বর্তমানে  মুসলিম  সমাজ  শরীয়াত    হতে  বহুদূরে  সরে গিয়েছে।      সাধারণ   মানুষ   শরীয়াতের   কোনো   বিষয়   যাচাই     করতে     আদৌ     আগ্রহী     নয়।     বিশেষ     করে  পশ্চিমবাংলার সুন্নী  ও ওহাবীদের   মধ্যে  ব্যাপক  ভাবে কোনো  জিনিষে   পার্থক্য  নেই   বললেও  চলে।  এসমস্ত কারণে   অত্যন্ত সুকৌশলে  সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।

মাসয়ালা  (১)  -  কেবল  "আল্লাহ্"   বলে  জবেহ    করলে অথবা কেবল "আর-রহমান" অথবা "আর-রাহীম" বলে জবেহ         করলে          পশু         হালাল          হবে।।         অনুরূপ "আল্লাহু-আকবর"       অথবা       "আল্লাহু-আজম"       অথবা  "আল্লাহুররহমান"       অথবা        "আল্লাহুররহীম"         অথবা "সুবহানআল্লাহ" অথবা "লা-ইলাহা-ইল্লালাহ" পাঠ করে জবেহ করলে পশু হালাল হবে। (আলামগীরি)

মাসয়ালা  (২)  -   যদি  জবেহ    কারী  ইচ্ছাকৃত  আল্লাহর নাম  উচ্চারণ    না   করে,  সঙ্গীরা    আল্লাহ্র   নাম   উচ্চারণ করলেও পশু হারাম  হবে। যদি  জবেহ  করার উদ্দেশ্যে আল্লাহর   নাম   উচ্চারণ   না  করে  বরং      অন্য  উদ্দেশ্যে আল্লাহর নাম উচ্চারণ করে জবেহ করে থাকে,  তাহলে পশু          হালাল        হবে         না।         যথাঃ--         হাঁছির        পর আলহামদুলিল্লাহ্ পাঠ করতঃ জবেহ করলে পশু হালাল হবেনা।        অবশ্য        যদি        জবেহ        করার        উদ্দেশ্যে  আলহামদুলিল্লাহ্  পাঠ  করে থাকে   তাহলে  পশু হালাল  হবে (বাহারে-শরীয়াত)

মাসয়ালা (৩) - জবেহ করার পর রক্ত বের হয়েছে কিন্ত কোনো প্রকার নড়েনি   তাহলে  উক্ত রক্ত যদি    জীবিত পশুর             ন্যায়             হয়             তাহলে             হালাল             হবে  (বাহারে-শরিয়াত)

মাসয়ালা   (৪)   -   অসুস্থ    পশু   জবেহ   করার    পর   যদি কেবল তার মুখ খুলে যায় তাহলে হারাম হবে। যদি মুখ বন্ধ   করে  নেয়  তাহলে  হালাল  হবে।  যদি  চোখ    খুলে দেয়  তাহলে  হারাম  হবে।  যদি     চোখ   বন্ধ  করে   নেয় তাহলে   হালাল   হবে।   যদি  পা  লম্বা করে দেয় তাহলে হারাম হবে। যদি পা জড়ো করে নেয়, তাহলে  হালাল হবে।  পশম  খাড়া  না  হলে  হারাম  এবং    খাড়া   হলে হালাল   হবে।   মোট   কথা   যখন   পশুর   জীবিত   হওয়া  সন্দেহ হবে তখন  কোনো প্রকার নিদর্শন দেখে হালাল ও হারাম পার্থক্য করতে হবে (আলমগীরী)।

মাসয়ালা (৫)  -  জবেহ  করার  জন্য অস্ত্র   ব্যবহার করা জরুরী  নয়।  বাঁশের  চেটি   অথবা   ঐপ্রকার  অন্য  কোন ধারালো     জিনিষ   দ্বারা   জবেহ   করলে     জায়েজ   হবে। ধারালো পাথর দ্বারা ও জবেহ করা জায়েজ। ধারবিহীন অস্ত্রদ্বারা জবেহ করা মাকরূহ (দুর্রে-মুখতার)

মাসয়ালা   (৬)   -   জঙ্গলি   জানোয়ার   যদি   পালিত   হয়  তাহলে যথা নিয়মে তাকে জবেহ করতে হবে আর যদি পালিত পশু জঙ্গলি জানোয়ারের মতন আয়ত্বের বাহিরে চলে    যায়    তাহলে    যেকোনো    প্রকারে    তার     দেহের   যেকোনো  অংশ   ক্ষত  করে  দিলে     জবেহ  হয়ে  যাবে।  অনুরূপ যদি কোনো পশু  কুঁয়াতে পড়ে যায় এবং যথা নিয়মে জবেহ করা সম্ভব না হয় তাহলে যেভাবে সম্ভব হবে সেইভাবে জবেহ  করলে জায়েজ হবে   (হিদাইয়া) 

মাসয়ালা    (৭)    -    মুসলিম     মহিলার     জবেহ    হালাল। অনুরূপ বোবা যদি  মুসলমান    হয় তাহলে  তার  জবেহ  হালাল হবে (আলমগিরী)

মাসয়ালা  (৮)    -  খাৎনা  বিহীন  ব্যক্তির  জবেহ  হালাল (আলমগিরী)
মাসয়ালা   (৯)    -   জিন   মানুষের   আকৃতি     ধারণ   করে জবেহ  করলে জায়েজ  হবে।  অন্যথায় জায়েজ   হবেনা  (রদ্দুল-মুহতার)

মাসয়ালা (১০) - অগ্নী পূজক অগ্নীকুন্ডের জন্য অনুরূপ কাফির  মুশরিক    তাদের  উপাস্যের  জন্য  যদি  কোনো মুসলমানের    দ্বারায়  জবেহ   করায় এবং মুসলমান যদি আল্লাহর নামে   জবেহ   করে থাকে  তাহলে  পশু  হালাল হবে।  কিন্ত  এইক্ষেত্রে   মুসলমানের  জবেহ  করে   দেয়া মাকরূহ (আলমগীরি)।

মাসয়ালা  (১১)  -  মুসলমানের  জবেহ  করার  পর  যদি  কাফের  মুশরেক  উক্ত   পশুর  উপর   অস্ত্রচালায়  তাহলে পশু হারাম হবেনা। কিন্ত কাফের মুশরেকের জবেহ পর যদি   মুসলমান    অস্ত্রচালায়    তাহলে     পশু    হারাম   হবে (আলমগিরী)
মাসয়ালা   (১২)  -   ইচ্ছাকৃত    বিসমিল্লাহ্  পাঠ  না  করে জবেহ   করলে  পশু হারাম হবে।  ভূলবশতঃ বিসমিল্লাহ্ পাঠকরা না হলে হালাল হবে (হিদাইয়া)।

 
Top