পঞ্চদশ অধ্যায়  


হাঁচির  সুন্নাত


দুটি হাদীস শরীফঃ 


(১) আল্লাহ তাআলা হাঁচি পছন্দ করেন এবং হাই তোলাকে অপছন্দ করেন। 


(বুখারী, খন্ড-৪, পৃ-১৬৩, হাদীস নং-৬২২৬)



(২) যখন কারো হাঁচি আসে আর সে “আলহামদুলিল্লাহ” বলে তখন ফিরিশতাগণ “রাব্বুল আলামীন” বলে। যদি সে “রাব্বুল আলামীন” বলে, তবে ফিরিশতাগণ বলেন আল্লাহ তাআলা তোমার উপর দয়া করুন। 


(আল মুজামুল কবীর, খন্ড-১১, পৃ-৩৫৮, হাদীস নং-১২২৮৪)



(৩) হাঁচি আসলে মাথা নিচু করুন, মুখ ঢেকে রাখুন এবং নিম্ন স্বরে বের করুন, উচ্চ স্বরে হাঁচি দেওয়া বোকামী। 


(রদ্দুল মুহতার, খন্ড-৯, হাদীস নং-৬৮৪)



(৪) হাঁচি আসলে “আলহামদুলিল্লাহ” বলা চাই। (খাযাইনুল ইরফান ৩য় পৃষ্ঠায় তাহতাবীর বরাতে লিখেন, হাঁচি আসলে আল্লাহর প্রশংসা করা সুন্নাতে মুআক্কাদা। উত্তম হচ্ছে “আলহামদুলিল্লাহ রাব্বুল আলামীন” কিংবা “আলহামদুলিল্লাহ আলা কুল্লীহাল” বলা।



(৫) শ্রবণকারীর উপর তৎক্ষণাৎ “ইয়ারহামুকাল্লা” (আল্লাহ তোমার উপর দয়া করুন) বলা ওয়াজিব এবং এতটুকু আওয়াজে বলুন যেন হাঁচিদাতা শুনতে পায়। 


(বাহারে শরীয়াত, খন্ড-১৬, পৃ-১১৯)



(৬) উত্তর শুনে হাঁচিদাতা এভাবে বলুন (ইয়াগ্ফিরুল্লাহু লানা ওয়ালাকুম) (অর্থাৎ আল্লাহ তাআলা আমাদের ও আপনাদের ক্ষমা করুন) অথবা এভাবে বলুন (ইয়াহদিইকুমুল্লাহু ওয়া ইয়ুচলিহু বালাকুম) (আল্লাহ তাআলা তোমাদের হিদায়াত দিন ও তোমাদের পরিশুদ্ধি করুন)



(৭) কারো হাঁচি আসলে “আলহামদুলিল্লাহ আলা কুল্লীহাল” বলে এবং নিজের জিহবা সকল দাঁতের উপর প্রদক্ষিণ করায়, তবে ইনশা’আল্লাহ্  দাঁতের রোগ থেকে মুক্ত থাকবে। 


(মিরআতুল মানাজিহ, খন্ড-৬, পৃ-৩৯৬)



(৮) হযরত শেরে খোদা আলী رضي الله عنه বলেন, যে কেউ হাঁচি আসলে “আলহামদুলিল্লাহ আলা কুল্লীহাল” বলে তবে কখনো মাড়ি ও কানের ব্যথায় ভুগবে না। 


(মিরকাতুল মাফাতীহ, খন্ড-৮, পৃ- ৪৯৯, ৪৭৩৯ নং হাদীসের পাদটিকা)



(৯) হাঁচি দাতার উচিত উচু স্বরে “আলহামদুলিল্লাহ” বলা যাতে অন্যরা শুনে এর উত্তর দেয়। 


(রদ্দুল মুহতার, খন্ড-৯, পৃ-৬৮৪)



(১০) হাঁচির উত্তর একবার দেওয়া ওয়াজিব দ্বিতীয়বার আসল এবং পুনরায় “আলহামদুলিল্লাহ” বলল তবে পুনরায় উত্তর দেওয়া ওয়াজিব নয় বরং মুস্তাহাব। 


(আলমগীরী, খন্ড-৫, পৃ-৩২৬)



(১১) উত্তর প্রদান তখন ওয়াজিব হবে যখন হাঁচিদাতা “আলহামদুলিল্লাহ” বলা। “আলহামদুলিল্লাহ” না বললে উত্তর প্রদান করতে হবে না। 


(বাহারে শরীয়ত, খন্ড- ১৬, পৃ-১২০)



(১২) খুতবার সময় কারো হাঁচি আসলে শ্রবণকারী উত্তর দিবেন না। 


(ফাতাওয়ায়ে কাজীখান, খন্ড-২, পৃ-৩৭৭)



(১৩) কয়েকজন ইসলামী ভাই উপস্থিত থাকলে তন্মধ্যে কিছু ইসলামী ভাই উত্তর দিলে সবার পক্ষ থেকে আদায় হয়ে যাবে। তবে উত্তম হচ্ছে সবার উত্তর দেয়া। 


(রদ্দুল মুহতার, খন্ড-৯, পৃ-৬৮৪)



(১৪) দেয়ালের পিছনে কারো হাঁচি আসলে আর সে যদি “আলহামদুলিল্লাহ” বলে তবে শ্রবণকারী এর উত্তর প্রদান করবে। 


(প্রাগুক্ত)



(১৫) নামাযে হাঁচি আসলে চুপ থাকবে আর “আলহামদুলিল্লাহ” বলে ফেললেও নামাযে অসুবিধা হবে না আর যদি ঐ সময় “আলহামদুলিল্লাহ” না বলে তবে নামায সমাপ্ত করে বলবে। 


(আলমগীরী, খন্ড-১ম, পৃ-৯৮)



(১৬) আপনি নামায পড়ছেন এমতাবস্থায় কারো হাঁচি আসলো, আর আপনি জবাব দেওয়ার নিয়্যতে “আলহামদুলিল্লাহ” বলে ফেললেন তবে আপনার নামায ভঙ্গ হয়ে যাবে। 


(আলমগীরী, খন্ড-১ম, পৃ-৯৮)



(১৭) কোন কাফিরের হাঁচি আসলো আর সে “আলহামদুলিল্লাহ” বলল তবে এর উত্তরে“ইয়াহদিকাল্লাহ্ (আল্লাহ তোমাকে হিদায়াত দান করুক) বলা যাবে। 


(রদ্দুল মুহতার, খন্ড-৯, পৃ-৬৮৪)




 
Top