৫৬ - بَابُ مَا جَاءَ فِيْ سَجْدَةِ التِّلَاوَةِ

১৬১ - أَبُوْ حَنِيْفَةَ: عَنْ سِمَاكٍ، عَنْ عِيَاضٍ الْأَشْعَرِيِّ، عَنْ أَبِيْ مُوْسَى الْأَشْعَرِيِّ، أَنَّ النَّبِيَّ  سَجَدَ فِيْ ص.


বাব নং ৭১. ৫৬. তিলাওয়াতে সিজদার বর্ণনা


১৬১. অনুবাদ: ইমাম আবু হানিফা সিমাক থেকে, তিনি ইয়ায আশআরী থেকে, তিনি আবু মুসা আশআরী (رضي الله عنه) থেকে বর্ণনা করেন, নবী করিম (ﷺ)  সূরা সা‘দ এ সিজদা করেছেন। (নাসাঈ, ২/১৫৯/৯৫৭)

ব্যাখ্যা: হযরত দাউদ (عليه السلام)’র অনুসরণ করে রাসূল (ﷺ)  এই সিজদা আদায় করেছেন। ইমাম আবু হানিফা ও ইমাম মালিক (رحمة الله) এ আয়াতকে সিজদার আয়াত হিসাবে গ্রহণ করেন। কিন্তু ইমাম শাফেঈ (رحمة الله) তা সিজদার আয়াত হিসাবে গ্রহণ করেননি। তিনি বুখারী শরীফে হযরত ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه) বর্ণিত হাদিস দ্বারা দলীল পেশ করেন। এতে বলা হয়েছে- সূরা সা‘দ এর সিজদা আবশ্যকীয় নয়। দ্বিতীয়ত আবু দাউদে হযরত আবু সাঈদ খুদুরী (رضي الله عنه) বর্ণিত হাদিসে আছে- রাসূল (ﷺ)  খুৎবা পড়ার সময় সূরা সা‘দ তিলাওয়াত করেন এবং সিজদা আদায় করেন। সাহাবায়ে কিরামও সিজদা করেন। পুনরায় তিনি একই আয়াত তিলাওয়াত করলে, সাহাবায়ে কিরাম সিজদার জন্য প্রস্তুত হলে, তিনি বলেন, এটা তো ছিল নবীর তাওবা। তবে উপরোক্ত দু’হাদিস দ্বারা সুস্পষ্টভাবে মাযহাব প্রমাণিত হয়না। কারণ আবশ্যকীয় না হওয়ার অর্থ ফরযের মধ্যে গণ্য না হওয়া বরং ওয়াজিব হিসেবে গণ্য হবে যা শুকরিয়া হিসেবে হযরত দাউদ (عليه السلام)’র ইকতিদা বা অনুসরণে ওয়াজিব হয়েছে। তৃতীয়ত: হাদিসে যে সিজদ্ার কথা বলা হয়েছে, এটা হলো নবী করিম (ﷺ) ’র সিজদা, এটাও ওয়াজিব হওয়াকে বাতিল করেনা। কেননা সমস্ত ফরয-ওয়াজিব আল্লাহর-নিয়ামতের কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন স্বরূপ ফরয-ওয়াজিব করা হয়েছে। সুতরাং এটা এগুলোর মধ্যে একটি। ইমাম আবু হানিফা (رحمة الله) ইমাম আহমদ (رحمة الله)’র হাদিস দ্বারা দলীল পেশ করেছেন। তিনি বকর ইবনে আব্দুল্লাহ আল মুযনী (رحمة الله)’র সূত্রে আবু সাঈদ খুদরী (رضي الله عنه) থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেছেন:- আমি স্বপ্নে সূরা সা‘দ লিখেছিলাম যখন সিজদার আয়াতে পৌঁছলাম, তখন দেখতে পেলাম যে, দোয়াত-কলম সহ যা কিছু আশে-পাশে ছিল, সমস্ত কিছুই মাথানত করে সিজদা দিচ্ছে। এই ঘটনা আমি রাসূল (ﷺ) ’র নিকট বর্ণনা করি। এরপর থেকে তিনি সিজদা করতে থাকেন। এর দ্বারা স্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয় যে, উক্ত ঘটনার পর সিজদার এই আমল অব্যাহত থাকে।

সিজদায়ে তিলাওয়াত আইম্মায়ে সালাসা তথা ইমাম মালিক, ইমাম শাফেঈ ও ইমাম আহমদ (رحمة الله)’র মতে সুন্নত। পক্ষান্তরে ইমাম আবু হানিফা (رحمة الله)’র মতে ওয়াজিব। আইম্মায়ে সালাসার দলীল হল- তিরমিযী শরীফের হাদিস- হযরত যায়েদ ইবনে সাবিত (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত,

- قرات على رسول الله صلى الله عليه وسلم النجم فلم يسجد فيها

“আমি রাসূল (ﷺ) ’র সামনে সূরা নাজম তিলাওয়াত করেছি কিন্তু তিনি সিজদা দেননি।”১৬০  আবু হানিফা (رحمة الله)’র পক্ষ হতে এর উত্তর হল-তিনি তৎক্ষণিক সিজদা দেননি। তাৎক্ষণিক সিজদা করা আহনাফের নিকটও ওয়াজিব নয়। হানাফীদের দলীল সকল আয়াতে সিজদা যেগুলোর মধ্যে সীগাহে আমর বিদ্যমান, আর আমর পালন করা ওয়াজিব। সুতরাং তিলাওয়াতে সিজদা ওয়াজিব।

অতঃপর হানাফী ও শাফেঈগণের তিলাওয়াতে সিজদা চৌদ্দটি হওয়ার ক্ষেত্রে একমত থাকলেও নির্ধারণের মধ্যে মতবিরোধ রয়েছে। শাফেঈদের মতে সূরা সা’দ -এ সিজদা নেই। এর পরিবর্তে তারা সূরা হাজ্জ-এ দু’টি সিজদা গণ্য করেন। পক্ষান্তরে হানাফীগণ সূরা সা’দ এ একটি এবং সূরা হাজ্জ-এ একটি নির্ধারণ করেন।

 
Top