হজ্বে আকবর (আকবর হজ্ব)
========
প্রশ্ন: জুমার দিন যে হজ্ব  হয়, তাকে হজ্বে  আকবর বলা কেমন?

উত্তর:  কোন    সমস্যা  নেই।   যেমনিভাবে  ১০ম  পারায় সূরা তাওবা এর ৩নং আয়াতে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন:

কানযুল    ঈমান     থেকে    অনুবাদ:     এবং     ঘোষণাকারী ঘোষণা দিচ্ছে আল্লাহ ও তাঁর রসুলের পক্ষ থেকে সমস্ত লোকের   মধ্যে  মহান    হজ্বের  দিনে।وَ    اَذَانٌ  مِّنَ  اللّٰہِ   وَ رَسُوۡلِہٖۤ    اِلَی  النَّاسِ یَوۡمَ الۡحَجِّ الۡاَکۡبَرِ  (পারা: ১০, সূরা:  তাওবা, আয়াত: ৩)

সদরুল আফাযিল, হযরত আল্লামা মাওলানা সায়্যিদুনা  মুহাম্মদ নঈমুদ্দীন মুরাদাবাদী رَحۡمَۃُ اللہِ تَعَالٰی عَلَیْہِ এই আয়াতে   কারীমার   ব্যাপারে   উলেস্নখ   করেন:   হজ্বকে  হজ্বে    আকবর    বলেছেন    এই   কারণে   যে,   ঐ   সময়ে ওমরাকে হজ্বে আসগর  (ছোট হজ্ব) বলা হত এবং এক বর্ণনা  এই  যে,   ঐ  হজ্বকে  হজ্বে  আকবর    এই  জন্যেই বলা    হয়েছে    যে    ঐ    রছরে    রাসুলে    করীম,    রউফুর  রহীমصَلَّی  اللہُ  تَعَالٰی  عَلَیْہِ  وَاٰلِہٖ  وَسَلَّم    হজ্ব  করেছিলেন  এবং    এই     হজ্ব     জুমার    দিন        হয়েছিল।     এই    জন্য মুসলমানরা  সেই হজ্বকে, যেটা জুমার দিন হয়। বিদায় হজ্বের   মুযাক্কির   (অর্থাৎ   স্মরণ   করিয়ে   দেয়ার)   জন্য  হজ্বে   আকবর  বলে।     নবী করীম صَلَّی  اللہُ تَعَالٰی   عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم ইরশাদ  করেছেন:  “দিনসমূহের মধ্যে  উত্তম হচ্ছে  ঐ   আরাফার দিন যা  জুমার   দিনের   সাথে মিলে যায়     এবং  সেই  দিনের  হজ্ব  সেই  সত্তর   হজ্বের  চেয়ে  উত্তম যা জুমার দিন হয়না।” (ফাতহুল বারী, ৯ম খন্ড, ২৩১ পৃষ্ঠা, হাদীসের ব্যাখ্যা: ৪৬০৬)

আরব শরীফে কর্মরতদের জন্য
========
প্রশ্ন:      মক্কায়ে       মুকাররমায়       কর্মরত      ব্যক্তি      কিংবা সেখানের স্থায়ী বাসিন্দা যদি তায়িফ শরীফ গমন করে। তখন  প্রত্যাবর্তনকালে   তাকে  হজ্ব  ও   ওমরার  ইহরাম বাঁধা জরুরী কিনা?

উত্তর:  এই   নিয়মটি    স্মরণ   রাখুন  যে,    মক্কাবাসী  যদি কোন   কাজের   উদ্দেশ্যে   “হেরমের   সীমানার”   বাইরে  যায়।  তবে  মীকাতের  ভিতরেই  (যেমন  জিদ্দা  শরীফ)  থাকে,   তখন  সে    ফিরে  আসাতে  ইহরামের  প্রয়োজন  নেই,   আর  যদি  “মীকাতের”  বাইরে  (যেমন   মদীনায়ে পাক,      তায়িফ,    রিয়াদ    ইত্যাদি)   যায়   তখন   ইহরাম ছাড়া প্রত্যাবর্তন হওয়া জায়িয নেই।

ইহরাম না বাঁধে তো হিলা
========
প্রশ্ন: যদি কোন   ব্যক্তি জিদ্দা  শরীফে  কাজ করে  তখন নিজের ঘর যেমন বাংলাদেশ থেকে কাজের জন্য জিদ্দা শরীফ  আসল।  তখন  তার  কি  ইহরাম  করা  আবশ্যক  হবে?

উত্তর: যদি জিদ্দা শরীফে যাওয়ার  নিয়্যত ছিল।  তখন  তার  ইহরাম  করার  প্রয়োজন  নেই।  বরং  এখন  জিদ্দা  শরীফ  থেকে  মক্কায়ে  মুকাররমায়  যেতে  হলে  ইহরাম  ব্যতীত যেতে   পারবেন। তাই যে ব্যক্তি  হারাম শরীফে ইহরাম ব্যতীত যেতে চায়, সে হিলা করতে পারে তবে শর্ত   হল  বাস্তবিকই  তার   ইচ্ছা   ছিল  প্রথমেই  সেখানে যাওয়া। যেমন জিদ্দা শরীফ   যাওয়া ছিল। আর মক্কায়ে মুকাররমা হজ্ব ও  ওমরার ইচ্ছায় সে যাচ্ছে না।   যেমন ব্যবসার জন্যে জিদ্দা শরীফ যায়, আর নিজ কাজ থেকে অবসর  হয়ে  মক্কায়ে  মুকাররমা   যাওয়ার  ইচ্ছা  করল,  আর   যদি  প্রথম   থেকেই   মক্কায়ে   মুকাররমা   যাওয়ার  ইচ্ছা করে,   তখন কিনত্মু  ইহরাম ছাড়া যেতে   পারবে না।  আর     সে  ব্যক্তি  অন্যের  পক্ষে  বদলী  হজ্ব  করতে যায় তার জন্যে এই হিলা করা জায়িয নেই।

হজ্ব   কিংবা   ওমরার   জন্য  আর্থিক  সহযোগীতা  চাওয়া কি?
========
প্রশ্ন:  কতিপয়  মিসকিন  আশিক  তার  ইশকের  যন্ত্রণায়  অস্থির   হয়ে   হজ্ব   কিংবা   ওমরা   করার   জন্য   মানুষের  নিকট আর্থিক সাহায্য চায়। ইহা কি জায়িয?

উত্তর:        ইহা     হারাম।     সদরুল      আফাযিল     মাওলানা নঈমুদ্দীন    মুরাদাবাদী    رَحۡمَۃُ    اللہِ     تَعَالٰی   عَلَیْہِ    বর্ণনা করেন যে,  ইয়ামেনের    কতিপয় লোক সম্পদহীন  হয়ে হজ্বের        সফরে        যায়,        আর       তারা         নিজেদেরকে মুতাওয়াক্কিল    (নির্ভরশীল)    বলে    দাবী    করে।     তারা  মক্কায়ে   মুকাররমা    গিয়ে   সুওয়াল    (ভিক্ষাবৃত্তি)     করা  আরম্ভ   করে  দেয়,    আবার   কখনো   তারা  পর    সম্পদ আন্তসাৎ ও খেয়ানতে লিপ্ত হয়ে যেত। তাদের ব্যাপারে নিন্মের আয়াতে মুকাদ্দাসা পূর্বেই বর্ণিত হয়েছিল, আর নির্দেশ হল তোমরা হজ্বে সম্পদসহ যাও।

আর   অন্যের  উপর বোঝা  চেপে  দিওনা। ভিক্ষা থেকে বিরত    থাক।    নিশ্চয়    উত্তম    সম্পদ    হল    খোদাভীতি  অবলম্বন করা, আর আয়াতে মুকাদ্দাসা এই

কানযুল  ঈমান    থেকে  অনুবাদ:    তোমরা   সম্পদ  সঙ্গে নাও। আর সকলের চেয়ে উত্তম সম্পদ হল খোদাভীতি অবলম্বন করা। وَ تَـزَوَّدُوۡا   فَاِنَّ خَيۡرَالـزَّادِ التَّقۡوٰي   (পারা: ২, সূরা: বাকারা, আয়াত: ১৯৭)

সুলতানে মদীনা صَلَّی اللہُ  تَعَالٰی  عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم ইরশাদ করেছেন:  “যে সকল ব্যক্তি মানুষের নিকট  ভিক্ষা করে অথচ তার কোন অভাব নেই। অধিক সন্তানও নেই যে, সে  মূলত  সক্ষম ব্যক্তি। কিয়ামতের দিন  এভাবেই সে  হাজির   হবে, যে তার মুখে মাংস থাকবে না।”(শুআবুল ঈমান, ৩য় খন্ড, ২৭৪ পৃষ্ঠা, হাদীস: ৩৫২৬)

মদীনার         প্রেমিকরা!        ধৈর্য্যধারণ        করুন!        ভিক্ষার  নিষেধাজ্ঞায়    কঠোর    গুরুত্ব    রয়েছে,    আর    ফুকাহায়ে  কিরাম    رَحِمَهُمُ     اللهُ    السَّلام    অতটুকু    লিখেছেন    যে:  গোসলের পরে ইহরাম বাঁধার পূর্বে নিজ শরীরে সুগন্ধি লাগিয়ে   নিন।  তবে  শর্ত   হল  নিজের   কাছে   বিদ্যমান থাকতে হবে,  আর যদি নিজের    কাছে   না  থাকে তখন অন্যের   নিকট     তালাশ  করিওনা।  কেননা  ইহাও  এক প্রকার ভিক্ষা। (রাদ্দুল মুহতার, ৩য় খন্ড, ৫৫৯ পৃষ্ঠা)

জব   বুলাইয়া   আক্বা   নে,            খুদ    হি   ইনতিজাম    হো  গেয়ি।

صَلُّوْا   عَلَی الۡحَبِیۡب!                            صَلَّی  اللہُ تَعَالٰی عَلٰی مُحَمَّد

 
Top