❏ দরসে হাদীসঃ [হাদীস নং- (১৬৭৭)]
○ অধ্যায়ঃ [ কবরগুলোর যিয়ারত ]
[ وعن عآئشة قالت كنت ادخل بيتى الذى فيه رسول الله ﷺ وانى واضع ثوبى واقول انما هو زوجى وابى فلما دفن عمر معهم فوالله ما دخلته الا وانا مشدودة على ثيابى حياء من عمر .] (رواه احمد)
হযরত আয়েশা [رضي الله ﺗﻌﺎﻟﯽٰ عنها] থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আপন ঘরে, যাতে রসূলুল্লাহ্ [ﷺ]'কে দাফন দাফন করা হয়েছে, এভাবে চাদর পরে চলে যেতাম, (টীকাঃ ১) আর বলতাম (এখানে) একজন আমার স্বামী, আরেকজন আমার পিতা। অতঃপর যখন হযরত ওমরকে দাফন করা হয়েছে, তখন মহান রবেরই শপথ! হযরত ওমরের প্রতি লজ্জাবোধের কারণে কাপড় জড়ানো ব্যতীত ওই ঘরে যাই নি।" (টীকাঃ ২)
[ আহমদ ]
□ উক্ত হাদীস শরীফের ব্যাখায় বলা হয়েছেঃ #MustShAre
    ___________________________________
◇ টীকাঃ ১.
অর্থাৎ যতক্ষণ পর্যন্ত আমার হুজুরার মধ্যে রসূলুল্লাহ্ [ﷺ] ও হযরত আবূ বকর সিদ্দীক্ব দাফনকৃত থাকেন, ততক্ষণ পর্যন্ত আমি মাথা খোলা কিংবা ঢাকা- উভয় অবস্থায়ই হুজুরা শরীফে চলে যেতাম। কারণ, না স্বামী থেকে পর্দা করতে হয়, না পিতা থেকে।
◇ টীকাঃ ২.
অর্থাৎ যখন থেকে হযরত ওমরকে আমার হুজুরায় দাফন করা হয়েছে, তখন থেকে আমি চাদর মুড়ি দেওয়া এবং পর্দার প্রতি পূর্ণ গুরুত্ব দেওয়া ব্যতীত হুজুরা শরীফে যাই নি। হযরত ওমরের প্রতি লজ্জাবোধ করতে থাকি।
এ হাদীস শরীফ থেকে বহু মাস্'আলা অনুমতি হতে পারে-
এক. মৃতকে মৃত্যুর পরেও সম্মান করা চাই। ফক্বীহগণ বলেন, মৃতকে তেমনি সম্মান করবে, যেমন তার জীবদ্দশায় করেছিলে।
দুই. বুযুর্গদের কবরগুলোর প্রতিও সম্মান প্রদর্শন এবং তাঁদের প্রতিও লজ্জাবোধ থাকা চাই।
তিন. মৃত ব্যক্তি কবরের ভিতর থেকে বাইরের লোকদেরকে দেখে এবং তাদেরকে চিনতে পারে, জানে। দেখুন, হযরত ওমরের প্রতি হযরত আয়েশা সিদ্দীক্বা তাঁর ওফাতের পর লজ্জাবোধ করছেন। যদি তিনি বাইরের কোন কিছু না দেখতেন, তাহলে এ লজ্জাবোধ করার অর্থই বা কি?
চার. কবরের মাটি ও তক্তা ইত্যাদি মৃতের চোখের সামনে হিজাব বা অন্তরাল হতে পারে না; কিন্তু যিয়ারতকারীর গায়ের পোশাক তাদের জন্য সত্যি আড়াল। সুতরাং মৃতের সামনে তার যিয়ারতকারীকে উলঙ্গ দেখা যায় না। অন্যথায় হযরত আয়েশা সিদ্দীক্বার চাদর মুড়ি দিয়ে সেখানে যাবার অর্থই বা কি ছিলো? এটা মহান আল্লাহ্ পাকের বিধান। সুতরাং হাদীস শরীফের বিপক্ষে এ আপত্তি উত্থাপন করার অবকাশ নেই যে, 'যখন হযরত ওমর কবরের ভিতর থেকে যিয়ারতকারীকে দেখছেন, তখন যিয়ারতকারীর কাপড়ের ভিতরের দেহাংশ দেখছেন না তো?
পাচ. বুযুর্গের কবরগুলোর প্রতিবেশে কারো অবস্থান করা দুরস্ত। হযরত আয়েশা সিদ্দীক্বা [رضي الله ﺗﻌﺎﻟﯽٰ عنها] রওযা-ই আত্বহারের প্রতিবেশে অবস্থান করতেন।
ছয়. কবরের প্রতিবেশে নারীও থাকতে পারে; কিন্তু পর্দা ও লজ্জাবোধ সহকারে।
সাত. প্রতিবেশে অবস্থানকারীনীর জন্য কবরের যিয়ারত করা বৈধ, কেননা, সে তো সেখানেই থাকে।
● হাদীস শরীফ এর ব্যাখ্যা সম্বলিত টীকা পেতে সার্চ করুনঃ
📚f/Ishq-E-Mustafa ﷺ
[সূত্রঃ মিরআতুল মানাজীহ শরহে মিশকাতুল মাসাবীহ, কৃত- মুফতী আহমদ ইয়ার খান নঈমী আশরাফী বদায়ূনী, বঙ্গানুবাদঃ মাওলানা আব্দুল মান্নান, ২য় খন্ড, পৃ. ৬৫২, হাদীস নং-১৬৭৭ এর টীকাঃ (২৬,২৭) দ্রব্যষ্ট, প্রকাশনায়ঃ ইমাম আহমদ রেযা রিসার্চ একাডেমী, চট্টগ্রাম। সবুজ ভবন, খাজা রোড, কুলগাঁও, ডাকঘর-জালালাবাদ-৪২১৪, বায়েজীদ, চট্টগ্রাম। ফোনঃ ০৩১-৬৮৪২২৪, মোবাইলঃ ০১১৯৯-২২৪৪০৩, ০১৮৬৮-০৩১৬২১]
 
Top