিনি অপ্রাপ্ত বয়স্ক মৃত শিশু সন্তানকে মুক্তির উপায় করে দিয়েছেন। কোন হাদিসে তিনজন, কোন হাদিসে দু’জন আবার কোন হাদিসে একজনের কথা বলা হয়েছে। অর্থাৎ কারো একজন শিশু সন্তানও যদি মৃত্যুবরণ করে, তবে সে পিতা-মাতার নাজাতের উসিলা হবে।


١٨٦- أَبُوْ حَنِيْفَةَ: عَنْ سُلَيْمَانَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمٰنِ الدّمَشْقِيِّ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمٰنِ الْتُّسْتُرِيِّ، عَنْ يَحْيَىٰ بْنِ سَعِيْد، عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَامِرٍ، عَنْ أَبِيْهِ، قَالَ: قَالَ رَسُوْلُ اللهِ : «إِذَا مَاتَ الْعَبْدُ، وَاللهُ يَعْلَمُ مِنْهُ شَرًّا، وَيَقُوْلُ النَّاسُ فِيْ حَقِّهِ خَيْرًا، قَالَ اللهُ تَعَالَىٰ لِـمَلَائِكَتِهِ: قَدْ قَبِلْتُ شَهَادَةَ عِبَادِيْ عَلَىٰ عَبْدِيْ، وَغَفَرْتُ عِلْمِيْ».


১৮৬. অনুবাদ: ইমাম আবু হানিফা সুলাইমান ইবনে আব্দুর রহমান দামেশ্কী থেকে, তিনি মুহাম্মদ ইবনে আব্দুর রহমান তুসতুরী থেকে, তিনি ইয়াহিয়া ইবনে সাঈদ থেকে, তিনি আব্দুল্লাহ ইবনে আমের থেকে, তিনি তাঁর পিতা আমের থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, রাসূল (ﷺ)  এরশাদ করেন, যখন কোন বান্দা মৃত্যুবরণ করে এবং আল্লাহ তার মন্দ আমল সম্পর্কে জ্ঞাত আছেন। কিন্তু লোকজন তাকে ভাল বলে আলোচনা করে থাকে, তখন আল্লাহ স্বীয় ফেরেস্তাদেরকে বলেন যে, আমি এই বান্দার উপর আমার অন্যান্য বান্দাদের সাক্ষী গ্রহণ ও কবুল করে নিয়েছি এবং তার গুনাহ ক্ষমা করে দিয়েছি যা আমার জানা রয়েছে। 

(জামেউল আহাদীস, ৪/৬৮/২৭৮৭)


ব্যাখ্যা: উপরোক্ত বিষয়ে কিছু বাক্যের পার্থক্যসহ ছয়টি বিশুদ্ধ হাদিস গ্রন্থে অনেক হাদিস বর্ণিত আছে। তাবরানী হযরত সালমা ইবনুল আকওয়া (رضي الله عنه), মারফু হাদিস বর্ণনা করেছেন- 


 انتم شهداء الله على الارض والملائكة شهداء الله فى السماء 


“তোমরা পৃথিবীতে এবং ফেরেস্তারা আকাশে আল্লাহর সাক্ষী।”  ১৬৮

➥  তাবরানী, (৩৬০ হিঃ), আল মু’জামুল কবীর, খন্ড ৭, পৃষ্ঠাঃ  ২২, হাদীস নং ৬২৫৯


উপরোক্ত হাদীস দ্বারা প্রতীয়মান হয় যে, কোন মানুষ মৃত্যু বরণ করলে তার সম্পর্কে ভাল মন্তব্য করা এবং ভাল বলে সাক্ষ্য দেওয়া উচিত। কেননা আল্লাহ তা’আলা মৃত ব্যক্তির ব্যাপারে জীবিত ব্যক্তিদের সাক্ষ্য কবুল করেন এবং ক্ষমা করে দেন।


١٨٧- أَبُوْ حَنِيْفَةَ: عَنْ إِسْمَاعِيْلَ، عَنْ أَبِيْ صَالِحٍ، عَنْ أُمِّ هَانِئٍ ، قَالَتْ: قَالَ رَسُوْلُ اللهِ : «مَنْ عَلِمَ أَنَّ اللهَ يَغْفِرُ لَهُ، فَهُوَ مَغْفُوْرٌ لَهُ».


১৮৭. অনুবাদ: ইমাম আবু হানিফা ইসমাঈল থেকে, তিনি আবু সালেহ থেকে, তিনি উম্মে হানী (رضي الله عنه) থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, রাসূল (ﷺ)  এরশাদ করেন, যে ব্যক্তি নিশ্চিত বিশ্বাস রাখে যে, আল্লাহ তাকে ক্ষমা করে দেবেন, তাহলে তাকে ক্ষমা করে দেওয়া হয়।


ব্যাখ্যা: বান্দাহ আল্লাহ সম্পর্কে যা ধারণা করেন আল্লাহ তার সাথে সেরূপ আচরণ করেন। তাই প্রত্যেকের উচিত সর্বদা আল্লাহ সম্পর্কে ভাল ধারণা পোষণ করা। ফলে আল্লাহর দয়া, ক্ষমা ইত্যাদির যোগ্য বলে বিবেচিত হবে। 


١٨٨- أَبُوْ حَنِيْفَةَ: عَنْ مَنْصُوْرٍ، عَنْ سَالِمِ بْنِ أَبِي الْـجَعْدِ، عَنْ عُبَيْدِ بْنِ نِسْطَاسٍ، عَنِ ابْنِ مَسْعُوْدٍ ، أَنَّهُ قَالَ: مِنَ السُّنَّةِ أَنْ تُحْمَلَ بِجَوَانِبِ السَّرِيْرِ، فَمَا زَادَ عَلَىٰ ذَلِكَ، فَهُوْ نَافِلَةٌ.


১৮৮. অনুবাদ: ইমাম আবু হানিফা মনসূর থেকে, তিনি সালিম ইবনে আবি জা‘য়াদ থেকে, তিনি উবাইদ ইবনে নিসতাস থেকে, তিনি ইবনে মাসউদ (رضي الله عنه) থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন সুন্নত তরীকা হলো-জানাযার চার পায়া একবার উঠাবে, এরপর যা কিছু অতিরিক্ত করা হবে তা হবে নফল। 

(আল মু’জামুল কবীর, ৯/৩২০/৯৫৯৯)


ব্যাখ্যা: ইমাম আবু হানিফা (رحمة الله)’র মতে চার পায়া বিশিষ্ট জানাযার খাটিয়ার চারটি পা একত্রে উঠাতে হবে। তিনি দলীল হিসাবে উপরোক্ত হাদিস পেশ করেন। সাহাবীর من السنه শব্দ ব্যবহার দ্বারা উক্ত হাদিস মারফু হওয়ার প্রমাণ বহন করে। এছাড়া আরো অনেক হাদিস দ্বারা এই মতের সমর্থন পাওয়া যায়। যেমন ইবনে আবি শায়বা এবং আব্দুর রাজ্জাক তাঁদের গ্রন্থে আওযাঈ (رحمة الله) থেকে বর্ণনা করেছেন, তিনি ইবনে ওমর (رضي الله عنه) কে এমনিভাবে জানাযা উঠাতে দেখেছেন। আব্দুর রাজ্জাক আবু হোরায়রা (رضي الله عنه) থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেছেন, যিনি জানাযাকে চারকোণ থেকে উত্তোলন করেছেন, তিনি তার উপর অর্পিত দায়িত্ব আদায় করেছেন। সুতরাং প্রতীয়মান হয় যে, এটাই একমাত্র সুন্নত পদ্ধতি।


❏জানাযা উঠানোর সুন্নত নিয়ম হলো- প্রত্যেকটি পায়া উঠিয়ে কমপক্ষে দশ কদম চলবে। কেননা ইবনে আসাকির এ বিষয়ে মারফু হাদিস রেওয়ায়েত করেছেন, এর সারমর্ম হলো- যে ব্যক্তি চার দিকে থেকে জানাযা উঠাবে, তার চলি­শটি গুনাহ মাফ হবে। অর্থাৎ প্রতিটি পায়া নিয়ে যখন একজন মানুষ দশ কদম চলবে, তখন প্রতিটি কদমে এক একটি গুনাহ মাফ হবে এবং প্রতিটি পায়ার উপর দশটি গুনাহ হিসাবে চলি­শ কদমে চলি­শটি গুনাহ মাফ হবে।


١٨٩- أَبُوْ حَنِيْفَةَ: عَنْ عَلِيِّ بْنِ الْأَقْمَرِ، عَنْ أَبِيْ عَطِيَّةَ الْوَادِعِيِّ ، أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ  خَرَجَ فِيْ جَنَازَةٍ، فَرَأَى امْرَأَةً فَأَمَرَ بِهَا، فَطُرِدَتْ، فَلَـمْ يُكَبِّرْ حَتَّىٰ لَـمْ يَرَهَا.


১৮৯. অনুবাদ: ইমাম আবু হানিফা আলী ইবনে আকমার থেকে, তিনি আবু আতিয়্যাহ ইবনে ওয়াদায়ী (رضي الله عنه) থেকে বর্ণনা করেন, রাসূল (ﷺ)  একটি জানাযায় বের হলেন। তিনি জানাযার পিছনে একজন মহিলাকে আগমন করতে দেখলেন। তখন তিনি ঐ মহিলাকে জানাযার দল থেকে বের করে দেওয়ার নির্দেশ দিলেন। অতঃপর ঐ মহিলা দৃষ্টির আড়ালে না যাওয়া পর্যন্ত তিনি (জানাযার) তাকবীর বলেন নি।


ব্যাখ্যা: সুনানে বায়হাকী গ্রন্থে হযরত ইবনে ওমর (رضي الله عنه) থেকে মারফু রেওয়ায়েত বর্ণিত আছে, জানাযার পিছনে চলার মধ্যে মহিলাদের কোন সওয়াব নেই। তাবরানী ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه) থেকে মারফু হাদিস বর্ণনা করেন যে, মহিলাদের জন্য জানাযার মধ্যে কোন অংশ নেই।


١٩٠- أَبُوْ حَنِيْفَةَ: عَنْ حَمَّادٍ، عَنْ إِبْرَاهِيْمَ، عَن غَيْرِ وَاحِدٍ، أَنَّ عُمَرَ بْنَ الْـخَطَّابِ  جَمَعَ أَصْحَابَ النَّبِيِّ ، فَسَأَلَـهُمْ عَنِ التَّكْبِيْرِ، قَالَ لَـهُمْ: انْظُرُوْا آخِرَ جَنَازَةٍ كَبَّرَ عَلَيْهَا النَّبِيُّ ، فَوَجَدُوْهُ قَدْ كَبَّرَ أَرْبَعًا حَتَّىٰ قُبِضَ، قَالَ عُمَرُ: فَكَبَّرُوْا أَرْبَعًا.


১৯০. অনুবাদ: ইমাম আবু হানিফা হাম্মাদ থেকে, তিনি ইব্রাহীম থেকে, তিনি একাধিক ব্যক্তি থেকে বর্ণনা করেন, হযরত ওমর ইবনে খাত্তাব (رضي الله عنه) নবী করিম (ﷺ) ’র অনেক সাহাবাকে একত্র করলেন এবং জানাযার তাকবীর সম্পর্কে তাঁদেরকে জিজ্ঞাসা করে বলেন- তোমরা রাসূল (ﷺ) ’র ঐ শেষ জানাযা নামাযকে স্মরণ কর যাতে তিনি অংশ গ্রহণ করেছিলেন এবং ঐ নামাযে তিনি কয়টি তাকবীর বলেছিলেন? সাহাবায়ে কিরাম চিন্তা করে বললেন, তিনি ইন্তেকালের পূর্ব পর্যন্ত চার তাকবীর বলেছেন। তখন হযরত ওমর (رضي الله عنه) জানাযা নামাযে চার তাকবীর বলার জন্য নির্দেশ দান করেন। 

(শরহে মা’আনিউল আসার, ১/৯৯/২৬৩১)


ব্যাখ্যা: চার ইমাম এ বিষয়ে ঐকমত্য পোষণ করেন যে, জানাযার নামাযে চার তাকবীর সঠিক। কারণ অধিকাংশ সাহাবায়ে কিরামের এ বিষয়ে ঐকমত্য রয়েছে। 


❏হাকেম মুস্তাদরাক গ্রন্থে ও আবু নুয়াইম হিলয়া গ্রন্থে ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه) থেকে হাদিস বর্ণনা করেন যে, আদম (আ.)’র উপর নামায পড়ার সময় ফেরেস্তাগণ চার তাকবীর বলেছেন আর বলেছেন- হে বনী আদম! তোমাদের জন্য এটাই সুন্নত।


❏জানাযার তাকবীরের ক্ষেত্রে রাসূল (ﷺ) ’র সর্বশেষ আমল কয় তাকবীর ছিল-এই ব্যাপারে প্রশ্ন উত্থাপনের কারণ হলো- তিনি বাইয়াতে রিদওয়ান ও বদর যুদ্ধে অংশগ্রহণকারীদের জানাযায় নয় তাকবীর এবং যারা শুধু বদর যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন, তাঁদের জানাযায় সাত তাকবীর বলেছিলেন। এছাড়া তিনি সকল জানাযায় চার তাকবীর বলেছেন।


١٩١- أَبُوْ حَنِيْفَةَ: عَنْ شَيْبَانَ، عَنْ يَحْيَىٰ، عَنْ أَبِيْ سَلَمَةَ، عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ ، أَنَّ النَّبِيَّ ، كَانَ يَقُوْلُ إِذَا صَلَّىٰ عَلَى الْـمَيِّتِ: «اَللّٰهُمَّ اغْفِرْ لِـحَيِّنَا وَمَيِّتِنَا، وَشَاهِدِنَا وَغَائِبِنَا، وَصَغِيْرِنَا وَكَبِيْرِنَا، وَذَكَرِنَا وَأُنْثَانَا».


১৯১. অনুবাদ: ইমাম আবু হানিফা শায়বান থেকে, তিনি ইয়াহিয়া থেকে, তিনি আবু সালমা থেকে, তিনি আবু হোরায়রা (رضي الله عنه) থেকে বর্ণনা করেন, নবী করিম (ﷺ)  যখন জানাযার নামায পড়তেন, তখন বলতেন-

اللهم اغفر لحينا وميتنا وشاهدنا وغائبنا وصغيرنا وكبيرنا وذكرنا وانثانا

হে আল্লাহ! তুমি আমাদের জীবতদের, মৃতদের, উপস্থিত, অনুপস্থিত, ছোট, বড়, পুরুষ ও নারীদেরকে ক্ষমা করে দাও।” 

(সুনানে বায়হাকী কুবরা, ৪/৪১/৬৭৬২)


ব্যাখ্যা: অন্য রেওয়ায়েতে অতিরিক্ত এই বাক্য ও আছে-

اللهم من احييته منا فأحييه على الاسلام ومن توفيته منا فتوفه على الايمان 

“হে আল্লাহ আমাদের মধ্যে যাদেরকে জীবিত রেখেছ, তাদেরকে ইসলামের উপর প্রতিষ্ঠিত রাখ, আর আমাদের থেকে যাদেরকে মৃত্যু দেবে তাদেরকে ঈমানের উপর মৃত্যু দাও।”


١٩٢- أَبُوْ حَنِيْفَةَ: عَنْ عَلْقَمَةَ، عَنْ ابْنِ بُرَيْدَةَ، عَنْ أَبِيْهِ ، قَالَ: أُلْـحِدَ لِلنَّبِيِّ ، وَأُخِذَ مِنْ قِبَلِ الْقِبْلَةِ، وَنُصِبَ عَلَيْهِ اللَّبِنُ نَصْبًا.


১৯২. অনুবাদ: ইমাম আবু হানিফা আলকামা থেকে, তিনি ইবনে বুরাইদা থেকে, তিনি তাঁর পিতা বুরাইদা (رضي الله عنه) থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, রাসূল (ﷺ) ’র জন্য লহদ (কবর) তৈরী করা হয়েছিল এবং তাঁকে কিবলার দিকে করে কবরে নামানো হয়েছিল আর তাঁর কবরের উপর কাঁচা ইট স্থাপন করা হয়েছিল।


ব্যাখ্যা: মৃতের জন্য (لحد) বগলী কবর উত্তম না (شق) সিন্ধুকী কবর উত্তম- এ ব্যাপারে হানাফী ও শাফেঈ মাযহাবে মত বিরোধ রয়েছে। ইমাম আবু হানিফা (رحمة الله)’র মতে বগলী কবর আর ইমাম শাফেঈ (رحمة الله)’র মতে সিন্ধুকী কবর উত্তম।


❏ইমাম আবু হানিফা (رحمة الله) স্বীয় মাযহাবের পক্ষে দলীল হিসেবে তিরমিযী শরীফে ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত হাদিস পেশ করেন- اللحد لنا والشق غيرنا “লহদ কবর আমাদের জন্য আর সিন্ধুকী কবর অন্যদের জন্য।” কেননা ইহুদীদের মধ্যে এ ধরনের কবরের প্রচলন ছিল। 

দ্বিতীয় দলীল হলো- রাসূল (ﷺ) ’র জন্য লহদ কবর তৈরী করা হয়েছিল। সুতরাং লহদ কবরের ফযীলতের জন্য এর চেয়ে বড় প্রমাণ আর কি হতে পারে? 

তৃতীয় দলীল হলো- মুসলিম শরীফে বর্ণিত আছে, হযরত সা‘দ ইবনে আবি ওয়াক্কাস (رضي الله عنه) নিজের জন্য লহদ কবর তৈরী করার জন্য অসিয়ত করেছেন। 

সুতরাং উপরোক্ত দলীল দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, লহদ কবর সুন্নত। এর বিপরীত যে সব রেওয়ায়েত রয়েছে তা বিশেষ কোন ওযরের কারণে হয়েছে।

 
Top