ত্রয়োদশ অধ্যায়  


মুসাফাহার সুন্নাত


(১) দুজন মুসলমানের সাক্ষাতের সময় সালামের পর উভয় হাতে মুসাফাহা করা অর্থাৎ উভয় হাত মিলানো সুন্নাত।



(২) বিদায়ের সময় সালাম করুন এবং হাতও মিলাতে পারবেন।



(৩) নবী করীম ﷺ ইরশাদ করেন, যখন দুজন মুসলমান সাক্ষাত করে মুসাফাহা করে এবং একে অপরের সাথে কুশল বিনিময় করে তবে আল্লাহ তাআলা তাদের মাঝে ১০০টি রহমত অবতীর্ণ করেন তার মধ্যে ৯০টি রহমত একটু বেশী উৎফুল্ল ও ভালভাবে আপন ভাইয়ের কুশল জিজ্ঞাসাকারীর জন্য অবতীর্ণ হয়। 


(আল মুজামুল আওসাত, লিত তাবরানী, খন্ড-৫, পৃ-৩৮০, হাদীস নং-৭৬৭৬)



(৪) যখন দুইজন বন্ধ পরস্পরের সাথে মিলিত হয়ে মুসাফাহা করে এবং প্রিয় নবী ﷺ এর উপর দুরূদ শরীফ পাঠ করে তবে তাদের পৃথক হওয়ার পূর্বেই তাদের আগে ও পরের গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হয়। 


(শুআবুল ঈমান লিল বায়হাকী, হাদীস নং- ৮৯৪৪, খন্ড-৬, পৃ-৪৮১, দারুলকুতুবিল ইলমিয়্যাহ, বৈরুত)



(৫) হাত মিলানোর সময় দুরূদ শরীফ পাঠ করে সম্ভব হলে এ দুআটিও পাঠ করুন (ইয়াগফিরুল্লাহু লা’না ওয়ালাকুম) (অর্থাৎ আল্লাহ আমাদের ও আপনাদের ক্ষমা করুন।)



(৬) দুইজন মুসলমান মুসাফাহার সময় যে দুআ কওে ইনশা’আল্লাহ্ তা কবুল হবে। উভয় হাত পৃথক হয়ে যাওয়ার পূর্বে ইনশা’আল্লাহ্  মাগফিরাত হয়ে যাবে। 


(মুসনাদে ইমাম আহমদ বিন হাম্বল, খন্ড-৪, পৃ-২৮৬, হাদীস নং- ১২৪৫৪, দারুলফিকর, বৈরুত)



(৭) পরস্পর হাত মিলানোর ফলে শত্রুতা দূর হয়ে যায়।



(৮) প্রিয় নবী ﷺ এর বানী হচ্ছে, যে মুসলমান আপন ভাইয়ের সাথে মুসাফাহা করে এবং কারো মনে কারো সাথে শত্রুতা না থাকে তাহলে হাত পৃথক হওয়ার পূর্বেই আল্লাহ তাআলা তাদের আগে ও পরের গুনাহ ক্ষমা করে দেবেন এবং যে কেউ আপন ভাইয়ের প্রতি ভালবাসার দৃষ্টিতে দেখবে আর তার অন্তরে যদি শত্রুতার ভাব না থাকে তবে দৃষ্টি ফিরানোর আগেই উভয়ের আগের ও পরের গুনাহ ক্ষমা করে দেয়া হবে।


 (কানযুল উম্মাল, খন্ড-৯ম, পৃ-৫৭)



(৯) যতবারই সাক্ষাত হয় ততবারই হাত মিলাতে পারবেন।


(১০) উভয়ের পক্ষ থেকে এক হাত মিলানো সুন্নাত নয়, মুসাফাহা উভয় হাতে করা সুন্নাত।



(১১) অনেকেই শুধুমাত্র আঙ্গুল সমূহ স্পর্শ করায় এটা সুন্নাত নয়।



(১২) হাত মিলানোর পর স্বয়ং নিজের হাত চুমু খাওয়া মাকরূহ। হাত মিলানোর পর নিজের হাতের তালু চুম্বন কারী ইসলামী ভাই নিজের এ অভ্যাস ছেড়ে দিন। 


(বাহারে শরীয়ত, খন্ড-১৬, পৃষ্ঠা ১১৫ হতে সংক্ষেপিত)



(১৩) যদি আমরদ তথা সুদর্শন বালকের সাথে হাত মিলানোতে কামভাব সৃষ্টি হয় তবে তার সাথে হাত মিলানো বৈধ নয় বরং যদি দেখার ক্ষেত্রে কামভাব আসে তাহলে দেখাও গুনাহ। 


(দুররে মুখতার, খন্ড-২, পৃ-৯৮, দারুল মারিফাত, বৈরুত)



(১৪) মুসাফাহা করার সুন্নাত হচ্ছে, হাত মিলানোর সময় রুমাল ইত্যাদি যেন আড়াল না হয় উভয়ের হাতের তালু খালি থাকে এবং তালুর সাথে তালু স্পর্শ করা চাই। 


(বাহারে শরীয়ত, অংশ-১৬তম, পৃ-৯৮)।

 
Top